রাঙামাটিতে দু’বছরে ৬৭ জনকে হত্যা
রাঙামাটিতে আঞ্চলিক দলীয় সন্ত্রাসীদের আধিপত্য বিস্তারের লড়াই ও টার্গেট কিলিং মিশন কিছুতেই থামানো যাচ্ছে। ফলে সবুজ পাহাড়ে চলছে রক্তের হোলি খেলা। গত দুই বছরে পাহাড়ে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষে ৬৭ জনকে হত্যা করা হয়েছে। যাদের মধ্যে ২০১৮ সালে ২৮ জন এবং চলতি বছরের গত ১৮ নভেম্বর পর্যন্ত ৩৯ জনকে হত্যা করা হয়।
এদিকে, পাহাড়ের সন্ত্রাস দমনে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর তৎপরতা তেমন লক্ষ্য করা যায় না বলে অভিযোগ স্থানীয়দের। তবে সন্ত্রাসীদের দমন করতে সম্প্রতি আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী বেশ সরব বলে জানিয়েছেন রাঙামাটির পুলিশ সুপার মো. আলমগীর কবীর।
তিনি বার্তাটোয়েন্টিফোর.কমকে বলেন, 'পাহাড়ের সন্ত্রাসীদের গ্রেফতারে ধারাবাহিক অভিযান অব্যাহত রয়েছে। কিন্তু গহীন অরণ্যে গাঁ ঢাকা দেওয়ায় সন্ত্রাসীদের অবস্থান চিহ্নিত করা যায় না। ফলে গভীর অরণ্যেও অভিযান চালানো সম্ভব হয় না। তাছাড়া প্রয়োজনীয় সরঞ্জামের অভাবে সঠিকভাবে অভিযান পরিচালনা করা যায় না।'
প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, চলতি বছরের ৪ জানুয়ারি বাঘাইছড়ির বাবু পাড়ায় ব্রাশ ফায়ার করে বসু চাকমাকে, ২৯ জানুয়ারি লংগদুতে পবিত্র কুমার চাকমাকে, ৩ ফেব্রুয়ারি চন্দ্রঘোনার পূর্ব কোদালায় মিতালী মারমাকে, ৪ ফেব্রুয়ারি চন্দ্রঘোনার ভাল্লুকিয়ায় মো. জাহেদ (২৫) ও মংসুইনু মারমাকে (৪০) এবং রাঙামাটি সদরের বালুখালী ইউপিস্থ ২নং ওয়ার্ডের মধ্যপাড়া গ্রামের কাপ্তাই হ্রদ থেকে অজ্ঞাত ব্যক্তিকে হত্যা করা হয়।
এছাড়া ৭ মার্চ বাঘাইছড়ির বঙ্গলতলী বি-ব্লকে উদয় বিকাশ চাকমা ওরফে চিক্কোধন চাকমাকে (৩৮) এবং ১৮ মার্চ বাঘাইছড়ির নয়কিলোতে মো. আমির হোসেন (৩৭), মো. আলা আমিন (১৭), মিহির কান্তি দত্ত (৪০), জাহানারা বেগম (৪০), বিলকিস আক্তার (৪০), মন্টু চাকমা (২৫) ও আবু তৈয়বসহ মোট ৮ জনকে হত্যা করা হয়। আর পরেরদিন ১৯ মার্চ বিলাইছড়িতে আওয়ামী লীগের জনপ্রিয় নেতা সুরেশ কান্তি তঞ্চঙ্গ্যাকে গুলি করে হত্যা করা হয়। এরপর চলতি বছরের এপ্রিল মাস থেকে গত ১৮ নভেম্বর পর্যন্ত আরও ২৩ জনকে বিভিন্নভাবে হত্যা করা হয়। যাদের মধ্যে গত ১৮ নভেম্বর তিনজনকে হত্যা করা হয়। আর ২০১৮ সালে নির্মমভাবে হত্যা করা হয় ২৮ জনকে।
নিরাপত্তা বিশ্লেষকরা জানিয়েছেন, পাহাড়ে পান থেকে চুন খসলেই স্থানীয় নেতারা রাস্তায় নেমে যান। তবে আঞ্চলিক দলগুলোর ব্যাপক সশস্ত্র তৎপরতা বন্ধে এখনো নেতারা উদ্যোগ নেননি। মূলত পাহাড়ে সশস্ত্র তৎপরতায় স্থানীয় নেতাদের মৌন সমর্থন রয়েছে বলে বিভিন্ন গোয়েন্দা রিপোর্টে উঠে এসেছে।