আধুনিক পদ্ধতিতে কোল্ড ইনজুরি থেকে ধানের চারা রক্ষা

  • মাজেদুল হক মানিক, ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, মেহেরপুর
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

আধুনিক পদ্ধতি প্রয়োগে সবল চারা

আধুনিক পদ্ধতি প্রয়োগে সবল চারা

আধুনিক পদ্ধতি প্রয়োগের মাধ্যমে বোরো ধানের বীজতলা রক্ষা করেছেন মেহেরপুরের সচেতন কৃষকরা। তারা এখন স্বস্তিতে রয়েছেন। তবে সাধারণ পদ্ধতিতে চারা তৈরি করতে গিয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন অনেক কৃষক। ধান আবাদে চারা সংকটের আশঙ্কায় রয়েছেন তারা। তাই কোল্ড ইনজুরি থেকে ধানের চারা রক্ষায় আধুনিক পদ্ধতি প্রয়োগে জোর দিয়েছে কৃষি বিভাগ।

মেহেরপুর জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর সূত্রে জানা গেছে, ডিসেম্বর মাসের প্রথম থেকেই মেহেরপুর অঞ্চলে প্রচণ্ড শীত পড়তে থাকে। এর মধ্যে শুরু হয় বোরো ধানের বীজতলা তৈরির কাজ। অব্যাহত কুয়াশা আর শীতে বোরো বীজতলা ক্ষতিগ্রস্ত হতে থাকে। আক্রান্ত হয় কোল্ড ইনজুরিতে। ধানের চারা লালচে রং ধারণ এবং চারা মারা যেতে থাকে।

বিজ্ঞাপন

কৃষি বিভাগের পক্ষ থেকে চারা রক্ষায় বিভিন্ন পরামর্শ দেওয়া হয়। এতে অনেক চাষি উপকৃত হয়েছেন। বিশেষ করে কুয়াশার মধ্যে পলিথিন দিয়ে ঢেকে বীজতলা রক্ষা করেছেন অনেকে। আর যারা আধুনিক পদ্ধতি গ্রহণ করেননি তাদের বীজতলা ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

সাধারণ পদ্ধতিতে তৈরি বীজতলা কোল্ড ইনজুরিতে আক্রান্ত

কোল্ড ইনজুরিতে আক্রান্ত বীজতলার প্রায় ৬৫ ভাগ চারা রোপণ করা যাবে না বলে জানিয়েছেন ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকরা। ফলে এ অঞ্চলে বোরো ধানে চারা সংকটের আশঙ্কা করছেন অনেক চাষি।

বিজ্ঞাপন

গাংনী থানাপাড়ার কৃষক রবিউল ইসলাম বলেন, ‘চারা এক ইঞ্চির মতো লম্বা হওয়ার পর শীতে লালচে হয়ে আসতে থাকে। তখন পলিথিন দিয়ে পুরো বীজতলা ঢেকে দেওয়া শুরু করি। এভাবে কয়েকদিন ঢেকে দেওয়ার পর চারাগুলো সবুজ ও সতেজ হতে থাকে। গেল সপ্তাহে সার প্রয়োগ করেছি। এখন চারা রোপণের উপযুক্ত হয়েছে। তবে এ প্রক্রিয়া ব্যবহারের আগে যেটুকু ক্ষতি হয়েছে তার পরে আর কোনো চারা ক্ষতিগ্রস্ত হয়নি। আমার মতো যারা আধুনিক এই পদ্ধতি ব্যবহার করেছেন তাদের চারা ভালো আছে। যারা সাধারণ নিয়মে চারা তৈরি করেছেন তাদের চারা ক্ষতির শিকার হয়েছে।’

একই পাড়ার কয়েকজন কৃষক আধুনিক পদ্ধতি ব্যবহার করেননি। ফলে তাদের বীজতলা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এমনই একজন ক্ষতিগ্রস্ত কৃষক ফজলুল হক বলেন, ‘গেল কয়েক বছরের মধ্যে এবছরই সবচেয়ে বেশি শীত পড়েছে। কুয়াশাও ছিল বেশি। ফলে আমার মতো অনেক কৃষকের বীজতলা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এখন কাঙ্ক্ষিত পরিমাণ জমিতে ধান আবাদ করতে হলে চারা কেনা ছাড়া কোনো উপায় নেই। আধুনিক পদ্ধতি গ্রহণ না করে এখন আফসোস ছাড়া তো আর কিছুই করার নেই।’

চারা সংকটে পড়েত পারেন মহেরপুরের কৃষকরা

এ প্রসঙ্গে মেহেরপুর জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ-পরিচালক ড. আখতারুজ্জামান বলেন, ‘নির্দিষ্ট সময়ে বীজতলা তৈরি ও ধানের বীজ বপন করতে সব সময় কৃষকদের পরামর্শ দেওয়া হয়। অন্যদিকে বীজতলা রক্ষার জন্য পলিথিন দিয়ে ঢেকে দেওয়া এবং নির্দিষ্ট সময়ে পানি দেওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করা ছাড়া চারা তৈরির কোনো উপায় নেই। এ বিষয়ে চাষিদের সচেতনতা বৃদ্ধি পাচ্ছে। সব চাষি যদি আধুনিক পদ্ধতি ব্যবহার করেন তাহলে চারা ক্ষতিগ্রস্ত হবে না।’