বিনা টিকিটের স্টেশন দেবী চৌধুরাণী-অন্নদানগর
রংপুরের পীরগাছায় ব্রিটিশ আমলে নির্মিত দুইটি রেলস্টেশন দীর্ঘদিন থেকে বন্ধ থাকায় এখন গোচারণ ভূমিতে পরিণত হয়েছে। রেলস্টেশন দুটিতে ট্রেন নিয়মিত থামে। যাত্রীরা ওঠানামা করে। কিন্তু রেলস্টেশন মাস্টারের কক্ষে ঝুলছে তালা। নেই স্টেশন মাস্টারসহ কোনো জনবল। প্রতিদিন ৬টি ট্রেন যাত্রা বিরতি করলেও যাত্রীদের টিকিট কাটতে হয় না।
রোববার (১৮ জানুয়ারি) রংপুরের পীরগাছা উপজেলার অন্নদানগর ও দেবী চৌধুরাণী রেলস্টেশনে গিয়ে এমন চিত্র দেখা গেছে।
সরেজমিনে দেখা গেছে, জরাজীর্ণ স্টেশন দুটির ভবনে ঝুলছে তালা। জনবল না থাকায় স্টেশনের সর্বত্র ময়লা-আবর্জনার স্তূপ জমে আছে। স্টেশনের রেল লাইন ঘেঁষে গরু বেঁধে রাখা হয়েছে। টিকিট কাটার ব্যবস্থা নেই। তাই যাত্রীরা বিনা টিকিটেই ট্রেনে উঠছে। শুধু টিকিট নয়, বুকিং ছাড়া মালামালও পরিবহন করা হচ্ছে।
স্থানীয় ও লালমনিরহাট বিভাগীয় রেলওয়ে অফিস সূত্রে জানা গেছে, জনবল সংকটের কারণে প্রায় ১০ বছর আগে স্টেশন দুটির কার্যক্রম বন্ধ করে দেয়া হয়। স্টেশনের কার্যক্রম বন্ধ থাকলেও প্রতিদিন ওই রেলপথে ১৪টি ট্রেন (আপ ও ডাউন) যাতায়াত করে। এর মধ্যে ৬টি ট্রেন নিয়মিত থামে। গড়ে প্রতিদিন দুই শতাধিক যাত্রী ওঠানামা করে। কিন্তু টিকিট বিক্রির কোনো ব্যবস্থা নেই।
অন্নদানগর স্টেশন এলাকার বাসিন্দা আব্দুস ছালাম বার্তা২৪.কমকে জানান, স্টেশনটি বন্ধ থাকায় গোচারণ ভূমিতে পরিণত হয়েছে। দেখার কেউ না থাকায় স্টেশন এলাকায় যত্রতত্র গরু-ছাগল বেঁধে রাখা হয়। এতে যেকোনো সময় বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটতে পারে।
দেবী চৌধুরাণী স্টেশন এলাকার সুজন মিয়া বার্তা২৪.কমকে জানান, স্টেশনটি দীর্ঘদিন থেকে বন্ধ থাকায় মাদকসেবীদের আড্ডাস্থলে পরিণত হয়েছে।
পীরগাছা রেলওয়ে স্টেশনের স্টেশন মাস্টার সামসুজ্জোহা বার্তা২৪.কমকে বলেন, ‘অন্নদানগর ও দেবী চৌধুরাণী স্টেশন বন্ধ থাকায় পীরগাছা স্টেশনে চাপ বৃদ্ধি পেয়েছে। এখানে একটি ট্রেন দীর্ঘক্ষণ দাঁড় করিয়ে রেখে অন্য ট্রেন পার (ক্রসিং) করে দিতে হচ্ছে। এতে নিয়মিত ট্রেনের সিডিউল বিপর্যয় হচ্ছে। ফলে ভোগান্তিতে পড়ছে যাত্রী সাধারণ।
পশ্চিমাঞ্চল রেলওয়ের লালমনিরহাট বিভাগীয় কার্যালয়ের ম্যানেজার শফিকুর রহমান শফিক বার্তা২৪.কমকে জানান, লোকবল না থাকায় স্টেশনগুলো চালু করা সম্ভব হচ্ছে না। তবে লোকবল নিয়োগের প্রক্রিয়া চলছে। নিয়োগ প্রক্রিয়া শেষ হলে আবার স্টেশনগুলো চালু করা হবে।