২০১৯ সালে অস্ত্রধারীদের হাতে রাঙামাটিতে ৪২ খুন

  • ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, রাঙামাটি
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

রাঙামাটি জেলার মানচিত্র, ছবি: বার্তা২৪.কম

রাঙামাটি জেলার মানচিত্র, ছবি: বার্তা২৪.কম

২০১৯ সালজুড়ে পার্বত্য জেলা রাঙামাটিতে আধিপত্যের লড়াইয়ে সশস্ত্র তৎপরতায় লিপ্ত থাকা পাহাড়ি সন্ত্রাসীদের হামলা-পাল্টা হামলাসহ প্রতিপক্ষের হাতে অন্তত ৪২ জন নিহত হয়েছে। এমনকি পার্বত্য চট্টগ্রামের অরণ্যে ঘাপটি মেরে থাকা বেপরোয়া আঞ্চলিক সন্ত্রাসীদের হাতে সেনাবাহিনীর সদস্যকেও প্রাণ দিতে হয়েছে।

নিহতের অধিকাংশই স্থানীয় উপজাতীয় সম্প্রদায়ের বাসিন্দা এবং তথাকথিত অধিকার আদায়ের নামে সশস্ত্র তৎপরতায় লিপ্ত থাকা আঞ্চলিক রাজনৈতিক দলগুলোর সক্রিয় সদস্য ও সমর্থক।

বিজ্ঞাপন

মূলতঃ ভ্রাতৃঘাতি সংঘাত ও চাঁদাবাজিকে কেন্দ্র করে সংগঠিত সশস্ত্র হামলার মাধ্যমে ২০১৯ সালের শুরু থেকে শেষ সময় পর্যন্ত এসব হত্যাকাণ্ড ঘটে। রাঙামাটি জেলার পুলিশ বাহিনী, বিভিন্ন সংস্থাসহ নিরাপত্তাবাহিনীর দায়িত্বশীল সূত্রে জানা গেছে, জানুয়ারি মাসে ২ জন, ফেব্রুয়ারিতে ৪ জন, মার্চে ১০ জন, এপ্রিলে ৭ জন, মে মাসে ২ জন, জুন মাসে ১ জন, জুলাইয়ে ২ জন, আগস্ট মাসে ৪ জন, সেপ্টেম্বরে ২ জন, অক্টোবর মাসে ২ জন, নভেম্বর ও ডিসেম্বর মাসে ৩ জন করেসহ সর্বমোট ৪২ জন মারা গেছেন সংঘাতে জড়িয়ে।

প্রতিনিয়ত রক্তক্ষয়ী সংর্ঘের কারণে চরম আতংক বিরাজ করছে পাহাড়ে। বাড়ছে একটার পর একটা আঞ্চলিক রাজনৈতিক দলের সংখ্যা। যার ফলে পাহাড়ে অবৈধ অস্ত্র ও চাঁদাবাজী, খুন, গুম ও বন্দুকযুদ্ধের ঘটনা বেড়ে চলেছে। পার্বত্য বিশেষজ্ঞদের মতে, পক্ষগুলোর মধ্যে সংঘাত যতটা না আদর্শিক কারণে, তারচেয়ে বেশি এলাকার দখলদারিত্ব, দখল নিয়ন্ত্রণে রাখা, চাঁদাবাজির পয়েন্টগুলো নিয়ন্ত্রণ, বিশাল সশস্ত্র গ্রুপের কর্মীদের ভরণপোষণের ব্যয়ভার মেটানো, প্রতিপক্ষের কর্মসূচিতে বাধা প্রদানসহ পাল্টা প্রতিরোধ ইত্যাদি বিরোধের কারণ।

বিজ্ঞাপন

পার্বত্য জেলাগুলোতে চাষাবাদ থেকে শুরু করে, পণ্য পরিবহনসহ প্রতিটি ক্ষেত্রেই সশস্ত্র গ্রুপগুলোকে চাঁদা দিতে হয়। কাঙ্খিত চাঁদা না পেলে তারা খুন, অপহরণসহ নানা অপকর্ম করে। এমতাবস্থায় স্থানীয় জনগণের নিরাপত্তায় নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে সেনা সদস্যরা। কিন্তু শান্তি চুক্তির শর্ত অনুযায়ী পার্বত্য জেলার দূর্গম অঞ্চল থেকে বেশকিছু সেনাক্যাম্প প্রত্যাহার করা হয়েছে। স্থানীয়রা মনে করেন, জনগণের নিরাপত্তার স্বার্থে সেনাক্যাম্প রাখা প্রয়োজন। সেনা সরিয়ে নিলে পার্বত্য জেলায় নিরাপত্তা শূন্যতা তৈরি হবে।