বৃষ্টির অপেক্ষায় চা বাগান

  • কাজল সরকার, ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, হবিগঞ্জ
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

কেটে ফেলা হয়েছে চা গাছের সবুজ অংশ/ছবি: বার্তা২৪.কম

কেটে ফেলা হয়েছে চা গাছের সবুজ অংশ/ছবি: বার্তা২৪.কম

যারা সবুজ-সতেজ চা বাগান দেখেছেন তারা এখন পাহাড়ি এলাকায় গেলে অবাক হবেন। অনেকে হয়তো ভাববেন চা গাছগুলো মরে গেছে অথবা রুক্ষ হয়ে মরার পথে। কেননা বিস্তীর্ণ পাহাড়ি এলাকায় এখন সবুজের ছিটেও নেই। আছে শুধু চা গাছের ডাল-পালা।

তবে চিন্তার কিছু নেই, চা বাগানের কোনো ক্ষতি হয়নি। বরং চা গাছের উপকারের জন্যই কেটে ফেলা হয়েছে সবুজ অংশ, যাকে বলা হয় ‘প্রুনিং’ বা কলম করা।

বিজ্ঞাপন

চা গাছের সুস্বাস্থ্য এবং অধিক উৎপাদনের জন্য প্রতি বছর বাগানে এ ‘প্রুনিং’ করা হয়। নভেম্বরের মাঝামাঝি থেকে ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত চলে ‘প্রুনিং’ কার্যক্রম। এ সময় চা উৎপাদন সম্পূর্ণ বন্ধ থাকে।

হবিগঞ্জের মাধবপুর, চুনারুঘাট, বাহুবল ও নবীগঞ্জের সবগুলো চা বাগানে ‘প্রুনিং’ কার্যক্রম শেষ হয়েছে। এখন চা বাগানগুলো মূলত বৃষ্টির জন্য অপেক্ষা করছে। বৃষ্টি এলেই নতুন ‘কুঁড়ি’ গজাবে বাগানগুলোতে। আবার সবুজে সবুজে ভরে উঠবে চারপাশ। বাগানগুলো ফিরে পাবে তার যৌবনময় চিরচেনা রূপ।

বিজ্ঞাপন
চা বাগানে এখন সবুজ নেই/ছবি:বার্তা২৪.কম 

দেশের ১৬৪টি চা বাগানের মধ্যে হবিগঞ্জে রয়েছে ৪৫টি। জেলার চুনারুঘাট, মাধবপুর, নবীগঞ্জ ও বাহুবল উপজেলার পাহাড়ি অঞ্চলের চা ভূমির পরিমাণ প্রায় ১৫ হাজার ৭০৩ দশমিক ২৪ হেক্টর।

সরজমিনে জেলার বিভিন্ন চা বাগান ঘুরে দেখা যায়- সবগুলোরই ‘প্রুনিং’ শেষ হয়ে গেছে। গাছের নিচ পরিষ্কার করে বাড়তি যত্ন নেয়া হচ্ছে। আবার কোথাও কোথাও নতুন চারা লাগানোর কাজ চলছে। বিস্তীর্ণ পাহাড়ি এলাকায় এখন কোনো সবুজের দেখা নেই। তবে কোনো কোনো চা বাগানে এখনও শ্রমিকদের বাড়তি পরিচর্যা করতে দেখা গেছে। কেউ কেউ আবার বাগানগুলোতে বিভিন্ন ধরনের কীটনাশক স্প্রে করছেন।

দেওন্দি চা বাগানের ব্যবস্থাপক রিয়াজ উদ্দিন বলেন, চা বাগানের ‘প্রুনিং’ খুবই গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। প্রতি বছরই এ ‘প্রুনিং’ করতে হয়। এটি না করলে উৎপাদন ভালো হয় না।

বৃষ্টি এলেই চা গাছে গজাবে নতুন পাতা/ছবি:বার্তা২৪.কম

তিনি বলেন, চা বাগানের ‘প্রুনিং কাজ শেষ হয়েছে। এখন যত তাড়াতাড়ি বৃষ্টি হবে ততো তাড়াতাড়ি বাগানে ‘কুঁড়ি’ গজাবে। আশা করা যাচ্ছে এ বছর গত বছরের তুলনায় উৎপাদন বেশি হবে।

লস্করপুর ভ্যালির চেয়ারম্যান ও চাকলাপুঞ্জি চা বাগানের ব্যবস্থাপক এসসি নাগ বলেন, শীতকালীন পরিচর্যা ও ‘প্রুনিং’ শেষ হয়েছে। এখন ‘মার্চিং’ হচ্ছে। এখন বৃষ্টি হওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে। কারণ বৃষ্টি হলেই গাছগুলো সবুজ হয়ে উঠবে।