পীরগাছায় বোরো চারার তীব্র সংকটে বিপাকে কৃষক

  • উপজেলা করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম. রংপর (পীরগাছা)
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

পীরগাছায় বোরো চারার তীব্র সংকটে বিপাকে কৃষক

পীরগাছায় বোরো চারার তীব্র সংকটে বিপাকে কৃষক

রংপুরের পীরগাছায় বোরো চারার তীব্র সংকট দেখা দিয়েছে। বেশীর ভাগ বীজতলার চারা শৈত্য প্রবাহ ও ঘন কুয়াশার কারণে কোল্ড ইনজুরির কবলে পড়ে মরে গেছে। কৃষকেরা চড়া দামেও বোরো চারা পাচ্ছেন না। ফলে বোরো রোপণের ভরা মৌসুমে কৃষকরা চারা সংকটে বিপাকে পড়েছেন।

সোমবার (১৭ ফেব্রুয়ারি) উপজেলার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, কৃষকরা বোরো রোপণের জন্য জমি তৈরি করছেন। কিন্তু চারা সংকটে তারা বোরো আবাদ নিয়ে বিপাকে পড়েছেন। অনেক কৃষক চারার অভাবে বোরো রোপণ করতে পারছেন না।

বিজ্ঞাপন

কৃষকদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, অন্যান্য বছরের তুলনায় এবার হাটে চারা কম উঠছে। ক্রেতা বেশী হওয়ায় বিক্রেতারা চারার দাম বাড়িয়ে দিয়েছে। গত বছর বোরো ২৯ জাতের চারা দুই টাকা আঁটি বিক্রি করা হয়েছে। এ বছর সেই চারা ৬-৮ টাকা আঁটি বিক্রি হচ্ছে। তবুও কাঙ্ক্ষিত চারা মিলছে না। ফলে কৃষকরা দিশেহারা হয়ে পড়েছেন।

কৃষকরা জানান, হাইব্রিড এবং ব্রি. -২৮ ও ব্রি.-২৯ জাতের ধানের বীজতলায় চারা বড় করতে ৪০ থেকে ৪৫ দিন সময় লাগে। তারপর বীজতলা থেকে চারা তুলে জমিতে রোপণ করতে হয়। কিন্তু যে সকল বীজতলার চারা নষ্ট হয়ে গেছে, সে সব বীজতলায় নতুন করে চারা তৈরি করলেও বোরো আবাদ দেরি হয়ে যাবে। ফলে ধানের ফলন কম হবে। এতে করে কৃষকরা চরম ক্ষতির সম্মুখীন হবেন।

বিজ্ঞাপন

কান্দিরহাটে বোরো চারা কিনতে আসা আফছার আলী বলেন, ‘২২ শতাংশ জমিতে বোরো রোপণ করতে এক হাজার ৪০০ টাকা দিয়ে চারা কিনতে হলো। চারা না পেলে তৈরি জমি শুকিয়ে যাবে।’

পাওটানা হাটে চারা কিনতে আসা মাঈদুল ইসলাম বলেন, ‘শৈত্য প্রবাহ ও ঘন কুয়াশায় বীজতলার চারায় পচন ধরে নষ্ট হয়েছে। এখন ভাল মানের চারা পাওয়া যাচ্ছে না। বাজারে যে চারা পাওয়া যাচ্ছে মান ভাল না হলেও দাম বেশী। তাই বোরো আবাদ নিয়ে চিন্তায় আছি।’

উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অফিস সুত্রে জানা যায়, চলতি বোরো মৌসুমে পীরগাছা উপজেলায় সাড়ে ১৬ হাজার হেক্টর জমিতে বোরো চাষাবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। এ জন্য ৮০০ হেক্টর জমিতে বীজতলা করা হয়। কিন্তু শৈত্য প্রবাহ ও ঘন কুয়াশায় অনেক বীজতলার চারা নষ্ট হয়ে যায়।

উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা লোকমান আলম বলেন, ‘অনেক কৃষকের বীজতলার জন্য জমি নেই। তাই তারা প্রতিবছর অন্যের চারা ক্রয় করেই রোপণ করেন। এ সময় বোরো মৌসুমে হাট-বাজারে চারার চাহিদা বেড়ে যায়। এ জন্য সাময়িক সংকট দেখা দিয়েছে। তবে শেষ পর্যন্ত চারা সংকট থাকবে না।’

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা শামীমুর রহমান বলেন, ‘বোরো রোপণের এখনও যথেষ্ট সময় রয়েছে। তাছাড়া ইতিমধ্যে বেশীর ভাগ জমিতে চারা রোপণ করা হয়েছে।’