অবশেষে রাঙামাটিতে টিসিবির পেঁয়াজ
পরিবহন খরচের অজুহাত দেখিয়ে এতোদিন রাঙামাটিতে সরকারি বিপণন সংস্থা ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) পেঁয়াজ বিক্রি হয়নি। বিষয়টি নজরে আসায় নাগরিক দুর্ভোগ লাঘবে জেলা প্রশাসন থেকে পরিবহন খরচ প্রদান করে পেঁয়াজ আনার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
মঙ্গলবার (১০ ডিসেম্বর) সকাল থেকে রাঙামাটির স্টেডিয়াম এলাকায় এই পেঁয়াজ বিক্রি শুরু করবে ব্যবসায়ীরা। পর্যায়ক্রমে শহরের অন্যান্য এলাকাগুলোতেও পেঁয়াজ বিক্রি করা হবে বলে জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে। জেলা প্রশাসকের উদ্যোগ সফল হলে রাঙামাটিতেও প্রতি কেজি পেঁয়াজ ৪৫ টাকায় বিক্রি হবে। তবে একদিনে একজন ক্রেতা এক কেজির বেশি পেঁয়াজ কিনতে পারবেন না।
পেঁয়াজের অস্থির বাজারে এখনও যেন সাধারণের প্রবেশাধিকার নেই। রাঙামাটিতে এখনও প্রতি কেজি দেশি পেঁয়াজ ১৮০ থেকে ২০০ টাকা এবং তুরস্কের বড় পেঁয়াজ প্রতি কেজি বাজার ভেদে ১২০, ১৪৫ থেকে ১৬০ টাকা পর্যন্ত বিক্রি হচ্ছে।
নভেম্বরের মাঝামাঝি থেকে দেশের প্রায় প্রতিটি জেলায় খোলাবাজারে ৪৫ টাকা কেজি দরে টিসিবির পেঁয়াজ বিক্রয় শুরু হলেও রাঙামাটির মানুষ এই ন্যায্যমূল্যের পেঁয়াজের নাগাল পায়নি। জানা গেছে, রাঙামাটির টিসিবি ডিলারদের অনীহার কারণেই এখানকার মানুষ এই সুযোগ থেকে বঞ্চিত ছিল।
অবশেষে রাঙামাটির জেলা প্রশাসক একেএম মামুনুর রশিদ নিজেই উদ্যোগী হয়ে টিসিবি ডিলার ও ব্যবসায়ীদের সঙ্গে দেন দরবারের মাধ্যমে ডিলারদের চট্টগ্রাম থেকে পেঁয়াজ আনতে রাজি করিয়েছেন।
জেলা প্রশাসনের দায়িত্বশীল সূত্র জানায়, রাঙামাটির ডিলারদের চট্টগ্রাম থেকে পেঁয়াজ সংগ্রহ করতে হবে। তারা প্রতিকেজি পেঁয়াজ ৪১.৫০ টাকা দরে ক্রয় করতে পারবেন এবং বিক্রি করতে হবে ৪৫ টাকা কেজি দরে। একজন ডিলার প্রতিদিন সর্বোচ্চ ১ টন পেঁয়াজ সংগ্রহ করতে পারবেন। উপরোক্ত বাধ্যবাধকতার কারণে ডিলাররা পেঁয়াজ আনতে অনীহা দেখায়। কারণ এই নিয়মে পেঁয়াজ এনে বিক্রি করলে তাদের যে মুনাফা হবে তা গাড়ি ভাড়াতেই ব্যয় হয়ে যেতে পারে।
এই খবর জানতে পেরে জেলা প্রশাসক মামুনুর রশিদ ডিলার ও রাঙামাটির বাজার ব্যবসায়ী সমিতিগুলোর নেতৃবৃন্দকে নিয়ে সম্প্রতি বিশেষ সভা করেন। সেখানে ব্যবসায়ীদের লোকসান হওয়ার আশঙ্কা জানতে পেরে ডিসি বলেছেন প্রয়োজনে পরিবহন ব্যয় জেলা প্রশাসন থেকে প্রদান করা হবে।
জেলা প্রশাসক একেএম মামুনুর রশিদ জানিয়েছেন, রাঙামাটিতে সাতজন টিসিবি ডিলার থাকলেও তারা টিসিবির নিয়ম কানুনের দোহাই দিয়ে পেঁয়াজ আনা থেকে বিরত ছিল। আমি তাদের সঙ্গে আলাপ আলোচনার মাধ্যমে পরিবহন ব্যয় জেলা প্রশাসন থেকে প্রদান করার আশ্বাস দিলে তারা পেঁয়াজ আনতে রাজি হয়েছেন।
এদিকে রাঙামাটির জেলা প্রশাসকের অনুরোধে পরিবহন ব্যয় কমাতে চট্টগ্রাম টিসিবি কর্তৃপক্ষ সোমবার বিকেলে রাঙামাটির সাতজন লাইসেন্সধারী ব্যবসায়ীকে আট মেট্রিক টন পেঁয়াজ দিয়েছে।
রাঙামাটির জেলা প্রশাসক একেমএম মামুনুর রশিদ তার পক্ষ থেকে বিশেষ ছাড়ের বিষয়ে প্রতিবেদককে জানিয়েছেন, এরপরও যদি কোনো ডিলার পেঁয়াজ আনতে না চায় তবে তাদের লাইসেন্স বাতিলের উদ্যোগ নেওয়া হবে বলে জানান তিনি।