এখনও অনুদান পায়নি ট্রেন দুর্ঘটনায় নিহত পরিবারগুলো



কাজল সরকার, ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, হবিগঞ্জ
গত বছরের ১২ নভেম্বর কসবা উপজেলায় দুই ট্রেনের মধ্যে সংঘর্ষ হয়

গত বছরের ১২ নভেম্বর কসবা উপজেলায় দুই ট্রেনের মধ্যে সংঘর্ষ হয়

  • Font increase
  • Font Decrease

প্রায় সাড়ে তিন মাস অতিবাহিত হলেও রেলমন্ত্রীর ঘোষিত এক লাখ টাকা এখনও পায়নি ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ভয়াবহ ট্রেন দুর্ঘটনায় নিহতদের পরিবারগুলো। এ অবস্থায় অর্থ সংকটে হতাহতের অনেক পরিবারই মানবেতর জীবন-যাপন করছে। শুধু তাই নয়, আদৌ অনুদানের টাকা পাবেন কি-না তা নিয়েও তাদের মনে দেখা দিয়েছে সংশয়।

জানা যায়, গত বছরের ১২ নভেম্বর ভোররাতে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার কসবা উপজেলার মন্দবাগ স্টেশনের রেল ক্রসিংয়ে ‘উদয়ন এক্সপ্রেস’ ও ‘তূর্ণা নিশীতা ট্রেনে’র মধ্যে ভয়াবহ সংঘর্ষ ঘটে। এতে নারী-শিশুসহ ১৬ জন নিহত ও প্রায় শতাধিক যাত্রী আহত হন। নিহতদের মধ্যে ছিল হবিগঞ্জের নয়জন। দুর্ঘটনার পরদিন সকালে পরিদর্শনে এসে নিহতের প্রত্যেক পরিবারকে এক লাখ টাকা সরকারি অনুদানের ঘোষণা দেন রেলমন্ত্রী নুরুল ইসলাম সুজন। কিন্তু ঘটনার প্রায় সাড়ে তিন মাস অতিবাহিত হলেও মন্ত্রীর ঘোষিত সেই অনুদাদের টাকা এখনও পায়নি নিহতদের পরিবার। এ অবস্থায় বানিয়াচংয়ের নিহত আল আমীন ও আদিবা আক্তারের পরিবারসহ অনেক পরিবারই অর্থ সংঙ্কটে মানবেতর জীবন-যাপন করছে।

এছাড়াও ওই দুর্ঘটনায় আহতদের পরিবারগুলোর অবস্থা আরও নাজুক। একই পরিবারের একাধিক উপার্জনক্ষম ব্যক্তি পঙ্গু হয়ে ঘরে বসে থাকায় পরিবারগুলোতে দেখা দিয়েছে চরম অর্থ সংকট। ফলে একদিকে যেমন খেয়ে না খেয়ে দিন কাটছে তাদের, অপরদিকে নিতে পারছেন না উন্নত চিকিৎসা। এ অবস্থায় আহতদের অনেকই চিরদিনের জন্য পঙ্গুত্ব বরণের দিকে ধাবিত হচ্ছেন। কেউ কেউ আবার ধার-দেনা করে টাকা এনে চিকিৎসার ব্যয়বহন করছেন। ফলে বাড়ছে ঋণের বোঝা।

এ বিষয়ে বানিয়াচং উপজেলার গুণই গ্রামের নিহত আল আমীনের স্ত্রী ফুলবানু বলেন, ‘আমার স্বামী পেশায় একজন রাজমিস্ত্রি ছিলেন। তার রোজগারের আয় দিয়েই চলতো আমাদের সংসার। পরিবারের একমাত্র উপার্জনক্ষম মানুষটিকে হারিয়ে তিন শিশুসন্তান নিয়ে মানবেতর জীবন-যাপন করছি।’

