মৌ চাষে ভাগ্য বদল
রংপুরের পীরগাছার বিস্তীর্ণ মাঠজুড়ে চোখে পড়ছে শুধু হলুদ সরিষা ফুল। এ যেন এক অপরূপ সৌন্দর্য। উপজেলার প্রতিটি মাঠে এখন সরিষা ফুলের হলুদ রঙের চোখ ধাঁধানো বর্ণিল সমারোহ। আর এ সরিষা ক্ষেত থেকে মৌমাছির সাহায্যে মধু সংগ্রহে ব্যস্ত সময় পার করছেন মৌ-চাষিরা।
শুক্রবার (১৭ জানুয়ারি) সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, উপজেলার পবিত্রঝাড় গ্রামে মধু সংগ্রহ করছেন মৌচাষি নুরুজ্জামান মিয়া ও তার দল। মধু সংগ্রহের জন্য তারা সরিষা ক্ষেতের পাশে মৌমাছির চাকের বাক্স ফেলে রেখেছেন। সেই বাক্সে ১০-১৫টি পর্যন্ত মোম দিয়ে চাকের ফ্রেম রাখা হয়েছে। সরিষা ফুল থেকে মৌমাছিরা নেকটার (পাতলা আবরণ) চাকের বাক্সে নিয়ে আসে। মৌমাছির তাপ ও বাতাসের মাধ্যমে ৬-৭ দিন পর তা গাঢ় হয়ে মধুতে পরিণত হয়। এরপর মৌ-চাষিরা চাকের বাক্স খুলে চাকের ফ্রেম থেকে মেশিনের মাধ্যমে মধু উৎপাদন করেন।
এবার সরিষায় ফুল ভালো ধরেছে। ফুল বাড়ার কারণে মধুও বেশি পাওয়ার আশা করছেন তারা। যতদিন পর্যন্ত সরিষায় ফুল থাকবে ততদিন পর্যন্ত তারা এই এলাকায় মধু সংগ্রহ করবেন বলে জানান মৌচাষি নুরুজ্জামান মিয়া। জমি থেকে মধু সংগ্রহ করায় সরিষা চাষিদের কোনো টাকা দিতে হয় না। শুধু ক্ষেতের মালিককে খাওয়ার জন্য মধু দিলেই তারা খুশি।
মৌচাষি নুরুজ্জামান মিয়া বার্তা২৪.কমকে বলেন, 'চার বছর আগে রংপুর ক্ষুদ্র ও কুঠির শিল্পে মৌমাছি চাষ বিষয়ে প্রশিক্ষণের সুযোগ হয় আমার। সেখানে প্রশিক্ষণ শেষে ১৫ হাজার টাকা ঋণ দেওয়া হয়। ওই টাকা দিয়ে ৫টি বাক্স কিনে মৌ-চাষের যাত্রা শুরু করি। এখন আমার ৭০-৮০টি বাক্স আছে। সব মিলিয়ে গড়ে মৌমাছি থেকে আহরণ করা মধু বিক্রি করে খরচ বাদ দিয়ে মাসে ৫০ থেকে ৭০ হাজার টাকা আয় হয়।'
পীরগাছা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা শামীমুর রহমান বার্তা২৪.কমকে বলেন, 'মৌমাছি চাষ একটি লাভজনক পেশা। মৌমাছি সরিষার পরাগায়ন বাড়ায়, ফলে সরিষার ফলনও বেশি হয়। প্রশিক্ষণ নিয়ে মৌমাছি চাষ করলে অনেক আত্মকর্মসংস্থানের সৃষ্টি হবে।'