গ্যাস সংযোগ থাকলেই বেশি ভাড়া, ওঠার পর ভিন্ন চিত্র!
রাজধানী ঢাকার সাভার ও আশুলিয়া এলাকায় গ্যাসের সংযোগ না দিয়েও বাড়তি অর্থ আদায়ের অভিযোগ পাওয়া গেছে বাড়ির মালিকদের বিরুদ্ধে। এছাড়া যারা গ্যাস সংযোগ পাচ্ছেন তাদের অনেকেরই বাড়িতে অবৈধ গ্যাসের সংযোগ নেওয়া হয়েছে। গ্যাস সংযোগ থাকলেই বাড়তি ভাড়া আদায় করা যাচ্ছে এই মর্মেই অবৈধ সংযোগের ব্যবহার বেড়েছে এই এলাকাগুলোতে।
জানা গেছে, শিল্পাঞ্চল হওয়ায় সাধারণত পোশাক শ্রমিকরাই এই এলাকাগুলোতে বাসা ভাড়া নিয়ে থাকেন। মৌখিকভাবে গ্যাস সংযোগ দেওয়ার কথা আগেই বলে রাখেন বাড়ির মালিকরা। তবে বাসায় ওঠার পর দেখা যায় ভিন্ন চিত্র। বাড়িতে গ্যাসের সংযোগ নেই। থাকলেও সেগুলো অবৈধ গ্যাস সংযোগ। যে কারণে কয়েক মাস যেতে না যেতেই সংযোগগুলো বিচ্ছিন্ন করে দেওয়া হয়। গ্যাস সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হলেও বাড়ির মালিকদের ঠিকই গ্যাসের বিল আগের মতোই দিতে হচ্ছে ভাড়াটিয়াদের। এছাড়া, রান্নাবান্নার জন্য গ্যাস সিলিন্ডার ব্যবহারে বাড়তি অর্থ খরচ করতে হচ্ছে ভাড়াটিয়াদের।
আশুলিয়ায় কর্মরত পোশাক শ্রমিক মাসুমার সাথে কথা হলে তিনি বার্তা২৪.কম-কে বলেন, আমরা গ্যাস ও বিদ্যুৎ বিলসহ এক রুমের একটি বাসা ভাড়া নিয়েছি মাসে সাড়ে ৩ হাজার টাকায়। গত দুই মাস যাবৎ গ্যাসের সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দিয়েছে তিতাস গ্যাস কর্তৃপক্ষ। কিন্তু বাসা মালিক বাসা ভাড়া আর কম নেয়নি। বিদ্যুতের প্রি-পেইড মিটারে বিদ্যুৎ বিল বেশি আসে দাবি করে গ্যাসের টাকা আর কম নিলো না।
আরেক শ্রমিক নজরুল বলেন, গ্যাস সংযোগ বিচ্ছিন্ন করার মাস থেকে আমাদের খরচ বেড়েছে মাসে প্রায় দেড় হাজার টাকা। কিন্তু গ্যাস সংযোগ বিচ্ছিন্ন করার পর থেকে গ্যাসের সিলিন্ডার প্রায় ১১’শ টাকায় কিনতে হচ্ছে। তবে বাড়িওয়ালারা এই টাকা আর কম নেন না।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক বাড়িওয়ালার সাথে কথা হলে তিনি বার্তা২৪.কম-কে বলেন, গ্যাস সংযোগ বিচ্ছিন্ন করায় ভাড়া থেকে অনেক বাড়িওয়ালা ৫০০ টাকা কমিয়েছে, আবার অনেক মালিক ভাড়া কমায়নি। কেউ ২০০ টাকাও কমিয়েছে। যখন সরকার বিদ্যুৎ বিল বাড়িয়ে দেয় তখন তো আর আমরা বাড়ি ভাড়া বাড়িয়ে দেই না। গ্যাস সংযোগ বিচ্ছিন্ন হওয়ার সাথেই বাড়ি ভাড়া কমাতে হবে কেন। বৈধ গ্যাস সংযোগ দিলেই এসব সমস্যা কাটিয়ে ওঠা সম্ভব বলেও দাবি করেন তিনি।
এ ব্যাপারে শিল্পাঞ্চল সাভার ও আশুলিয়া ভাড়াটিয়া পরিষদের সভাপতি মো: সারোয়ার হোসেন বলেন, শ্রমিকদের বসবাসের নির্ভরযোগ্য বাসস্থান নিশ্চিত করে পণ্য সামগ্রী সঠিক দামে তাদের কাছে সরবরাহের জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সুদৃষ্টি দেওয়া উচিত। না হলে দিনে দিনে শোষক শ্রেণির শোষণে নিষ্পেষিত হবে শ্রমিকরা।