ইলিশে ভরপুর লক্ষ্মীপুরের হাট-বাজার
লক্ষ্মীপুরের মেঘনা নদীতে জেলেদের জালে প্রচুর ইলিশ ধরা পড়ছে। এতে জেলার হাটবাজারগুলো ইলিশে ভরপুর হয়ে উঠেছে। গত কয়েকদিন ধরে সকাল থেকে রাত পর্যন্ত জেলার মাছবাজারগুলোতে জমজমাট বেচাকেনা দেখা যায়। বর্ষায় ভরা মৌসুমেও এতো ইলিশ জালে ওঠেনি। তবে জাটকা সংরক্ষণে প্রশাসনিক তৎপরতার কারণেই ঝাঁকে ঝাঁকে ইলিশ ধরা পড়ছে বলে জানিয়েছে সংশ্লিষ্টরা।
সোমবার (২৭ জানুয়ারি) সকালে জেলার কমলনগরের মতিরহাট ও মাতাব্বরহাট মাছঘাটে ঝুড়ি ভর্তি ইলিশ নিয়ে মেঘনা থেকে ফিরতে দেখা যায় জেলেদের। ঘাটে বেচাকেনাও ছিল জমজমাট। ঘাটে জেলেদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, বর্ষায় ভরা মৌসুম থাকলেও জালে ইলিশ মাছ খুব কমা ধরা পড়েছে। এখন শীতের শেষের দিকে এসে প্রচুর ইলিশ ধরা পড়ছে। এরমধ্যে বেশিরভাগই বড় ইলিশ।
আড়তদাররা জানান, এখন মৌসুম না হলেও জেলেদের জালে প্রচুর ইলিশ ধরা পড়ছে। এতে আগের চেয়ে পাইকারি ও খুচরা বাজারে ইলিশের দাম অনেক কমেছে। এক কেজি ওজনের ইলিশ বিক্রি হচ্ছে প্রায় ৭০০-৮৫০ টাকায়। ৬০০-৭০০ গ্রামের ইলিশ বিক্রি হচ্ছে ৫০০-৬০০ টাকায়। ৪০০-৫০০ গ্রাম ওজনের ইলিশ বিক্রি হচ্ছে ৩৫০-৪০০ টাকায়। যা গত বর্ষা মৌসুমে আরও বেশি দামে বিক্রি করতে হয়েছে।
এদিকে, ইলিশকে কেন্দ্র করে শীতের রাতেও লক্ষ্মীপুর সদরের মজুচৌধুরীর হাট, করাতির হাট, রামগতি, কমলনগর এবং রায়পুরের মাছঘাটসহ জেলার মাছবাজারগুলোতে ইলিশের ক্রেতা-বিক্রেতার ভিড় দেখা যায়। এ সময় প্রচুর ইলিশ ধরা পড়ায় জেলে পরিবারগুলোতে উৎসব বিরাজ করছে।
সূত্র জানায়, রামগতি বাজার থেকে রায়পুর এবং চাঁদপুরের হাইমচর উপজেলার সীমানা পর্যন্ত লক্ষ্মীপুরে প্রায় ৭০ কিলোমিটার এলাকায় ছোট বড় ৩০টি মাছ বিক্রির ঘাট রয়েছে। এ জেলায় প্রায় ৬২ হাজার জেলে রয়েছে। এরমধ্যে প্রায় ৫০ হাজার জেলের কার্ড আছে।
মতিরহাটের জেলে রিপন জানান, সাধারণত শীতকালে নদীতে অন্য মাছ বেশি পাওয়া যায়। কিন্তু এ বছর ব্যতিক্রম। এবার অন্য মাছের চেয়ে ইলিশ বেশি ধরা পড়ছে। গত পাঁচ বছরেও শীতকালে এতো ইলিশ ধরা পড়তে দেখেননি তিনি।
মতিরহাট ঘাটের সভাপতি ও ইউপি সদস্য মেহেদী হাসান লিটন জানান, মতিরহাট ঘাটে প্রতিদিন কয়েক হাজার মণ ইলিশ সরবরাহ হচ্ছে। ইলিশ বেশি হওয়ায় এখন দামও কম। এখান থেকে অনেক ব্যবসায়ী ইলিশ কিনে নিয়ে ঢাকাসহ বিভিন্ন এলাকায় বিক্রি করেন।
লক্ষ্মীপুর জেলা মৎস্য কর্মকর্তা মোহাম্মদ বিল্লাল হোসেন জানান, জাটকা সংরক্ষণে প্রশাসনিক তৎপরতার কারণে ইলিশ পূর্ণাঙ্গ রূপ পেয়েছে। এতে জেলেদের জালে ঝাঁকে ঝাঁকে ইলিশ ধরা পড়ছে। জাটকা নিধন বন্ধ ও জেলেরা সচেতন হলে সারাবছরই ইলিশ পাওয়া যাবে।