‘ঘুষ’ ছাড়া বিদ্যুৎ মিলছে না
রংপুরের পীরগাছা উপজেলার দাদন গুচ্ছগ্রামে ৩০টি পরিবারের বসতি। ৬ মাস আগে জানানো হয় গুচ্ছগ্রামের বাসিন্দাদের জন্য বিদ্যুৎ সংযোগ দেয়া হবে। তবে তার জন্য দিতে হবে জনপ্রতি ৪ হাজার টাকা। গুচ্ছগ্রামের বাসিন্দারা বিদ্যুৎ সংযোগ পেতে একত্রিত হয়ে ৩৫ হাজার টাকা তুলে দেয় স্থানীয় দালালদের হাতে। এরপর শুরু হয় বিদ্যুৎ লাইন নির্মাণের কাজ।
লাইন নির্মাণ শেষে দাদন গুচ্ছগ্রামের গ্রাহকদের ওয়ারিং করতে বলা হয়। তিন মাস আগে বৈদ্যুতিক খুঁটি থেকে প্রতিটি ঘরে কেবল (সার্ভিস ড্রপ) লাগানো হয়েছে। কিন্তু ঘুষের বাকি টাকা না দেয়ায় তাদের বিদ্যুৎ সংযোগ মিলছে না। জনপ্রতি ৪ হাজার টাকা পূর্ণ পরিশোধ সাপেক্ষে তাদের ঘরে মিটার লাগানো হবে বলে জানিয়ে দিয়েছে দালালরা। এ বিষয়ে ওই গুচ্ছগ্রামের বাসিন্দারা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে লিখিত অভিযোগ করেছে।
মঙ্গলবার (৪ ফেব্রুয়ারি) খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, উপজেলার অন্যান্য গুচ্ছগ্রামের বাসিন্দাদের সরকারি খরচে বিদ্যুৎ সংযোগ দেয়ার জন্য উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। কিন্তু দাদন গুচ্ছগ্রামে বিদ্যুৎ সংযোগের বিষয়ে সরকারিভাবে কোনো পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়নি। ফলে দালালরা ওই সুযোগটি গ্রহণ করেছে। তারা গুচ্ছগ্রামের গ্রাহকদের কাছ থেকে মোটা অংকের অর্থ হাতিয়ে নেয়ার পায়তারা করছে।
দাদন গুচ্ছগ্রামের বাসিন্দা আব্দুল হান্নান বার্তা২৪.কমকে জানান, গুচ্ছগ্রামের ৩০টি পরিবারের কাছেই ৪ হাজার টাকা করে দাবি করা হয়েছে। দালালরা লাইন দেয়ার কথা বলে টাকা নিয়েছে। এখন লাইন সংযোগ দিচ্ছে না।
রংপুর পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-১ এর পীরগাছা জোনাল অফিসের এজিএম মঞ্জুরুল ইসলাম বার্তা২৪.কমকে বলেন, ‘ঠিকাদার নতুন লাইন নির্মাণ শেষ করলে আমরা শুধু সংযোগ প্রদান করি। এ সময় গ্রাহকদের কাছ থেকে মাত্র ৪৫০ টাকা করে নেয়া হয়। নির্ধারিত টাকার অতিরিক্ত প্রদান না করতে গ্রাহক পর্যায়ে সচেতনতা তৈরির জন্য মাইকিং করা হয়েছে। লাগানো হয়েছে পোস্টার। লিফলেটও বিতরণ করা হয়েছে।’
রংপুর পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-১ পীরগাছা জোনাল অফিসের ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজার (ডিজিএম) আব্দুল জলিল বার্তা২৪.কমকে বলেন, ‘এসব অনিয়ম ও দুর্নীতি করছে ঠিকাদার ও তাদের দালালরা। এ কাজে স্থানীয় অনেকে সহযোগিতা করছে। পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির কোনো কর্মকর্তা ও কর্মচারী এসব দুর্নীতির সঙ্গে জড়িত নয়।’
পীরগাছা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জেসমীন প্রধান বার্তা২৪.কমকে জানান, দাদন গুচ্ছগ্রামের বাসিন্দাদের কাছ থেকে অতিরিক্ত টাকা নেয়ার বিষয়টি তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।