আত্মসাতের ৭ কোটি টাকা ফেরত দিলেন ব্যাংক কর্মকর্তা
নোয়াখালীতে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) মামলায় গ্রেফতার হয়ে ফেনী ঢাকা ব্যাংকের ২৬ গ্রাহকের ৭ কোটি ৫ লাখ ৭৯ হাজার টাকা ব্যাংকে ফেরত দিলেন আত্মসাতকারী কর্মকর্তা।
নোয়াখালী দুদক অফিস সূত্র জানায়, ঢাকা ব্যাংক লিমিটেডের ফেনী শাখার ক্যাশ ইনচার্জ-কাম-প্রিন্সিপাল অফিসার ও ক্রেডিট ইনচার্জ ছিলেন গোলাম সাঈদ রাশেব। তিনি ব্যাংকের ক্যাশ ইনচার্জ আজিম খন্দকারের সহযোগিতায় বিভিন্ন সময় চেক জালিয়াতি ও ব্যাংকের সফটওয়্যার ত্রুটির সুযোগ নিয়ে ৫ জন গ্রাহকের ৮টি হিসাবে ৫২টি ট্রানজেকশনসহ ২৬ জন গ্রাহকের ৭ কোটি ৫ লাখ ৬৯ হাজার টাকা আত্মসাৎ করেন।
এ আত্মসাতের কথা জানাজানি হলে ব্যাংকের ম্যানেজার গোলাম আক্তার হোসেন ২০১৯ সালের ১৯ মার্চ ফেনী মডেল থানায় ৮ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগ এনে গোলাম সাঈদ রাশেবের বিরুদ্ধে ফেনী মডেল থানায় মামলা করেন। পরবর্তীকালে এ মামলা আদালতের মাধ্যমে দুদকের নিকট তদন্তের জন্য দীর্ঘ তদন্তের পর দুদক গোলাম সাঈদ রাশেবকে গ্রেফতার করে আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি রেকর্ড করান।
১৬৪ ধারায় দেয়া স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে বলেন, কয়েকজন গ্রাহকের হিসাব থেকে (বিশেষ করে প্রবাসী) অবৈধ চেকের মাধ্যমে বিভিন্ন দফায় ৭ কোটি ৫ লাখ ৬৯ হাজার টাকা উত্তোলন করে জনৈক আজিম খন্দকারের সঙ্গে ব্যবসায় জড়িয়ে পড়েন।
এ মামলার ধারাবাহিকতায় গোলাম সাঈদ রাশেবের স্ত্রী নাসরিন আক্তার ঢাকা ব্যাংকের ম্যানেজারের নিকট আবেদন করেন, তার স্বামী জামিনে মুক্তি পেলে তারা পারিবারিকভাবে ব্যাংকের আত্মসাৎকৃত সমুদয় টাকা ফেরত দেবেন এবং সে তার নামীয় ঢাকা ব্যাংকের অ্যাকাউন্ট থেকে ২ কোটি ৪০ লাখ টাকার ১টি পে-অর্ডার, ২০ লাখ টাকার ১টি চেক দুদকের মাধ্যমে ব্যাংকে প্রদান করেন।
তিনি জানান, তার স্বামী জামিনে মুক্তি পেলে বাকি টাকা ফেরত দেবেন। সে শর্ত অনুযায়ী আদালতে তার জামিনের আবেদন করলে আত্মসাৎকৃত টাকা ফেরত দেয়ার শর্তে আদালত তার জামিন মঞ্জুর করেন। জামিনে আসার পর নোয়াখালী দুদক ৭ কোটি ৫ লাখ ৬৯ হাজার টাকা উদ্ধার করে ব্যাংকে জমা দেয়।
নোয়াখালী দুদকের উপ-পরিচালক জাহাঙ্গীর আলম এ ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, ব্যাংকের টাকা আত্মসাৎ করে পরে ফেরত দিলেও গোলাম সাঈদ রাশেব ব্যবসায়ী আজিম খন্দকার, ক্যাশ অফিসার আবদুস সামাদ শাস্তিযোগ্য অপরাধ করেছেন। তাই তারা টাকা ফেরত দিলেও দুর্নীতি দমন আইনে তাদের বিচার চলতে বাধা নেই।