গাছের সঙ্গে বেঁধে চুল কেটে দম্পতিকে নির্যাতন
পাবনা সদর উপজেলায় জমি নিয়ে বিরোধের জের ধরে স্থানীয় জামায়াতে ইসলামীর দুর্বৃত্তরা এক দম্পতিকে গাছের সঙ্গে বেঁধে মাথার চুল কেটে দিয়ে সিগারেটের আগুনে পুড়িয়ে বেধড়ক মারপিট করে গুরুতর আহত করেছে। এ সময় তারা বাড়িঘরেও ভাঙচুর করেছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
শনিবার (২৮ সেপ্টেম্বর) দিবাগত রাত তিনটার দিকে উপজেলার দোগাছি ইউনিয়নের মাদারবাড়িয়া গ্রামে এই ঘটনা ঘটে।
আহত দম্পতি সখিনা খাতুন (৩৫) ও তার স্বামী জিলাল প্রামাণিককে (৪৫) ঘটনার রাতেই পাবনা জেনারেল হাসপাতালের সার্জিক্যাল বিভাগে ভর্তি করা হয়েছে।
হাসপাতালের মেঝেতে চিকিৎসাধীন সখিনা খাতুন জানান, স্থানীয় জামায়াতে ইসলামীর ক্যাডার শাহজাহান ও তার সহযোগীরা তার বাড়ির ২৩ শতাংশ জমির দলিল জাল করে দখলের পায়তারা করায় তাদের বিরুদ্ধে আদালতে পৃথক তিনটি মামলা দায়ের করেন। দীর্ঘ ৮ বছর ধরে মামলা চলে আসছে।
সখিনা খাতুন বলেন, ওই মামলায় শাহজাহান আলী, মারুফ হোসেন, বকুল হোসেন ও জনিকে আসামি করা হয়। মামলা দায়েরের পর থেকেই আসামিরা তাদের বিভিন্ন সময়ে প্রাণনাশের হুমকি, বাড়িঘর ভাঙচুর ও হামলা করে আসছে।
হাসপাতালের বেডে চিকিৎসাধীন জিলাল প্রামাণিক বলেন, আমি কাঁচি কারখানায় কাজ করি। আমার সামান্য জমির কাগজ জাল করে দখলের অপচেষ্টা করছে জামায়াতের শাহজাহান ও তার লোকজন। আদালতে তাদের বিরুদ্ধে মামলা করায় একের পর এক হুমকি ধামকি দিয়ে আসছিল। মামলা তুলে না নিলে প্রাণনাশের হুমকি অব্যাহত রেখেছে।
নির্যাতনের শিকার ওই দম্পতির মেয়ে কাজলী জানান, শনিবার দিবাগত রাত তিনটার দিকে শাহাজাহন, খাইরুল, বিপ্লব, ফরিদ ও তৈজদ্দিনসহ ৬/৭ জনের একদল সশস্ত্র দুর্বৃত্ত মুখে কালো কাপড় বেঁধে বাড়িতে এসে মা ও বাবাকে উঠিয়ে নারিকেলের গাছের সাথে বেঁধে মারপিট শুরু করে। এ সময় দুর্বৃত্তরা আমার মার মাথার চুল কাঁচি দিয়ে কেটে দেয়। সিগারেটের আগুন দিয়ে শরীরের বিভিন্ন স্থানে পুড়িয়ে দেয়। যাবার সময় বাড়ি ঘরে ব্যাপক ভাঙচুর ও লুটপাট করে মামলা তুলে নেওয়ার হুমকি দিয়ে চলে যায়।
দোগাছি ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মো. আলী হাসানের মোবাইলে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তিনি তা রিসিভ করেননি।
এ ব্যাপারে পাবনা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নাছির আহম্মেদ বলেন, লোকমুখে ঘটনাটি শুনেছি। ঘটনার সত্যতা নিশ্চিতে পুলিশের এক অফিসারকে ঘটনাস্থল ও হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। অভিযোগ পেলে পরবর্তী আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।