এবার দৌলতদিয়ায় আরেক যৌনকর্মীর জানাজা
দীর্ঘদিনের প্রথা ভেঙে এবার তৃতীয়বারের মতো দেশের বৃহত্তম দৌলতদিয়া পতিতাপল্লির যৌনকর্মী পারভীন বেগমের (৬৫) নামাজে জানাজা সম্পন্ন হয়েছে। জানাজা পড়িয়েছেন ঘাট থানা মসজিদের ইমাম আবু বক্কর সিদ্দিক।
শনিবার (২২ ফেব্রুয়ারি) বেলা ২টায় জানাজা শেষে দৌলতদিয়া যৌনপল্লি সংলগ্ন কবরস্থানে তার দাফন সম্পন্ন করা হয়। বার্ধক্যজনিত কারণে তিনি শনিবার রাত সাড়ে ১২টার দিকে পল্লিতে মারা যান।
তবে এবার দ্বিতীয় যৌনকর্মী রিনা বেগমের জানাজার নামাজ পড়ানো গোয়ালন্দ থানা মসজিদের ইমাম আবু বক্কর সিদ্দিকিই এই যৌনকর্মীর জানাজা পড়ান।
এর আগে প্রথম যৌনকর্মী হামিদা বেগমের জানাজার নামাজ পড়ান দৌলতদিয়া রেলস্টেশন মসজিদের ইমাম গোলাম মোস্তফা। এ নিয়ে দেশে-বিদেশে আলোচনা-সমালোচনা এবং স্থানীয় সামাজিক প্রতিবন্ধকতার কারণে আর কোনো যৌনকর্মীর জানাজা নামাজ না পড়ানোর ঘোষণা দিয়েছিলেন ওই ইমাম। তারই প্রেক্ষিতে গোয়ালন্দ ঘাট থানার ওসির অনুরোধে থানা মসজিদের ইমাম আবু বক্কর সিদ্দিক পরপর দুই যৌনকর্মীর জানাজা নামাজ পড়ান।
জানাজায় উপস্থিত ছিলেন এএসপি (সার্কেল) সদর মো: শরিফ উজ-জামান, গোয়ালন্দ ঘাট থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আশিকুর রহমান, গোয়ালন্দ ওসি (তদন্ত) আব্দুল্লাহ আল তায়াবির, দৌলতদিয়া ইউপি সদস্য জলিল ফকিরসহ স্থানীয় প্রায় দুই শতাধিক মুসল্লি।
উল্লেখ্য, দীর্ঘদিন ধরে যৌনকর্মীরা মারা গেলে তাদের নদীতে ভাসিয়ে দেওয়া হতো অথবা মাটির নিচে পুতে রাখা হতো। বিষষটি গোয়ালন্দ ঘাট থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আশিকুর রহমানের নজরে আসলে তিনি সব বাধা পেরিয়ে ২ ফেব্রুয়ারি হামিদা বেগমের প্রথম জানাজা সম্পন্ন করান। এরপর ২০ ফেব্রুয়ারি দ্বিতীয় জানাজা যৌনকর্মী রিনা বেগম ও সর্বশেষ শনিবার (২২ ফেব্রুয়ারি) যৌনকর্মী পারভীনের জানাজার নামাজ পড়ানোর সব ব্যবস্থা গ্রহণ করেন।
একজন পুলিশ কর্মকর্তার সমাজ পরিবর্তনের এই মহতি উদ্যোগকে দেশ-বিদেশের বিভিন্ন গণমাধ্যম ফলাও করে প্রচার করেছেন। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমসহ সব জায়গায় প্রশংসায় ভাসছেন তিনি।