পদ্মার ভাঙনের শিকার ৭০০ পরিবার

  • মোঃ রফিকুল ইসলাম, ডিস্ট্রিক করেসপন্ডেন্ট, বার্তাটোয়েন্টিফোর.কম, মাদারীপুর
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

শিবচরে পদ্মার ভাঙনের শিকার ৭০০ পরিবার, ছবি: বার্তাটোয়েন্টিফোর.কম

শিবচরে পদ্মার ভাঙনের শিকার ৭০০ পরিবার, ছবি: বার্তাটোয়েন্টিফোর.কম

পদ্মা নদীর ভাঙনে মাদারীপুরের শিবচর উপজেলার কাঁঠালবাড়ি ইউনিয়নের ১ নং ওয়ার্ডের মাগুরখন্ড মৌজার তিনটি গ্রাম বিলীন হয়ে গেছে।

বিলীন হয়ে যাওয়া গ্রামগুলো হলো- মুন্সি আবদুর আজিজ ফকিরের কান্দি, আইনউদ্দিন হাজির কান্দি ও হাজী মনসুর আলী খার কান্দি। এ সব গ্রামে ৭ শতাধিক পরিবারের বাস ছিল। নদীর ভাঙনে তাদের বাড়ি ও ফসলি জমি সম্পূর্ণ নদী গর্ভে চলে গেছে। এখন সকলের প্রশ্ন আমরা কোথায় যাবো?

বিজ্ঞাপন

ক্ষতিগ্রস্থ এলাকাবাসীর সাথে কথা বলে জানা যায়, দেশ বিভাগের পূর্বে ১৯৩৮ সালে এ মৌজাটি প্রতিষ্ঠিত হওয়ার পর ১৯৮৮ থেকে ৯১ সালে পদ্মার ভয়াবহ ভাঙনের স্বীকার হয়। পরবর্তীতে ১৯৯৮ সালে আবার চর জাগলে ভিটে হারা মানুষগুলো একত্রিত হতে থাকে। গড়তে থাকে বসতি, উঠতে থাকে বাজার, রাস্তাঘাট ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। কিন্তু গত ১ মাসের ভয়াবহ ভাঙনে আবার বিলীন হয়ে যায় গ্রামগুলো। এতে গৃহহীন হয়ে পড়ে প্রায় সাত শতাধিক পরিবার।

বিজ্ঞাপন

কাঁঠালবাড়ি ইউনিয়ন ভূমি অফিসের তথ্য সূত্রে জানা যায়, ৭.৫৮ বর্গ কিলোমিটারের এই মৌজাটি গত কয়েকদিনে পদ্মা নদীর ভাঙনে বিলীন হয়ে যায়।

এসকল গ্রামের ভিটে মাটি হারা লোকজন কেউ চলে যাচ্ছে শরীয়তপুরের জাজিরা উপজেলায়, কেউ বা আবার মুন্সীগঞ্জে। এছাড়া যাদের আর্থিক অবস্থা মোটামুটি ভালো তারা কেউ উপজেলার কুতুবপুর ও কাঁঠালবাড়ি ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রামে কাঠা প্রতি বাৎসরিক ১ হাজার টাকা খাজনা দিয়ে অন্যের জমিতে বসতি স্থাপন করছে।

রোববার (৬ অক্টোবর) সরেজমিনে শিবচর উপজেলার কাঁঠালবাড়ি ও কুতুবপুর ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রামে বসতি স্থাপন করা প্রায় শতাধিক পরিবারের দুঃখ-কষ্ট শুনে জানা যায় তাদের জীবন সংগ্রামের করুন চিত্র।

কাঁঠালবাড়ি ইউনিয়নের কালাই হাজির কান্দি গ্রামে আশ্রয় নেওয়া নার্গিস বেগম নামের এক গৃহবধূ জানান,' আমরা গরিব মানুষ। দুই ছেলে মেয়েকে নিয়ে আগের স্থানে (মাগুর খন্ড) অভাব অনটনে ছিলাম। পদ্মার রাহু গ্রাস আমাদের শেষ সম্বল টুকু কেড়ে নিছে'

মুরাদ নামে এক স্কুলছাত্র বলেন 'নদীর ভাঙনে আমাদের স্কুলটি নদীর মধ্য চইলা গেছে। আমার এহন অনেক কষ্ট করে দূরে এক স্কুলে যেতে হয়'

কাঁঠালবাড়ি ইউনিয়নের ১ নং ওয়ার্ডের সদস্য মাহবুব মিয়া বলেন, 'গত এক মাসে নদী ভাঙনে আমার ওয়ার্ডের তিনটি গ্রাম বিলীন হয়ে যায়। তিনটি গ্রামে ২৪০০ ভোটারের বসবাস ছিলো। এরা এখন বিভিন্ন জায়গায় চলে গেছে। সরকারের কাছে ও আমাদের এমপি মহোদয়ের কাছে আমার দাবি দ্রুত এসকল মানুষের পুনর্বাসন করা হোক যাতে তারা একত্রিত হয়ে বসবাস করতে পারে।