তিনি বলেন, ‘ঘটনার পর হবিগঞ্জ জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ১৫ হাজার ও ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ২৫ হাজার টাকা দেয়া হয়েছিল। এছাড়াও ব্যক্তিগতভাবে কিছু মানুষ যৎসামান্য সহযোগিতা করেছেন। ওই টাকা দিয়ে আমার মাতৃত্বজনিত রোগের চিকিৎসার ব্যয় নির্বাহ করেছি। বর্তমানে খেয়ে না খেয়ে দিনাতিপাত করছি। কেউ আমাদের কোন খোঁজ-খবর দিচ্ছে না। শুনেছি মন্ত্রী মহোদয় এক লাখ টাকা দেয়ার ঘোষণা দিয়েছিলেন। কিন্তু সে টাকা আমরা এখনও পাইনি।’

একই উপজেলার টাম্বুলিটুলা মহল্লার সোহেল মিয়ার দুই বছরের মেয়ে আদিবা আক্তার দুর্ঘটনায় মারা গেছেন। এছাড়া গুরুতর আহত হয়ে ঘরবন্দী হয়ে আছেন তিনি ও তার স্ত্রী।

তিনি বলেন, ‘সাড়ে তিনমাস ধরে কোন কাজ করতে না পারায় পরিবারের অভাব অনটন বেড়েই চলেছে। তাছাড়া টাকার অভাবে আমি ও আমার স্ত্রীর চিকিৎসা করাতে পারছি না।’

জানতে চাইলে বানিয়াচং উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মামুন খন্দকার বলেন, ‘ঘটনার পরপরই বানিয়াচংয়ের নিহতদের পরিবারের যাবতীয় কাগজপত্র সংশ্লিষ্ট দফতরে প্রেরণ করেছি। তবে এখনও এ ব্যাপারে মন্ত্রণালয় থেকে আমাদের কিছুই জানানো হয়নি।’

জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ কামরুল হাসান বলেন, ‘কিছুদিন পূর্বে মন্ত্রণালয় থেকে আমাকে টেলিফোনে জানানো হয়েছিল নিহতদের পরিবারের লোকজনকে ঢাকায় নিয়ে অনুষ্ঠানিকভাবে সরকারির অনুদানের এক লাখ টাকা দেয়া হবে। এ লক্ষে দিন-তারিখও নির্ধারণ করা হয়েছিল। কিন্তু পরবর্তীতে অনিবার্য কারণবশত অনুষ্ঠানটি স্থগিত হয়ে যায়। তবে আমি আশা করছি খুব তাড়াতাড়ি অনুষ্ঠানিকভাবে অনুদানের টাকা নিহতদের পরিবারের হাতে তুলে দেয়া হবে।

উল্লেখ্য, ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার কসবা উপজেলার মন্দবাগ স্টেশনের রেল ক্রসিংয়ে উদয়ন এক্সপ্রেস ও তূর্ণা নিশীতা ট্রেনের মধ্যে ভয়াবহ সংঘর্ষের ঘটনায় হবিগঞ্জের নারী-শিশুসহ নয়জন নিহত হন ও ২৫ জন আহত হন।

নিহতরা হলেন- হবিগঞ্জ শহরতলীর আনোয়ারপুর গ্রামের মৃত হাসান আলীর ছেলে জেলা ছাত্রদলের সহ-সভাপতি আলী মো. ইউসুফ (৩২), বানিয়াচং উপজেলার মদন মোরাদ গ্রামের আইয়ুব আলীর ছেলে আল আমিন (৩৪), একই উপজেলার টাম্বুলিটুলা মহল্লার সোহেল মিয়ার মেয়ে আদিবা আক্তার (২), হবিগঞ্জ শহরতলীর বহুলা গ্রামের আলমগীর মিয়ার ছেলে ইয়াসিন মিয়া (১২), চুনারুঘাট উপজেলার পীরেরগাও গ্রামের মৃত আব্দুল হাশেমের ছেলে ও হবিগঞ্জ সরকারী বৃন্দাবন কলেজের ছাত্র আশিকুর রহমান সুজন (২৫), একই উপজেলার উলুকান্দি গ্রামের ফরিদ মিয়ার ছেলে রুবেল মিয়া (২২), চুনারুঘাট উপজেলার আমরোড এলাকার বাসিন্দা আব্দুস সালামের স্ত্রী পিয়ারা বেগম (৬২), নবীগঞ্জ উপজেলার বনগাও গ্রামের হারুণ মিয়ার ছেলে নজরুল ইসলাম (২৬) ও হবিগঞ্জ সদর উপজেলার সৈয়দাবাদ গ্রামের আজমত উল্লার ছেলে রিপন মিয়া (২৬)।

