ফেলানী হত্যার ৯ বছর, ন্যায়বিচারের আশায় পরিবার
বহুল আলোচিত ফেলানী খাতুন হত্যার ৯ বছর পূর্তি আজ ৭ জানুয়ারি (মঙ্গলবার)। ২০১১ সালের এ দিনে ভারতীয় সীমান্ত রক্ষীবাহিনীর (বিএসএফ) গুলিতে নির্মম হত্যার শিকার ফেলানীর মরদেহ কাঁটাতারে ঝুলেছিল দীর্ঘ সাড়ে ৪ ঘণ্টা। প্রতিবাদী হয়ে উঠেছিল গণমাধ্যমসহ বিশ্ব মানবাধিকার সংস্থাগুলো। তীব্র সমালোচনার মুখে পড়তে হয় ভারতকে।
দীর্ঘসূত্রিতার মধ্য দিয়ে ভারতীয় সুপ্রিম কোর্টে চলছে তার বিচারিক কার্যক্রম। ফেলানীর পরিবার এখনো বুক বেঁধে আছে ন্যায় বিচারের আশায়।
জানা যায়, কাজের সন্ধানে অবৈধভাবে মেয়ে ফেলানী খাতুনকে নিয়ে ভারতে পাড়ি জমিয়েছিলেন বাবা নুরুল ইসলাম নুরু। সেখানে কয়েক বছর থাকার পর কিশোরী মেয়েকে বিয়ে দেওয়ার উদ্দেশ্যে নিজ দেশে রওয়ানা দিয়েছিলেন তিনি। সেদিন ছিল ২০১১ সালের ৭ জানুয়ারি। ফুলবাড়ী উপজেলার অনন্তপুর সীমান্ত দিয়ে বাংলাদেশে প্রবেশের চেষ্টা করেন বাবা ও মেয়ে। বাবা নুরুল হক কাঁটাতারের বেড়া ডিঙিয়ে পার হতে পারলেও মেয়ে ফেলানী কাঁটাতারে উঠতেই বিএসএফ সদস্য অমিয় ঘোষ গুলি চালান। সঙ্গে সঙ্গে কাঁটাতারেই ঝুলে পড়ে ফেলানীর নিথর দেহ। সেখানে সাড়ে ৪ ঘণ্টা ঝুলে থাকার পর তার মরদেহ নিয়ে যায় বিএসএফ।
এ ঘটনায় বিশ্বব্যাপী তোলপাড় শুরু হলে পরদিন শনিবার বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ-বিজিবির কাছে ফেলানীর মরদেহ হস্তান্তর করে বিএসএফ। দীর্ঘ ৯ বছর পেরিয়ে গেলেও আজও ফেলানী হত্যার ন্যায়বিচার সম্পন্ন হয়নি। ২০১৫ সালের ১৩ জুলাই ভারতীয় মানবাধিকার সুরক্ষা ম (মাসুম) ফেলানী খাতুন হত্যার বিচার ও ক্ষতিপূরণের দাবিতে দেশের সুপ্রিম কোর্টে রিট আবেদন করে। ২০১৭ সালের ২৫ অক্টোবর শুনানির পর ভারতীয় সুপ্রিম কোর্টে তারিখ পিছিয়ে যায়। সর্বশেষ ২০১৮ সালের ২৫ জানুয়ারি শুনানির দিন ধার্য করা হলেও তা বারবার পিছিয়ে দেওয়া হয়। ফলে থমকে গেছে ফেলানী খাতুন হত্যার সুষ্ঠু বিচার ও ক্ষতিপূরণের দাবি।
ফেলানীর বাবা নুরুল ইসলাম নুরু ও মা জাহানারা বেগম জানান, ভারতীয় আদালতে ফেলানী হত্যার বিচারিক কার্যক্রম ঝুলে থাকায় আমরা হতাশ। আমরা ন্যায় বিচারের জন্য দীর্ঘ নয় বছর ধরে অপেক্ষা করছি।
এদিকে, ফেলানী হত্যার বিচার কার্যক্রম নিয়ে কুড়িগ্রামের পাবলিক প্রসিকিউটর অ্যাডভোকেট এসএম আব্রাহাম লিংকন জানান, ভারতীয় সুপ্রিম কোর্টে ফেলানী হত্যাকাণ্ডের রিট এ বছর তালিকা ভুক্ত না হওয়ায় বিচারিক কাজ কিছুটা বিলম্বিত হতে পারে।
দ্রুত ফেলানী হত্যাকাণ্ডের বিচারের রায় হলে উভয় দেশের সীমান্তের জন্য মঙ্গল বয়ে আনবে বলে মনে করেন তিনি।