বোরো ধানের বীজতলা নিয়ে শঙ্কিত কৃষকরা

  • মাজেদুল হক মানিক, ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তাটো২৪.কম, মেহেরপুর
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

বোরো ধানের চারা, ছবি: বার্তা২৪.কম

বোরো ধানের চারা, ছবি: বার্তা২৪.কম

বিরাজমান বৈরী আবহাওয়ায় বোরো ধানের চারা নিয়ে মেহেরপুরের কৃষকদের দুশ্চিন্তার সীমা নেই। আধুনিক চাষাবাদের পদ্ধতিতে চারা রক্ষার কৌশল থাকলেও তা কাজে লাগানো কৃষকের সংখ্যা কম। প্রতিকূল আবহাওয়া বজায় থাকলে বোরো বীজতলার বড় ধরনের ক্ষতির আশংকা করছেন কৃষকরা।

ফল আর খাদ্য ফসলের সম্ভার মেহেরপুর জেলা। প্রতি বছর বোরো, আমন ও আউশ মৌসুমে উল্লেখযোগ্য পরিমাণ জমিতেই ধান চাষ হয়। তবে বোরো মৌসুমের বীজতলার বিষয়ে কৃষকদের মাঝে সেই পুরাতন পদ্ধতিগত প্রক্রিয়া লক্ষণীয়। ফলে শৈত্যপ্রবাহ ও কুয়াশায় অনেক বীজতলা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। বিশেষ করে দেরিতে ধান বীজ ছিটানো বীজতলাগুলো চরম ঝুঁকির মধ্যে পড়েছে। কৃষি বিভাগের পরামর্শ অনুযায়ী ব্যবস্থা নিয়ে নিরাপদ ধান চারা তৈরি সম্ভব। আধুনিক চাষ পদ্ধতির বার্তা নিয়ে তাই মাঠ পর্যায়ে ঘুরছেন কৃষি কর্মকর্তারা। বিশেষ করে কুয়াশা ঘেরা দিনে পলিথিন দিয়ে বীজতলা ঢেকে দেওয়া ও পর্যাপ্ত পানি রাখতে হবে বীজতলায়।

বিজ্ঞাপন

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, চলতি মৌসুমে ২১ হাজার ৪৮০ হেক্টর জমিতে বোরো ধানের আবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। এর জন্য ১ হাজার ৬০ হেক্টর জমিতে বীজতলা তৈরির লক্ষ্যমাত্রায় এখন পর্যন্ত অর্জিত হয়েছে ৯৪০ হেক্টর।

শৈত্যপ্রবাহ ও কুয়াশায় অনেক বীজতলা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে

গেল এক সপ্তাহ ধরে মেহেরপুর জেলার উপর দিয়ে মাঝারি ও মৃদু শৈত্যপ্রবাহ বিরাজ করছে। কয়েকদিন ধরে সূর্যের দেখা মেলেনি। এতে বোরো ধানের বীজ তলায় হলদে রং ধারণ করছে বিভিন্ন এলাকায়। পরিস্থিতি উত্তরণের বিষয়ে কৃষি বিভাগের আধুনিক চাষাবাদ কৌশল অনুসরণ করছেন না বেশিরভাগ কৃষক। প্রথাগত বিষয় ধরে বীজতলা তৈরি করায় দুশ্চিন্তায় ডুবে যাচ্ছে বেশিরভাগ কৃষক।

বিজ্ঞাপন

কাজিপুর গ্রামের কৃষক আব্দুর রহমান এমনই একজন কৃষক। তিনি বলেন, বাপ দাদার আমল থেকে চারা দিয়ে আসছি। কোনদিন বীজতলা পলিথিন দিয়ে ঢেকে দেয়নি। এর মধ্য দিয়ে যা হয় তাই দিয়ে ধান আবাদ করি।

বোরো ধানের চারা তৈরি

গাংনী উপজেলার ভাটপাড়া গ্রামের কৃষক সুলতান আহম্মেদ বলেন, কৃষি অফিসের পরামর্শ অনুযায়ী বেড তৈরি করে চারা দিয়েছি। দিনের কুয়াশায় পলিথিন দিয়ে বীজতলা ঢেকে দিচ্ছি আর সন্ধ্যায় পানি ভরে দিয়ে সকালে বের করে দিচ্ছি। এতে আমার চারা খুব সুস্থভাবে বেড়ে উঠছে। পাশে যারা গতানুগতিক ব্যবস্থায় চারা দিয়েছে তাদের চারা নষ্ট হচ্ছে।

গাংনী উপজেলা কৃষি অফিসার কেএম শাহাবুদ্দিন আহমেদ বলেন, দিনের বেলা কুয়াশা ও প্রচণ্ড ঠাণ্ডা থাকলে বীজতলা পলিথিন দিয়ে ঢেকে দিয়ে সন্ধ্যার আগে খুলে দিতে হবে। নলকূপ থেকে গরম পানি দিতে হবে এবং ঠাণ্ডা হলে তা বের করতে হবে। বৈরি আবহাওয়া কেটে গেলে বীজতলায় ইউরিয়া ও সালফার সার প্রয়োগ করলে চারা দ্রুত বেড়ে উঠবে। এ পদ্ধতি অনুসরণ করলে বীজতলা ভালো থাকবে।