শিক্ষা সফরে শিশুর মৃত্যু, কান্না থামছে না মা-বাবার

  • ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, লক্ষ্মীপুর
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

ফৌজিয়া আরেফিন সামিউন, ছবি: সংগৃহীত

ফৌজিয়া আরেফিন সামিউন, ছবি: সংগৃহীত

কুমিল্লার ম্যাজিক প্যারাডাইস পার্কে শিক্ষা সফরে গিয়ে লক্ষ্মীপুর ইলেভেন কেয়ার একাডেমীর শিক্ষার্থী ফৌজিয়া আরেফিন সামিউন (৮) মারা গেছে। তার মৃত্যুতে কান্না থামছে না মা-বাবাসহ আত্মীয়-স্বজনদের। এদিকে অ্যাম্বুলেন্সে শিশুটির মৃতদেহ রেখে পালিয়ে গেছে শিক্ষকরা।

বৃহস্পতিবার (৩০ জানুয়ারি) বিকেলে প্যারাডাইস পার্কে হঠাৎ অসুস্থ হলে সামিউনকে কুমিল্লার একটি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়, সেখানেই তার মৃত্যু হয়। কিন্তু পরিবারের অভিযোগ, শিক্ষকদের অসচেতনতা ও দায়িত্বে অবহেলার কারণেই শিশুটি মারা গেছে। তাদের দাবি, তাকে যথাসময়ে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়নি।

বিজ্ঞাপন

শিক্ষকদের সূত্রে জানা গেছে, বনভোজনের সময় প্যারাডাইস পার্কের একটি পুলে হাঁটু পরিমাণ পানিতে সামিউন অন্য শিক্ষার্থীদের সঙ্গে খেলাধুলা করছিল। পরে ঠাণ্ডা লেগে তার খিঁচুনি দেখা দেয়, এসময় সে বমিও করে। পরে তাকে স্থানীয় একটি হাসপাতালে নিয়ে গেলে সেখানে তার মৃত্যু হয়।

সামিউন লক্ষ্মীপুর পৌরসভার ৭ নম্বর ওয়ার্ড সমসেরাবাদ এলাকার বাসিন্দা ও কমলনগর উপজেলার তোরাবগঞ্জ ইউনিয়ন পরিষদের সচিব গিয়াস উদ্দিনের মেয়ে। সে লক্ষ্মীপুর ইলেভেন কেয়ার একাডেমির দ্বিতীয় শ্রেণির ছাত্রী।

বিজ্ঞাপন

বিদ্যালয় সূত্র জানায়, বৃহস্পতিবার সকালে পূর্ব ঘোষিত বনভোজনের উদ্দেশ্যে কুমিল্লার ম্যাজিক প্যারাডাইস পার্কে যান প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা। সকালে সামিউনকে শিক্ষকদের দায়িত্বে বনভোজনের জন্য রেখে যান তার বাবা। অন্য শিক্ষার্থীদের অভিভাবকরা বনভোজনে গেলেও সামিউনের মা-বাবা কেউই যাননি। আর সামিউনের অন্যকোনো সহপাঠিও বনভোজনে যায়নি। পরে বনভোজন স্থলে অন্যান্যদের সঙ্গে সেও খেলা করছিল একপর্যায়ে শিশুরা পার্কের একটি পুলে হাঁটু পরিমাণ পানিতে খেলাধুলা করে। কিছুক্ষণ পরই ঠাণ্ডাজনিত কারণে খিঁচুনি এলে সামিউন বমি করে। এসময় অসুস্থ অবস্থায় উদ্ধার করে স্থানীয় একটি হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

এদিকে সামিউনের বাবা গিয়াস উদ্দিন অভিযোগ করে বলেন, শিক্ষকদের অবহেলার কারণেই আমার মেয়ের মৃত্যু হয়েছে। মেয়েকে একা ছাড়তে অনিচ্ছা থাকা সত্ত্বেও শিক্ষকরা দায়িত্ব নেওয়ায় বনভোজনে যেতে দিতে আমি বাধ্য হয়েছি। এ ঘটনায় মামলা করবেন বলে জানিয়েছেন তিনি।

ইলেভেন কেয়ার একাডেমীর অধ্যক্ষ রিয়াজুল ইসলাম সাংবাদিকদের বলেন, শিশু সামিউনের মৃত্যু সবাইকে মর্মাহত করেছে। এটি খুবই বেদনাদায়ক। মৃত্যুটি মেনে নেওয়াও খুব কষ্টদায়ক। তার দাবি, ঠাণ্ডা লেগে সামিউন অসুস্থ হয়ে গেলে তাকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। ঠাণ্ডাজনিত কারণেই শিশুটির মৃত্যু হয়েছে। বনভোজনে শিশুদের প্রতি দায়িত্বে তাদের কোনো অবহেলা ছিল না।

লক্ষ্মীপুর সদর মডেল থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) প্রেমানন্দ বলেন, শিশুটির মৃত্যুর খবর পেয়ে তার বাড়িতে এসেছি। এখানে বিদ্যালয়ের শিক্ষকরা উপস্থিত ছিল বলে শুনেছি। পুলিশের আসতে দেখে তারা পালিয়ে যায়৷ লিখিত অভিযোগ পেলে তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।