ফুলের মাঝে স্বপ্ন দেখছেন ফরিদপুরের লিয়াকত
চাকরির পেছনে ছুটে অনেকটা ব্যর্থ হয়েই ফুলচাষ শুরু করেন ফরিদপুরের আলীয়াবাদ ইউনিয়নের ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি লিয়াকত হোসেন। চাকরি না পাওয়ার বেদনা থাকলেও ফুল চাষে সফলতা আসায় মুখে হাসি ফুটেছে তার। তবে পরিপূর্ণ প্রশিক্ষণ না থাকায় অনেকটা ঝুঁকির মধ্যে চাষ করতে হচ্ছে বলে বার্তা২৪.কম-কে জানান লিয়াকত হোসেন।
আলীয়াবাদ ইউনিয়নের খুশির বাজার এলাকায় ২০১৮ সালের শেষ দিকে মাত্র ৫২ শতাংশ জমিতে বড় ভাই আনোয়ার হোসেনের সহযোগিতায় জারবেরা ফুলের চাষ শুরু করেন। ২০১৯ সালে ব্যবসা ভালো হওয়ায় আরও ৭৫ শতাংশ জমি নিয়ে এখন মোট ১২৭ শতাংশ জমিতে ফুল চাষ করছেন লিয়াকত। জারবেরার পাশাপাশি চন্দ্রমল্লিকা, জিপসি ফুলের চাষ করছেন।
লিয়াকত জানান, প্রায় ২০ থেকে ২৫ লাখ টাকা বিনিয়োগ করে তিনি ফুলের চাষাবাদ শুরু করেন। এখন তার বিনিয়োগের পরিমাণ প্রায় ৪০ লাখ টাকা। যা তিনি গত দেড় বছরের লাভ থেকে করেছেন। তার বাগানের ফুল ফরিদপুর ও আশেপাশের জেলা ছাড়াও ঢাকা ও চট্টগ্রামের পাইকাররা এসে নিয়ে যাচ্ছে।
তিনি বলেন, এই ফুলের সবচেয়ে ভালো দিক হচ্ছে সারা বছরই ফুল ফুটে। ফলে সারা বছরই ব্যবসা থাকে। খারাপ দিক হচ্ছে এই ফুলের সঠিক পরিচর্যা না করতে পারলে ফুলগুলো নষ্ট হয়ে যায়। ফলে দাম পাওয়া যায় না। স্থানীয় পর্যায় থেকে এই ফুল চাষের সঠিক প্রশিক্ষণ পাওয়া যাচ্ছে না। তবে কৃষি বিভাগের জারবেরা সম্বন্ধে অভিজ্ঞ এমন কারো কাছ থেকে প্রশিক্ষণ নিতে পারলে আরও এগিয়ে যাওয়া সম্ভব। পাশাপাশি যারা আগ্রহ নিয়ে আমার কাছে জানতে আসে তাদেরও এই বিষয়ে জানানো সম্ভব।
লিয়াকত বলেন, অনার্স ও এলএলবি শেষ করে অনেক চাকরির জন্য ঘুরেছি, জোটেনি চাকরি। পরে বড় ভাইয়ের মাধ্যমে সাভারে গিয়ে কয়েক মাস থেকে সেখান থেকে ফুল চাষের কাজ শিখতে চেষ্টা করি। বিষয়টি নিজের আয়ত্বে আসার পর ফরিদপুর চলে আসি। এরপর ঢাকা, যশোর ও ভারত থেকে ফুলের চারা সংগ্রহ করে চাষাবাদ শুরু করি। এখান থেকে এখন ভালো কিছু করার স্বপ্ন দেখছি।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ-পরিচালক কৃষিবিদ কার্তিক চন্দ্র জানান, কৃষি বিভাগের সহযোগিতায় জেলায় কয়েকটি স্থানে ফুলের চাষ হচ্ছে। তবে যারা কৃষি বিভাগের সাথে কম যোগাযোগ রাখছেন তাদের সবসময় সহযোগিতা করা সম্ভব হয় না। তিনি জানান, যাদের সমস্যা আছে যোগাযোগ করলে তাদের জন্য প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা হবে।