থেমে থাকা বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য নির্মাণ কাজ সম্পন্নের দাবি

  • রাকিবুল ইসলাম রাকিব, উপজেলা করেসপন্ডেন্ট, গৌরীপুর (ময়মনসিংহ)।
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য নির্মাণ কাজের ১০ শতাংশ অসমাপ্ত রয়ে গেছে, ছবি: বার্তা২৪.কম

বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য নির্মাণ কাজের ১০ শতাংশ অসমাপ্ত রয়ে গেছে, ছবি: বার্তা২৪.কম

ময়মনসিংহের গৌরীপুরে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের বৃহৎ ভাস্কর্য নির্মাণ কাজ দীর্ঘদিন ধরে অসমাপ্ত অবস্থায় পড়ে আছে। সরকারিভাবে ভাস্কর্যের নির্মাণ কাজ সমাপ্ত ও রক্ষণাবেক্ষণের দাবি জানিয়ে তিন বছর আগে স্থানীয় সংগঠন বাংলা মঞ্চের পক্ষ থেকে প্রধানমন্ত্রী কার্যালয়ে স্মারকলিপিও দেওয়া হয়। কিন্তু দীর্ঘদিন পার হলেও সংশ্লিষ্ট দফতর থেকে ভাস্কর্যের কাজ সমাপ্ত করার কোনো উদ্যোগ নেওয়া হয়নি।

তবে স্থানীয়রা বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী মুজিব বর্ষ ২০২০ সালের মধ্যেই বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য নির্মাণ কাজ শেষে আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধনের দাবি জানিয়েছেন।

বিজ্ঞাপন

জানা গেছে, ১৯৭১ সালের ঐতিহাসিক ৭ মার্চে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের দেওয়া ভাষণের স্মৃতি পরবর্তী প্রজন্মের কাছে তুলে ধরতে ২০১৫ সালে ময়মনসিংহ-কিশোরগঞ্জ মহাসড়কের পাশে কলতাপাড়া বাজারে বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য নির্মাণ কাজ শুরু হয়। সাবেক স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রী ও ময়মনসিংহ-৩ (গৌরীপুর) আসনের সংসদ সদস্য (এমপি) ডা. ক্যাপ্টেন (অব.) মজিবুর রহমান ফকির সম্পূর্ণ ব্যক্তিগত অর্থায়নে ভাস্কর্য নির্মাণের উদ্যোগ নেন।

৫৩ ফুট উচ্চতার এই ভাস্কর্যটিতে বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের ভাষণের প্রতিকৃতি ফুটিয়ে তোলা হয়েছে। এমপি মজিবুর রহমান যতদিন বেঁচে ছিলেন ততদিন ব্যক্তিগতভাবে ভাস্কর্য নির্মাণের ব্যয় বহন করতেন। এতে খুব দ্রুতই এগোতে থাকে এর নির্মাণকাজ। কিন্তু ২০১৬ সালের ২ মে মজিবুর রহমান হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যান। এরপর সরকারি কিংবা বেসরকারিভাবে কেউ এগিয়ে না আসায় আটকে যায় বৃহৎ এই ভাস্কর্যের নির্মাণকাজ। ফলে প্রায় চার বছর ধরে সেভাবেই পড়ে আছে অসমাপ্ত ভাস্কর্যটি।

বিজ্ঞাপন

এ বিষয়ে জানতে চাইলে নির্মাণ শিল্পী ভাস্কর এমএ মাসুদ বার্তা২৪.কম-কে বলেন, ‘সাদা পাথরে নির্মিত ভাস্কর্যটি ৫৩ ফুট উঁচু। আমার ধারণা, দেশের ভেতর ও বাইরে বঙ্গবন্ধুর এত উঁচু ভাস্কর্য আর নেই। এর নির্মাণ ব্যয় ধরা হয়েছিল ৭০ লাখ টাকা। ইতোমধ্যে ভাস্কর্যটির ৯০ শতাংশ কাজ শেষ হয়েছে। বাকি কাজ শেষ করতে এখনো ১০ লাখ টাকা প্রয়োজন। তবে এমপি মজিবুর রহমানের মৃত্যুর পর নির্মাণকাজ শেষ করার জন্য কেউ আমার সঙ্গে যোগাযোগ করেনি।’

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ভাস্কর্য

ময়মনসিংহ জেলা পরিষদের সদস্য এইচএম খায়রুল বাসার বার্তা২৪.কম-কে বলেন, ‘বঙ্গবন্ধুর দৃষ্টিনন্দন ভাস্কর্যটিকে দেখতে দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে বঙ্গবন্ধুপ্রেমী ও দর্শনার্থীরা কলতাপাড়া ছুটে আসে। আমরা বাংলামঞ্চের পক্ষ থেকে ভাস্কর্য নির্মাণ কাজ শেষ করার দাবি জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বরাবর স্মারকলিপি দিলেও কোনো উদ্যোগ নেওয়া হয়নি। তবে মুজিব বর্ষে উপলক্ষে সংশ্লিষ্ট দফতর আমাদের দাবি পূরণে উদ্যোগী হবেন এটাই প্রত্যাশা।’

উপজেলা আওয়ামী লীগের দফতর সম্পাদক অধ্যক্ষ শফিকুল ইসলাম মিন্টু বার্তা২৪.কম-কে বলেন, ‘মজিবুর রহমান এমপির স্বপ্ন ছিল বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য নির্মাণ কাজ শেষে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এটি উদ্বোধন করবেন। কিন্তু উনার সেই স্বপ্ন পূরণ হয়নি। তাই মুজিববর্ষে ভাস্কর্য নির্মাণ কাজ শেষে প্রধানমন্ত্রী এটি উদ্বোধন করবেন এটাই আমাদের দাবি।’

গৌরীপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার সেজুতি ধর বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ভাস্কর্য যথাযথভাবে সংরক্ষণ ও রক্ষণাবেক্ষণের বিষয়ে সংশ্লিষ্ট দফতরে প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে স্মারকলিপিটি পাঠানোর বিষয়টি আমি জানতাম না। এখন যেহেতু জেনেছি, তাই দ্রুত বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য নির্মাণ কাজ শেষ করার বিষয়টি আমি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করব।’