দিনাজপুরে চালের দামও বাড়তি
শষ্যভান্ডার নামে খ্যাত দিনাজপুর জেলায় পেঁয়াজের মূল্য বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে বেড়েছে চালের দামও। সব ধরনের চালে বস্তাপ্রতি দাম বেড়েছে ২০০-৩০০ টাকা। ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন, বেশি দামে ক্রয় করায় দাম বাড়িয়েই বিক্রি করছেন তারা। তবে এর বাইরে আর কোনো কারণ তাদের জানা নেই। অন্যদিকে আমনের ভরা মৌসুমে চালের দাম বাড়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করছেন সাধারণ ক্রেতারা।
বাহাদুর বাজারের ব্যবসায়ীরা জানান, তারা ৫০ কেজির প্রতি বস্তা গুটি স্বর্ণ চাল বিক্রি করছেন এক হাজার ৩০০ টাকায়। গত সপ্তাহে যা বিক্রি হয়েছে এক হাজার ১৫০ টাকায়। বিআর-২৮ মোটা চাল প্রতি বস্তা এক হাজার ৬৫০ টাকায় বিক্রি হলেও গত সপ্তাহে দাম ছিল এক হাজার ৪৫০ টাকা। বিআর-২৯ মোটা চাল এক হাজার ৪৫০ টাকায় বিক্রি হলেও গত সপ্তাহে দাম ছিল এক হাজার ২০০ টাকা। তবে সবচেয়ে বেশি দাম বেড়েছে মিনিকেট চালের। মিনিকেট প্রতিবস্তা বিক্রি হচ্ছে দুই হাজার ২০০ টাকায়, যা গত সপ্তাহে বিক্রি হয় এক হাজার ৮০০ টাকায়। চিনিগুড়া চালের বস্তা বিক্রি হচ্ছে চার হাজার ৮৫০ টাকায়, গত সপ্তাহে যা বিক্রি হয়েছে চার হাজার ৩৫০ টাকায়।
বাহাদুর বাজারের মেসার্স সততা খাদ্য ভান্ডারের মালিক মো. আমিনুল ইসলাম জানান, সরকার ১০ টাকা কেজি দরে চাল সরবরাহ করায় তাদের বিক্রি কমেছে। তবে চাল বিক্রি না হলেও মিল মালিকদের টাকা পরিশোধ করতে হচ্ছে। তিনদিন আগে যেখানে দৈনিক প্রায় ১০০ বস্তা চাল বিক্রি হতো, সেটা কমে এখন ৩০-৩৫ বস্তায় নেমেছে।
তবে অনেক ব্যবসায়ী জানিয়েছেন, চলতি আমনের মৌসুমে সরকার ৬ লাখ মেট্রিক টন ধান ক্রয়ের পাশাপাশি সাড়ে ৩ লাখ টন সিদ্ধ চাল ও ৫০ লাখ মেট্রিকটন আতপ চাল কেনার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। ফলে এর প্রভাব পড়েছে খুচরা বাজারে। সরকার মোটা চাল ২৬ টাকা, সিদ্ধ চাল ৩৬ টাকা এবং আতপ চাল ৩৫ টাকায় কেনার ঘোষণা দিয়েছে। ফলে মিলাররা অধিক পরিমাণ ধান সংগ্রহ করছে। যার প্রভাব বাজারে পড়েছে।
তবে চালের দাম বৃদ্ধিকে স্বাভাবিক মনে করছেন মিল মালিকরা। তাদের যুক্তি- বাজারে ধানের দাম, উৎপাদন খরচ ও পরিবহন খরচ বেড়েছে। সুতরাং চালের দাম কেজিতে ২-৩ টাকা বৃদ্ধি খুবই স্বাভাবিক।
জেলা চাউলকল মালিক গ্রুপের সাবেক সাধারণ সম্পাদক রেজা হুমায়ন ফারুক চৌধুরী শামিম বলেন, ‘শুধুমাত্র মিনিকেট চালের দাম বেড়েছে। এর পেছনে মিলারদের কোনো ভূমিকা নেই। বরং সব দিক থেকে মিলাররা বর্তমানে সুবিধাজনক অবস্থানে নেই।’
দিনাজপুর জেলা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজের সভাপতি সুজা-উর-রব চৌধুরী বলেন,‘সম্প্রতি সরকার ধান-চাল কেনার ঘোষণা দিয়েছে, যা বাজারে প্রভাব ফেলছে। তবে চালের দাম বৃদ্ধি স্বাভাবিক। কারণ ধানের দাম বাড়লে যেমন কৃষকরা লাভবান হবেন তেমনি মিলারদের দিকটাও দেখতে হবে। এমনিতেই ব্যাংক ঋণে জর্জরিত মিলাররা।