আজ নওগাঁ হানাদারমুক্ত দিবস
১৯৭১ সালের ১৮ ডিসেম্বর নওগাঁ হানাদারমুক্ত হয়। এদিন সকালে বগুড়া থেকে অগ্রসরমান ভারতীয় মেজর চন্দ্রশেখর, পশ্চিম দিনাজপুর বালুরঘাট থেকে নওগাঁ অভিমুখে অগ্রসরমান পিবি রায়ের নেতৃত্বে মিত্র বাহিনী ও মুক্তিবাহিনী নওগাঁয় প্রবেশ করে। হানাদার বাহিনীর তখন আর করার কিছুই ছিলনা। ফলে প্রায় দুই হাজার পাকসেনা নওগাঁ কে.ডি স্কুল থেকে পিএম গার্লস স্কুল ও সরকারি গার্লস স্কুল থেকে শুরু করে পুরাতন থানা চত্বর ও এস ডি ও অফিস থেকে শুরু করে রাস্তার দু’পাশে মাটিতে অস্ত্র রেখে সারিবদ্ধ ভাবে দাঁড়িয়ে নতমস্তকে আত্মসমর্পণ করে। এসময় নওগাঁর বিহারী সম্প্রদায় স্বপরিবারে কে.ডি সরকারি স্কুলে আশ্রয় নেয়।
তৎকালীন নওগাঁ মহকুমা প্রশাসক সৈয়দ মার্গুব মোরশেদ মুক্তি বাহিনী ও মিত্র বাহিনীকে স্বাগত জানান। নওগাঁর বীর মুক্তিযোদ্ধারা বিজয় উল্লাসে ‘জয়বাংলা’ ধ্বনি দিতে দিতে এস ডি ও অফিস চত্বরে স্বাধীন বাংলাদেশের পতাকা উত্তোলন করেন এবং উপস্থিত মুক্তিযোদ্ধারা পতাকার প্রতি সালাম জানিয়ে সম্মান প্রদর্শন করে। নওগাঁ হানাদারমুক্ত হয় ১৮ ডিসেম্বর।
উল্লেখ্য,৭ মার্চ জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ঐতিহাসিক ভাষণের পর পরই নওগাঁয় সর্বদলীয় সংগ্রাম পরিষদ গঠিত হয়। ২৫ মার্চ পাক হানাদারদের আক্রমণের শিকার হলেও নওগাঁ মুক্ত ছিল প্রায় এক মাস। ২২ এপ্রিল নওগাঁ পাক হানাদারদের দখলে চলে যায়। ১৬ ডিসেম্বর বিজয়ের খবর জানার পর বীর মুক্তিযোদ্ধা জালাল হোসেন চৌধুরী নওগাঁ আক্রমণ করার সিদ্ধান্ত নেন। তার পূর্বে নদীকূল নামক স্থানে গ্রুপ কমান্ডারদারদের ব্রিফিং দেন জালাল হোসেন চৌধুরী এইমর্মে যে, নওগাঁ এখনও অবাঙালিদের নিয়ন্ত্রণে। ১৭ ডিসেম্বর শীতের সকাল। বিশাল মুক্তিযোদ্ধাদের দল নওগাঁ আক্রমণ করে। মুক্তিবাহিনী জগৎসিংহপুর ও খলিশাকুড়ি গ্রামে অবস্থান নিলে দুই বাহিনীর মধ্যকার দূরত্ব শুধু শাখা যমুনা নদী। এ অবস্থায় জালাল হোসেন চৌধুরী তার দলকে গুলি চালাবার নির্দেশ দেন। রাত পর্যন্ত এ যুদ্ধ স্থায়ী ছিল।