পর্দাকাণ্ডে দুদকের মামলায় ৩ চিকিৎসক কারাগারে
ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বহুল আলোচিত পর্দাকাণ্ড ও দুর্নীতির মাধ্যমে ১০ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগে তিন চিকিৎসককে জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে।
রোববার (১২ জানুয়ারি) দুপুরে জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক বেগম কামরুন্নাহার তাদের জামিন নামঞ্জুর করে জেলহাজতে পাঠানোর নির্দেশ দেন।
কারাগারে পাঠানো ওই তিন চিকিৎসক হলেন- ফরিদপুর মেডিকেল কলেজের সহযোগী অধ্যাপক (দন্ত বিভাগ) ডা. গণপতি বিশ্বাস শুভ, একই হাসপাতালের সাবেক জুনিয়র কনসালটেন্ট (গাইনি) ডা. মিনাক্ষী চাকমা এবং হাসপাতালের সাবেক প্যাথলজিস্ট ডা. এ এইচ এম নুরুল ইসলাম।
জানা যায়, দেশব্যাপী বহুল আলোচিত এই পর্দা কেলেঙ্কারি মামলায় গত ২৭ নভেম্বর দুদকের প্রধান কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক মামুনুর রশীদ চৌধুরী বাদী হয়ে ফরিদপুর জজ আদালতে একটি মামলা দায়ের করেন। পরে এই মামলার ৬ জন আসামি উচ্চ আদালত থেকে ৬ সপ্তাহের অন্তর্বর্তীকালীন জামিন লাভ করেন। একইসঙ্গে উচ্চ আদালত তাদের নিম্ন আদালতে হাজিরের নির্দেশ দেন। রোববার জামিনের মেয়াদ শেষ হলে তিন চিকিৎসক ফরিদপুর আদালতে হাজির হয়ে জামিন প্রার্থনা করেন। পরে আদালত তাদের জামিন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।
এই মামলায় অপর তিন আসামিরা হলেন- জাতীয় বক্ষব্যাধী হাসপাতালের প্রশাসনিক কর্মকর্তা ও ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান অনিক ট্রেডার্সের মালিক মুন্সি সাজ্জাদ হোসেন, তার ভাই ও ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের স্বত্বাধিকারী আব্দুল্লাহ আল মামুন এবং অপর ভাই মেসার্স আহমেদ এন্টারপ্রাইজের স্বত্বাধিকারী মুন্সি ফররুখ আহমেদ।
এ ব্যাপারে রাষ্ট্রপক্ষের কৌঁসুলি ভারপ্রাপ্ত পিপি অ্যাডভোকেট দুলাল চন্দ্র সরকার বলেন, ‘আসামিরা আদালতে হাজির হয়ে জামিন প্রার্থনা করলে আমরা সঙ্গত কারণেই জামিনের বিরোধিতা করি। পরে আদালত আমাদের আবেদন মঞ্জুর করে তাদের জেলহাজতে প্রেরণ করেন।’
প্রসঙ্গত, ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের নামে অপ্রয়োজনীয় ও প্রাক্কলন ব্যতিত অবৈধভাবে উচ্চমূল্যে যন্ত্রপাতি ক্রয়ের মাধ্যমে সরকারের ১০ কোটি টাকা আত্মসাতের চেষ্টা করা হয়। পরে দণ্ডবিধির তৎসহ ১৯৪৭ সালের দুর্নীতি প্রতিরোধ আইনে একটি মামলা করা হয়। আদালতে দুদকের ফরিদপুর কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক কমলেশ মণ্ডল ওই মামলাটি রেকর্ড করান।
এর আগে গত ২০ আগস্ট ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রের (আইসিইউ) যন্ত্রপাতি ও বিশেষ পর্দা কেনাকাটায় অনিয়ম ও দুর্নীতির ঘটনার তদন্ত করতে দুদককে নির্দেশ দেন উচ্চ আদালত। এরপর দুদকের উপপরিচালক সামছুল আলম, উপসহকারী পরিচালক ফেরদৌস রহমান ও শহিদুর রহমানের নেতৃত্বে সরেজমিনে তদন্ত করে ব্যাপক দুর্নীতির প্রমাণ মেলে। সবশেষে গত ২৭ নভেম্বর ফরিদপুর আদালতে ওই মামলাটি দায়ের করা হয়।