আধুনিকতার ছোঁয়ায় কদর কমছে পোস্ট অফিসের

  • Mansura chamily
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

জরাজীর্ণ ডাকঘর ও ভাঙাচোরা ডাকবাক্স, ছবি: বার্তাটোয়েন্টিফোর.কম

জরাজীর্ণ ডাকঘর ও ভাঙাচোরা ডাকবাক্স, ছবি: বার্তাটোয়েন্টিফোর.কম

আধুনিকতার ছোঁয়া আর বেসরকারি মোবাইল ব্যাংকিংয়ের ভিড়ে দিনে দিনে কদর কমছে পোস্ট অফিসের। এছাড়াও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলো ব্যবহারে কালের বিবর্তনে হারিয়ে যাচ্ছে হলুদ খামের চিঠির যুগ। এমনকি চিঠির সঙ্গে হারিয়ে যাচ্ছে এক সময়ের জনপ্রিয় খোলা ডাক, টেলিগ্রাম। আর তাই পথে ঘাটে জরাজীর্ণ অবস্থায় দেখা যায় ভাঙাচোরা ডাকবাক্সগুলোকে।

এদিকে বেসরকারি প্রতিষ্ঠান ডাচ বাংলা, বিকাশ, ইউ ক্যাশ, শিওর ক্যাশসহ অন্যান্য মোবাইল ব্যাংকিংয়ের ভিড়ে হিমশিম খাচ্ছে ডাক বিভাগের মোবাইল ব্যাংকিং কার্যক্রম। লেনদেনে গুটি কয়েক ব্যবহার করছেন পোস্ট অফিস।

বিজ্ঞাপন

কি কারণে পোস্ট অফিসে টাকা রাখার নতুন হিসেব খুলেছেন? এমন প্রশ্নের উত্তরে বরিশালের প্রধান ডাকঘরে আসা মো: জলিল নামে এক গ্রাহক বার্তা টোয়েন্টিফোর.কমকে বলেন, 'দিন যতই সামনে এগোচ্ছে, দেশ ততই ডিজিটাল হচ্ছে। যার ফলে দিন দিন বেসরকারি ব্যাংক ও তাদের মোবাইল ব্যাংকিং পদ্ধতিতে টাকা লেনদেনের প্রতারণা বাড়ছে। এমতাবস্থায় নিরাপদে টাকা লেনদেন করার জন্য পোস্ট অফিসে নতুন হিসেব খুলেছি।

সৌদি প্রবাসী মো: সাইফুল ইসলাম বলেন, ২০০৪ সালের দিকে বাড়িতে মাসের মধ্যে ৬/৭ বার চিঠি লিখে পাঠাতাম। কিন্তু এখন মোবাইলে, ইমো ও মেইলের কারণে চিঠি লেখা বন্ধ করে দিয়েছি।

বিজ্ঞাপন

এদিকে, পোস্ট অফিসের কার্যক্রমের ধীরগতি উল্লেখ করে পুরাতন গ্রাহক নুরুন্নাহার খানম বলেন, পোস্ট অফিসের খুবই ধীরগতিতে কার্যক্রম পরিচালনা হচ্ছে। যার ফলে অন্যান্য বেসরকারি ব্যাংকের তুলনায় প্রতিদিন পোস্ট অফিসে নতুন হিসাবের সংখ্যা কমছে।

বরিশাল প্রধান ডাকঘরের সহকারী পোস্ট মাস্টার জেনারেল মোহাম্মদ নূরুল হক বার্তা টোয়েন্টিফোর.কমকে বলেন, 'পোস্ট অফিসের যৌবনে গ্রাহক সংখ্যা বৃদ্ধি, চিঠি আদান-প্রদান ও টেলিগ্রামসহ অন্যান্য সেবাসমূহের প্রচুর ব্যবহার ছিল। কিন্তু বেসরকারি ব্যাংক, মোবাইল ব্যাংকিং সংখ্যা বৃদ্ধি, ফেসবুক, ইমো, হোয়াটস অ্যাপ, ভাইবার, মেসেঞ্জার, ই-মেইল আর এসএমএস ব্যবহারে পোস্ট অফিসের গ্রাহক সংখ্যা কিছুটা কমেছে। তবে বর্তমানে বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে টাকা লেনদেনসহ অন্যান্য সেবার চেয়ে এখন ডাক বিভাগ নিরাপদে লেনদেনে কমচার্জ, বেশি লাভ দিচ্ছে গ্রাহককে। যার ফলে আবারও পোস্ট অফিসের গ্রাহক সংখ্যা বাড়ছে। এছাড়াও ডাকবিভাগের জনপ্রিয় ইলেক্ট্রনিক মানি অর্ডার আর নগদ মোবাইল ব্যাংকিং চালু হওয়ায় বেশ সাড়া পড়েছে গ্রাহকের মাঝে।'

আধুনিকতার ছোঁয়া ডাক বিভাগে লাগলেও যথাযথ প্রচার আর পরিকল্পনার অভাব এবং জনবল সংকটের কারণে ডিজিটাল ডাক বিভাগের বিভিন্ন সেবা জনগণের কাছে পৌঁছানো সম্ভব হচ্ছে না। ফলে ডাক বিভাগ বেসরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোর সঙ্গে প্রতিযোগিতায় না পারায় প্রতিবছরই লোকসানের ঘানি টানতে হচ্ছে সরকারকে। তবে ডাক বিভাগে যেসব সেবা বর্তমানে চলমান রয়েছে তা সাধারণ মানুষের কাছে জানান দিতে পারলেই আবার কর্মচঞ্চল হয়ে হারানো যৌবন ফিরে পাবে।