পীরগাছায় সড়কের নির্মাণ কাজ ফেলে ঠিকাদার উধাও!

  • আমিনুল ইসলাম জুয়েল, উপজেলা করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, পীরগাছা (রংপুর)
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

সংস্কারের নামে সড়কে এভাবে বালু ফেলে রাখা হয়েছে/ছবি: বার্তা২৪.কম

সংস্কারের নামে সড়কে এভাবে বালু ফেলে রাখা হয়েছে/ছবি: বার্তা২৪.কম

রংপুরের পীরগাছা উপজেলার তিনটি সড়কের সংস্কার কাজ শেষ না করেই ঠিকাদারের লোকজন উধাও হয়ে গেছে। দুইটি সড়ক খুঁড়ে কিছু অংশে শুধুমাত্র বালু ফেলা হয়েছে। আর একটি সড়কের নির্মাণ কাজ অর্ধেক শেষ হয়েছে। ঠিকাদারের গাফিলতির কারণে প্রায় এক বছর ধরে এ অবস্থায় পড়ে আছে সড়ক দুটি।

সোমবার (২৭ জানুয়ারি) সরেজমিনে দেখা যায়, সড়ক খুঁড়ে বালুর স্তূপ ও ইট ফেলে রাখায় সড়কগুলো চলাচলের অনুপযোগী হয়ে মানুষের দুর্ভোগ চরমে পৌঁছেছে।

বিজ্ঞাপন

এলজিইডি সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার পারুল ইউনিয়ন পরিষদ হতে চন্ডিপুর পর্যন্ত সড়কে ২.৯ কিলোমিটার, উপজেলা পরিষদ থেকে কান্দি ইউনিয়ন পরিষদ সড়কের ১.৮৬ কিলোমিটার, ইটাকুমারী বাজার-কালিগঞ্জ সড়ক থেকে ইটাকুমারী ইউনিয়ন পরিষদ পর্যন্ত সড়কে ১.৭ কিলোমিটার পাকাকরণের জন্য একটি প্যাকেজে দরপত্র আহ্বান করা হয়। ওই দরপত্রে সর্বনিম্ন দরদাতা হিসেবে চার কোটি ৮০ লাখ টাকায় কাজ পায় ঢাকার ডলি কনস্ট্রাকশন লিমিটেড।

২০১৯ সালের ১২ নভেম্বর মেয়াদ শেষ হলেও কাজ শেষ করতে পারেনি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানটি। পরে চলতি বছরের ২৮ জানুয়ারি পর্যন্ত সময় বর্ধিত করা হয়।

বিজ্ঞাপন
অর্ধেক কাজ ফেলে রেখে পালিয়ে গেছে ঠিকাদার

প্রথম থেকে বর্ধিত সময় পর্যন্ত উপজেলা পরিষদ থেকে কান্দি ইউনিয়ন পরিষদ সড়ক ও ইটাকুমারী বাজার-কালিগঞ্জ সড়ক থেকে ইটাকুমারী ইউনিয়ন পরিষদ সড়কে ২০ শতাংশ কাজও শেষ করেনি প্রতিষ্ঠানটি। আর পারুল ইউনিয়ন পরিষদ থেকে চন্ডিপুর পর্যন্ত সড়কে প্রায় ৫০ শতাংশ কাজ করা হয়েছে।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, তিনটি সড়কেই সংশ্লিষ্ট ইউনিয়ন পরিষদে যাতায়াতের জন্য জনগুরুত্বপূর্ণ সড়ক। কার্যাদেশ পেয়েই ডলি কনস্ট্রাকশন সড়কগুলো খুঁড়ে ফেলে। পরে সড়কের পাশের জমির মালিকদের সঙ্গে চুক্তি করে শ্যালো মেশিন দিয়ে বালু তুলে সড়কে দেওয়া শুরু করে। এ নিয়ে স্থানীয়দের সঙ্গে দ্বন্দ্বে জড়িয়ে পড়ে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানটির কর্মকর্তারা। পরবর্তীতে নতুন করে আর কোন কাজ করা হয়নি। ফলে এক বছরেরও বেশি সময় ধরে সড়ক তিনটি চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে।

উপজেলার কান্দি ইউপি চেয়ারম্যান নজরুল ইসলাম খাঁন বার্তা২৪.কমকে বলেন, ‘জনগুরুত্বপূর্ণ তিনটি সড়ক খুঁড়ে রাখায় মানুষ দুর্ভোগে পড়েছে। জনদুর্ভোগের বিষয়টি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে অবগত করা হলেও কোনো ব্যবস্থা নেয়া হয়নি।’

এ বিষয়ে ডলি কনস্ট্রাকশন লিমিটেডের ম্যানেজার মোবারক হোসেন বার্তা২৪.কমকে বলেন, ‘সড়ক তিনটির কাজ করার জন্য এক ঠিকাদারকে সাব কন্ট্রাক্ট দেওয়া হয়েছিল। তারা ঠিকভাবে কাজ করেনি। পরে ঠিকাদার পরিবর্তন করে আঁখি কনস্ট্রাকশন নামে একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে কাজ করার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।’

পীরগাছা উপজেলা প্রকৌশলী কার্যালয়ের সার্ভেয়ার রফিকুল ইসলাম বার্তা২৪.কমকে বলেন, ‘ওই ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানটি পারুল ইউনিয়ন পরিষদ থেকে চন্ডিপুর পর্যন্ত সড়কে কাজ করছে। এক মাসের মধ্যে অন্য সড়কের কাজ করবে।’

পীরগাছা উপজেলা প্রকৌশলী মনিরুল ইসলাম বার্তা২৪.কমকে বলেন, ‘নির্দিষ্ট সময়ে কাজ শেষ না হওয়ায় সময় বৃদ্ধি করা হয়। তারপরও ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান কাজ শেষ করেনি।’

এলজিইডির রংপুরের নির্বাহী প্রকৌশলী রেজাউল করিম বার্তা২৪.কমকে বলেন, ‘পীরগাছার সড়ক তিনটির কাজ নির্দিষ্ট সময়ে শেষ না হওয়ায় ঠিকাদারকে বার বার শোকজ করা হয়েছে। কাজ শেষ করার জন্য তারা আবারো সময় বৃদ্ধির আবেদন করেছে।’