অপহরণের ১০ ঘণ্টা পর শিশু উদ্ধার, গ্রেফতার ৩
নওগাঁর নিয়ামতপুর উপজেলা থেকে অপহরণের ১০ ঘণ্টা পর তিন বছর বয়সী এক শিশুকে উদ্ধার করেছে পুলিশ।
বুধবার (২০ নভেম্বর) ভোর সাড়ে ৫টার দিকে উপজেলার পিরপুকুরিয়া গ্রামের একটি খালের পাশ থেকে হাত-পা ও মুখ বাঁধা অবস্থায় শিশুটিকে উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে তিনজনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
আজ দুপুরে নওগাঁর পুলিশ সুপার আব্দুল মান্নান মিয়া তাঁর কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান। এ সময় অপহৃত শিশুটিকে সাংবাদিকদের সামনে তার মায়ের কোলে তুলে দেন পুলিশ সুপার। গ্রেফতার হওয়া ব্যক্তিরা হলেন, উপজেলার ধানোরা গ্রামের আবুল কাশেম (৩৩), পিরপুকুরিয়া গ্রামের শামসুজ্জামান ওরফে বাবু (৩২) ও মো. জুয়েল (৩৪)। উদ্ধার হওয়া শিশুটির নাম ইব্রাহিম ওয়াশি বাবু। সে উপজেলার পিরপুকুরিয়া গ্রামের নাজমুল হকের ছেলে।
সংবাদ সম্মেলনে পুলিশ সুপার আব্দুল মান্নান মিয়া জানান, গতকাল মঙ্গলবার সন্ধ্যা ৭টার দিকে ইব্রাহিম ওয়াশি তার বড় ভাই লেভিন ও মা মাসুদা বেগমের সঙ্গে তাদের ঘরে ল্যাপটপে ছবি দেখছিল। এক সময় তার মা খাবার আনতে অন্য ঘরে যায় এবং বড় ভাই লেভিন তার দাদার ঘরে যায়। সাড়ে ৭টার দিকে তার মা ঘরে এসে দেখেন ইব্রাহিম ঘরে নেই। তখন তিনি ইব্রাহিমকে নিজ বাড়ির অন্যান্য ঘর ও প্রতিবেশীদের বাড়িতে খোঁজাখুঁজি শুরু করেন। রাত ৮টার দিকে ইব্রাহিমের বাবা নাজমুল হকের মোবাইলে কল করে অজ্ঞাতনামা এক ব্যক্তি বলেন, ‘তোর ছেলেকে নিয়ে গেলাম যা করার করিস’। বিষয়টি তিনি সঙ্গে সঙ্গে নিয়ামতপুর থানা পুলিশকে জানালে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম) রকিবুল আক্তারের তত্ত্বাবধানে পুলিশের একটি দল অভিযান চালিয়ে ঘটনার সঙ্গে জড়িত সন্দেহে মঙ্গলবার রাতে নিজ নিজ বাড়ি থেকে শামসুজ্জামান, জুয়েল ও কাশেম নামে তিন ব্যক্তিকে আটক করেন।
পরে তাঁদের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী অপহৃত শিশু ইব্রাহিমকে আজ ভোর সাড়ে ৫টার দিকে পিরপুকুরিয়া গ্রামের নজরুল ইসলাম নামে এক ব্যক্তির বাড়ি থেকে ১ কিলোমিটার দূরে একটি মাঠের মধ্যে হাত-পা ও মুখ বাঁধা অবস্থায় উদ্ধার করে পুলিশ।
এ ঘটনায় শিশুটির বাবা নাজমুল হক বাদী হয়ে নিয়ামতপুর থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনের ধারা ৭ এর ৩০ উপধারায় মামলা করেন। সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে আব্দুল মান্নান মিয়া বলেন, প্রাথমিক তদন্তে ধারণা করা হচ্ছে, পারিবারিক কলহের জেরে শিশুটিকে অপহরণ করা হয়ে থাকতে পারে। তবে টাকা আদায়ের উদ্দেশে শিশুটিকে অপহরণ করা হয়েছে কিনা সে বিষয়টিও খতিয়ে দেখা হচ্ছে। গ্রেফতার তিন ব্যক্তি ছাড়াও এ ঘটনায় আরও অন্য কেউ জড়িত রয়েছে কিনা- তদন্ত করে চিহ্নিত করা গেলে তাঁদেরকে গ্রেফতার করা হবে।
নিয়ামতপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবুল কালাম আজাদ বলেন, এ ঘটনায় শিশুটির বাবা গ্রেফতার তিন ব্যক্তি ছাড়াও অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা করেছেন। গ্রেফতার তিন ব্যক্তিকে আদালতের মাধ্যমে নওগাঁ কারাগারে পাঠানো হয়েছে।