সরকারি রাস্তা দখলে, প্রতিবেশীদের যাতায়াত খাল পেরিয়ে
মুন্সিগঞ্জের শ্রীনগরে সরকারি রাস্তা দখল করে বাড়ি-ঘর নির্মাণের অভিযোগ উঠেছে আবুল হাসেম মুন্সী নামক এক ব্যক্তির বিরুদ্ধে। উপজেলার শ্যামসিদ্ধি ইউনিয়নের গাদিঘাট গ্রামের মাঝেরহাটি এলাকায় রাস্তার ওপর নির্মিত এই অবৈধ বাড়ি-ঘরের জন্য দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে প্রতিবেশীদের। সরকারি রাস্তা থাকতেও গত তিন বছর ধরে তারা নৌকায় করে খাল পেরিয়ে বাড়িতে যাতায়াত করেন। কয়েক দফা চেষ্টা করেও এই সমস্যার মেলেনি কোনো সমাধান।
গাদিঘাট মাঝেরহাটির মুন্সীবাড়ি ও হাটি পাড়ায় ২ শতাধিক পরিবারের বসবাস। তাদের যাতায়াতের একমাত্র রাস্তা এখন দখলে। খালের উপর ঝুঁকিপূর্ণ বাঁশের সাঁকোতে চলাচল করতে হয় এসব পরিবারের স্কুল-কলেজ পড়ুয়া শিক্ষার্থীদের।
জানা গেছে, গাদিঘাট মৌজার আর.এস ০১ খতিয়ানের আর.এস ২৫১২ দাগের রাস্তা, যা ২শত মিটারের অধিক দীর্ঘ ও ৯ ফুট প্রশস্ত। কিন্তু এই রাস্তা সরকারি এস.এ ও আর.এস পর্চা ও ম্যাপে থাকলেও তা বাস্তবে নেই।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, কোথাও ৪ ফুট আবার কোথাও ৬ ফুট কোথাও রাস্তাটি পুরোপুরি হাসেম মুন্সীর দখলে। আরও ৮-১০টি বাড়ি রাস্তার দুই পাশেই ২-৩ ফুট করে দখল করে রেখেছে।
রাস্তার শেষের দিকে বাড়ির মালিক এই হাসেম মুন্সী পুরো রাস্তাটি দখল করে পাকাবাড়ি নির্মাণ করায় রাস্তাটি সরকারি ম্যাপের জায়গায় নেই। পাশের বাড়ির ওপর দিয়ে সরু হয়ে গেছে। তাতে ওই বাড়ির মালিক নিজ বসতঘর সরিয়ে দিয়েছেন মানুষের চলাচলের সুবিধার্থে।
গত কয়েক বছর আগে এই রাস্তাটিতে ইউনিয়ন পরিষদ ইট বিছানোর কাজ শুরু করলেও দখলে থাকায় পুরো কাজটি সংস্কার সম্পূর্ণ করা হয়নি।
এই রাস্তাটি উদ্ধার এবং সংস্কারের দাবিতে শ্রীনগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও সহকারী কমিশনার (ভূমি) বরাবর লিখিত অভিযোগ করেন গাদিঘাট মাঝের কান্দি গ্রামের ভুক্তভোগীরা। এই অভিযোগের প্রেক্ষিতে শ্যামসিদ্ধি ইউনিয়ন ভূমি অফিসের সহকারী কর্মকর্তা টুটুল আহমেদ ঘটনাস্থল তদন্তে যান।
সেখানে একজন এলাকার ভুক্তভোগী নুরুল হক তাকে জানান, হাসেম মুন্সীর অত্যাচারে আমরা অতিষ্ঠ। আমাদের বাড়ির পশ্চিম পাশ দিয়েই একশ বছরের পুরনো সরকারি রাস্তা থাকলেও দখলদার হাসেম মুন্সী রাস্তা আটকে দেওয়ায় আমরা বাড়ি থেকে সরাসরি রাস্তায় যেতে পারি না।
এ বিষয়ে হাসেম মুন্সী জানান, আমার জায়গার ওপর দিয়ে রাস্তা গেছে। আমার বাড়ির পশ্চিমে রাস্তা ছেড়েছি। এরপরও আমার জায়গা আছে। আমি কারো জায়গা দখল করিনি।
শ্যামসিদ্ধি ইউনিয়ন নায়েব নজরুল ইসলাম জানান, সহকারী কর্মকর্তা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। তার রিপোর্ট পাওয়ার পর ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ ব্যবস্থা নেবে।
উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান জিঠু বার্তা২৪.কম-কে জানান, এটা দীর্ঘদিনের সমস্যা। এক সময় পায়ে হেটে চলা মুশকিল ছিল। আমরা উদ্যোগ নিয়ে অনেকের ঘরবাড়ি সরিয়ে রাস্তা বের করেছি। কিন্তু এখনো ৮-১০টি বাড়ি ২-১ ফুট করে রাস্তায় আছে। তাই তাদের নিয়ে বসে সমস্যা সমাধানের একটা কথা রয়েছে।
স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান রতন মিয়া বার্তা২৪.কম-কে জানান, বিষয়টি আমি শুনেছি। শ্রীনগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও সহকারী কমিশনার (ভূমি) অফিস থেকে ফোনে জানিয়েছেন আমাকে। এটি বহুদিনের সমস্যা।