জাটকা সংরক্ষণ: মার্চ-এপ্রিল মেঘনায় নামবে না জেলেরা

  • ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, লক্ষ্মীপুর
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

ফাইল ছবি।

ফাইল ছবি।

সাগর-নদীতে সরকারি নিষেধাজ্ঞা যথাযথভাবে প্রয়োগে বেড়েছে ইলিশ উৎপাদন। ২০১৯ সালে চাঁদপুর, লক্ষ্মীপুর, ভোলা ও নোয়াখালীর হাতিয়া অঞ্চলে ৫ লাখ ১৭ হাজার মেট্রিক টন ইলিশ উৎপাদন হয়েছে। এরমধ্যে লক্ষ্মীপুরে ২০ হাজার মেট্রিক টন ইলিশ উৎপাদন হয়।

এদিকে জাটকা সংরক্ষণে শনিবার (২৯ ফেব্রুয়ারি) মধ্যরাত থেকে ৩০ এপ্রিল মধ্যরাত পর্যন্ত দুই মাস মেঘনা নদীর ১০০ কিলোমিটার এলাকায় সব ধরনের মাছ ধরা নিষিদ্ধ।

বিজ্ঞাপন

জানা গেছে, জাটকা সংরক্ষণ ও ইলিশ উৎপাদন বৃদ্ধিতে লক্ষ্মীপুরের চর আলেকজান্ডার থেকে চাঁদপুরের ষাটনল এলাকা পর্যন্ত মেঘনা নদীতে মাছ শিকারে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে সরকার। এ সময় আইন অমান্যকারীদের জরিমানা ও দুই বছরের জেল এবং উভয় দণ্ডে দণ্ডিত করার বিধান রয়েছে।

জেলা মৎস্য কার্যালয় সূত্র জানায়, ১ মার্চ থেকে ৩০ এপ্রিল পর্যন্ত ২ মাস মেঘনা নদীর ১শ কিলোমিটার এলাকায় ইলিশের অভয়াশ্রম ঘোষণা করেছে সরকার। এ সময়ে মাছ ধরা থেকে বিরত রাখতে জেলেদের নিয়ে বিভিন্ন সচেতনতামূলক সভা ও সেমিনার করা হচ্ছে। উপকূলীয় অঞ্চলের বরফ কারখানা বন্ধসহ বিভিন্ন সচেতনতামূলক দিক-নির্দেশনা নিয়ে মাইকিং করা হচ্ছে। নিষেধাজ্ঞাকালীন লক্ষ্মীপুরের ২৪ হাজার ২৪৭ জন জেলেকে ৪০ কেজি করে খাদ্য সহায়তা দেয়া হবে। কিন্তু লক্ষ্মীপুরে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে প্রায় ৬২ হাজার জেলে রয়েছে।

বিজ্ঞাপন

চাঁদপুর ইলিশ গবেষণা কেন্দ্র সূত্র জানিয়েছে, ইলিশ সংরক্ষণে বছরের ৪ মাস ২৭ দিন মেঘনা ও বঙ্গোপসাগরে মাছ শিকারে সরকারি নিষেধাজ্ঞা যথাযথভাবে প্রয়োগ হওয়ায় উৎপাদন বেড়েছে। গেল বছর চাঁদপুর, লক্ষ্মীপুর, ভোলা ও নোয়াখালীর হাতিয়া অঞ্চলে প্রায় ৫ লাখ ১৭ হাজার মেট্রিক টন ইলিশ উৎপাদন হয়েছে। নিষেধাজ্ঞার ফলে মা-ইলিশ রক্ষা পাওয়ায় বেড়েছে উৎপাদন। একটি মা ইলিশ ২৩ লাখ পর্যন্ত ডিম দিতে পারে। অক্টোবর মাসে নিষেধাজ্ঞার ২২ দিনে মা ইলিশগুলো প্রচুর ডিম ছাড়তে পেরেছে। সেই ডিমগুলো জাটকায় পরিণত হয়েছে। এবার মার্চ-এপ্রিল দুই মাস সেই জাটকাগুলো সংরক্ষণের জন্য মেঘনা নদীতে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে সরকার।

২২ অক্টোবরের অভিযান সফল হওয়ায় জেলেদের জালে এবার শীতে প্রচুর পরিমাণ ইলিশ ধরা পড়েছে। সরকারি উদ্যোগ যথাযথভাবে সম্পন্ন হলে সারাবছরই নদীতে পর্যাপ্ত পরিমাণ ইলিশ পাওয়া যাবে।

অন্যদিকে, ইলিশ সংরক্ষণের লক্ষ্যে এ দুইমাস নদীতে না যাওয়ার কথা জানালেন লক্ষ্মীপুরের জেলেরা। অবশ্য এ নিষেধাজ্ঞার সময়ে সরকারের কাছে খাদ্য ও পুনর্বাসন সহায়তার দাবি জানিয়েছেন তারা।

লক্ষ্মীপুর জেলা মৎস্য কর্মকর্তা মো. বিল্লাল হোসেন জানান, জেলেদের মাছ শিকারে বিরত রাখতে নদীতে কোস্ট গার্ড, মৎস্য বিভাগ ও পুলিশ প্রশাসনের পক্ষ থেকে বিশেষ অভিযান চালানো হবে। এই আইন অমান্যকারীদের জেল, জরিমানা ও উভয় দণ্ডের বিধান রয়েছে।

চাঁদপুর ইলিশ গবেষণা কেন্দ্রের প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. মো. আনিছুর রহমান জানান, এবারের শীতে প্রচুর ইলিশ উৎপাদন হয়েছে। বছরের প্রায় ৫ মাস নদী ও সাগরে নিষেধাজ্ঞার সময়টি ইলিশ উৎপাদন বৃদ্ধিতে ভূমিকা রাখছে। সরকারি নিষেধাজ্ঞা যথাযথভাবে প্রয়োগে উৎপাদন আরও বাড়বে।