   

গড়াই নদীতে ডুবে যুবকের মৃত্যু



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, কুষ্টিয়া
ছবি প্রতীকী

ছবি প্রতীকী

  • Font increase
  • Font Decrease

কুষ্টিয়ার খোকসায় গড়াই নদীতে ডুবে সুমন (২০) নামে এক যুবকের মৃত্যু হয়েছে।

রোববার (৫ এপ্রিল) বিকেলে খোকসা উপজেলার গনেশপুর অংশে গড়াই নদী থেকে মরদেহ উদ্ধার করা হয়।

মৃত সুমন কুমারখালী উপজেলার রাজাপুর গ্রামের নিজাম উদ্দিনের ছেলে।

খোকসা ফায়ার সার্ভিস স্টেশনের ফায়ারম্যান হাবিবুর রহমান জানান, সকালের দিকে গড়াই নদীতে মাছ ধরতে যান সুমন। মাছ ধরার এক পর্যায়ে নদীতে ডুবে যান তিনি। বিকেলের দিকে স্থানীয়দের সহায়তায় তার মরদেহ উদ্ধার করে ফায়ার সার্ভিস।

;

কুমিল্লার নাঙ্গলকোটে বজ্রপাতে কিশোরের মৃত্যু



ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, কুমিল্লা
প্রতীকী ছবি

প্রতীকী ছবি

  • Font increase
  • Font Decrease

কুমিল্লার নাঙ্গলকোটে ফুটবল খেলার সময় বজ্রপাতে সাফায়েত হোসেন (১৯) নামে একজনের মৃত্যু হয়েছে। এ সময় সালাউদ্দিন (২২) নামের আরেক যুবক গুরুতর আহত হন।

রোববার (৫ এপ্রিল) এই বিকেলে এই ঘটনা ঘটে। তাদের উদ্ধার করে সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে লাকসামের একটি ক্লিনিকে নেওয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক ওই কিশোরকে মৃত ঘোষণা করেন।

স্থানীয় সূত্র জানায়, উপজেলার আদ্রা দক্ষিণ ইউনিয়নের আটিয়াবাড়ি দক্ষিণপাড়া স্কুল বাড়ির আবদুল আউয়ালের ছেলে সাফায়াত হোসেন এদিন বিকেলে সহপাঠীদের সাথে পার্শ্ববর্তী ঘোড়াময়দান গ্রামের একটি মাঠে ফুটবল খেলতে যায়। বিকাল ৫টার দিকে খেলা চলা অবস্থায় আকস্মিক বজ্রপাতে সাফায়েতের পুরো শরীর ঝলসে যায়। তাৎক্ষনিকভাবে তাকে উদ্ধার করে লাকসামের একটি ক্লিনিকে নেয়া হলে সন্ধ্যায় কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

এছাড়া বজ্রপাতে ওই ঘোড়াময়দান গ্রামের নুরুল হকের ছেলে সালাউদ্দিন (২২) গুরুতর আহত হয়ে স্থানীয় একটি ক্লিনিকে চিকিৎসাধীন রয়েছে।

স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান আবদুল ওহাব ঘটনার এ ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।

;

লক্ষ্মী ভাইয়েরা বাসায় যান, নিজেসহ দেশকে বাঁচান



নাহিদ রেজা, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, ঠাকুরগাঁও
ওসি তানভিরুল ইসলাম।

ওসি তানভিরুল ইসলাম।

  • Font increase
  • Font Decrease

আমার লক্ষ্মী ভাইয়েরা দয়া করে বাইরে ঘোরাঘুরি না করে বাসায় যান। নিজে বাঁচেন, পরিবারকে বাঁচান, দেশকে বাঁচান। সচেতন হোন।

ঠিক এসব কথা বলে করোনাভাইরাস প্রতিরোধে জনগণকে সচেতন করছেন ঠাকুরগাঁও সদর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) তানভিরুল ইসলাম। মাঠ পর্যায়ে গিয়ে এভাবে সচেতন করায় সাধুবাদ জানিয়েছে সাধারণ মানুষ।

ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার রহিমানপুর ইউনিয়নের রেজাউল ইসলাম বলেন, ‘আমি ওষুধ কেনার জন্য স্থানীয় বাজারে এসেছিলাম। কিছুক্ষণ পর থানার একটি গাড়ি বাজারের সামনে এসে দাঁড়ায় এবং ওসি তানভিরুল সবাইকে বাসায় থাকার জন্য অনুরোধ করেন। এর আগে কখনো জনগণের সঙ্গে পুলিশের এমন ভালো আচরণ দেখি নাই।’

ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার চৌড়াস্তা মোড়ে কথা হয় জয়নাল নামে এক পথচারীর সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘আমাদের জেলার পুলিশ সাধারণ জনগণের সঙ্গে ভালো ব্যবহার করছে। তাদের ভাই বলে বাসায় ফিরে যাওয়ার জন্য অনুরোধ করছে। ওসিসহ পুলিশের সদস্যরা নিজেদের কথা চিন্তা না করে আমাদের জন্য এ কাজটি করে যাচ্ছেন। তাদের ধন্যবাদ জানাই।’

স্থানীয় সাহাদত হোসেন নামে একজন বলেন,‘তানভিরুল ভাই একজন মানবিক পুলিশ অফিসার। তার জন্য শুভকামনা ও দোয়া রইল।’

ঠাকুরগাঁও সদর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) তানভিরুল ইসলাম বার্তা২৪.কমকে বলেন, ‘করোনাভাইরাস নিয়ে আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই। এ ভাইরাস প্রতিরোধে আমাদের সবাইকে সচেতন হতে হবে। সরকার যেসব দিক নির্দেশনা দিয়েছে সেগুলো মেনে চলতে হবে। জনগণের সঙ্গে খারাপ ব্যবহার না করে তাদের সচেতন করা হচ্ছে। এতে কাজও হচ্ছে।’

;

ডিবি পরিচয়ে মোবাইল ছিনতাই, যুবক গ্রেফতার



ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, নীলফামারী
গ্রেফতার আবেদ আলী।

গ্রেফতার আবেদ আলী।

  • Font increase
  • Font Decrease

নীলফামারীতে গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) উপপরিদর্শক পরিচয়ে মোবাইল ছিনতাই করার অপরাধে আবেদ আলী (২৮) নামে এক যুবককে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।

রোববার (৫ এপ্রিল) বিকেলে নীলফামারী সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মমিনুল ইসলাম এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

আবেদ আলী সৈয়দপুর উপজেলার কাশিরাম বেলপুকুর ইউনিয়নের চওড়া গ্রামের খয়রাত হোসেনের ছেলে।

জানা গেছে, শনিবার (৪ এপ্রিল) দুপুরে জেলা সদরের কুন্দপুকুর ইউনিয়নের আঙ্গারপাড়া গ্রামে মোকছেদুল ইসলামসহ কয়েক যুবক মোবাইলে ভিডিও গেম খেলছিলেন। এ সময় আবেদ আলী নিজেকে সৈয়দপুর থানার ডিবি পুলিশের উপপরিদর্শক পরিচয় দিয়ে ওই যুবকদের কাছ থেকে মোবাইলটি নিয়ে যান। পরে এ বিষয়ে মোবাইলের মালিক মোকছেদুল ইসলাম সদর থানায় অভিযোগ করেন।

এরপর রোববার ভোরে আবেদ আলীর বাড়িতে অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেফতার করা হয়। ওই সময় তার কাছ থেকে ছিনতাই কাজে ব্যবহৃত একটি খেলনা পিস্তল ও ওয়্যারলেস সেট, একাধিক মোবাইল সিম এবং দুটি পরিচয়পত্র জব্দ করে পুলিশ।

নীলফামারী সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মমিনুল ইসলাম জানান, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে ডিবি পুলিশের ভুয়া পরিচয়ে মোবাইল ছিনতাই করার সত্যতা স্বীকার করেছেন আবেদ আলী। এ ঘটনায় মামলা দায়ের করার পর আদালতের মাধ্যমে তাকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।

;