গমের ব্লাস্ট রোগ প্রতিরোধী জার্মাপ্লাজম শনাক্তকরণে মেহেরপুরে প্রশিক্ষণ দল 

  • মাজেদুল হক মানিক, ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট ২৪.কম, মেহেরপুর
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

গমের ব্লাস্ট রোগ প্রতিরোধী জার্মাপ্লাজম শনাক্তকরণে প্রশিক্ষণ দল 

গমের ব্লাস্ট রোগ প্রতিরোধী জার্মাপ্লাজম শনাক্তকরণে প্রশিক্ষণ দল 

 

বাংলাদেশে গমের ব্লাস্ট প্রতিরোধে এক নতুন অধ্যায়ের শুভ সূচনা করেছে বারি গম ৩৩। ব্লাস্ট প্রতিরোধী একমাত্র এ জাতটি এখন সবার কাছেই আস্থার প্রতীক। চলতি মৌসূমে দেশের বিভিন্ন স্থানে গমে ব্লাস্ট দেখা দিলেও একমাত্র বারি গম ৩৩ ব্লাস্ট মুক্ত হিসেবে নতুন আশার আলো জ্বেলেছে। মেহেরপুর জেলায় বারি গম ৩৩ এর বিভিন্ন ক্ষেত পরিদর্শন করেছেন গমের ব্লাস্ট রোগ প্রতিরোধী জার্মাপ্লাজম শনাক্তকরণ বিষয়ে আয়োজিত আন্তর্জাতিক একটি প্রশিক্ষণ দলের সদস্যরা।

বিজ্ঞাপন

ব্লাস্ট আক্রান্ত গমের ক্ষেতের পাশে ব্লাস্ট প্রতিরোধী জাত হিসেবে বারি গম ৩৩ কি ধরনের কাজ করছে তা সরজমিন পর্যবেক্ষণ করেছেন প্রশিক্ষণ দলের সদস্যবৃন্দ। শনিবার (৭ মার্চ) দুপুরে মুজিবনগর কমপ্লেক্সের পাশে বিভিন্ন ক্ষেত পরিদর্শন করেন তারা।

এ বিষয়ে বাংলাদেশ গম ও ভুট্টা গবেষণা ইনস্টিটিউটের বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ও প্রশিক্ষণের প্রধান সমন্বয়নকারী ড. রেজাউল কবির বলেন, প্রশিক্ষণ দলে দেশী ও বিদেশি ২৫ জন সদস্য রয়েছেন। এর মধ্যে ভারত, আফগানিস্তান, নেপাল, জাম্বিয়া ও মেক্সিকো গম গবেষণায় কর্মরত প্রতিনিধিরা এখানে পর্যবেক্ষণ করেন।

বিজ্ঞাপন
 ভারত, আফগানিস্তান, নেপাল, জাম্বিয়া ও মেক্সিকো গম গবেষণায় কর্মরত প্রতিনিধিরা ক্ষেত পর্যবেক্ষণ করেন

মেহেরপুর জেলায় ২০১৬ সালে দেশের প্রথম স্থান হিসেবে ব্যাপক আকারে ব্লাস্ট আক্রমণ হয় উল্লেখ করে ড. রেজাউল কবির বলেন, এ জেলাকে হট স্পট হিসেবে ধরা হয়। তাই মেহেরপুরে বর্তমানে ব্লাস্ট ও ব্লাস্ট প্রতিরোধী জাতের কি অবস্থা এবং অন্যান্য জাতের কার্যকারিতা সম্পর্কে প্রশিক্ষণার্থীদের হাতেকলমে দেখানো হচ্ছে। 

প্রশিক্ষণার্থী ভারতীয় উদ্ভিদ রোগতত্ববীদ ড. দ্বীপ শিখা বলেন, হুইট ব্লাস্ট ও হেড ব্লাইড সহ বিভিন্ন রোগ সম্পর্কে জানতে পেরেছি। একইসাথে ব্লাস্ট প্রতিরোধী জাত কিভাবে কাজ করছে তা আমরা সরেজমিন দেখলাম। 

প্রশিক্ষণার্থী জাম্বিয়া এগ্রিকালচার রিসার্চ ইনন্সিটিউট এর ড. বাতি সেবা টেম্বু বলেন, ব্লাস্ট প্রতিরোধী জাত হিসেবে বারি গম ৩৩ খুব ভালো কাজ করছে।

আরেকজন প্রশিক্ষণার্থী বাংলাদেশ গম ও ভুট্টা গবেষণা ইনস্টিটিউটের গবেষণা সহযোগী ফারজানা বাশার বলেন, পর্ববেক্ষণে আমরা দেখেছি বারি গম ২৬ এ ব্লাস্টের প্রকোপ খুব বেশি। অপরদিকে বারি গম ৩৩ এ কোন ব্লাস্ট নেই। ব্লাস্ট, হেড ব্লাইড ও গমের অন্যান্য রোগ সম্পর্কে আমরা অনেক কিছু শিখলাম।

২০১৬ সালে এশিয়া মহাদেশের মধ্যে বাংলাদেশে (মেহরপুরসহ দক্ষিণ পশ্চিমাঞ্চলের ৮টি জেলায়) প্রথম গমের ব্লাস্ট রোগে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়। পরে দুই বছর গম আবাদেরও ব্যাপক বিরূপ প্রভাব পড়ে। ২০১৭ সালে বাংলাদেশ কৃষি গষেণা ইনস্টিটিউটের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান গম গবেষণা কেন্দ্র বারির বিজ্ঞানিরা গম ৩৩ একমাত্র ব্লাস্ট প্রতিরোধী জাত উদ্ভাবন করতে সক্ষম হন। তখন থেকে গমের ব্লাস্ট নিয়ে কার্যক্রম আরো জোরদার করে বাংলাদেশের গবেষণা প্রতিষ্ঠানগুলো।

এরই আলোকে গমের ব্লাস্ট রোগ প্রতিরোধী জার্মাপ্লাজম শনাক্তকরণ ও সার্ভিলেন্স বিষয়ে ১ মার্চ থেকে যশোর আঞ্চলিক কৃষি গবেষণা কেন্দ্রে ১০ দিনের আন্তর্জাতিক প্রশিক্ষণ অনুষ্ঠিত হচ্ছে। আন্তর্জাতিক ভুট্টা ও গম উন্নয়ন কেন্দ্র (সিমিট) ও বাংলাদেশ ও গম ও ভুট্টা গবেষণা ইনস্টিটিউট যৌথ উদ্যোগে এ প্রশিক্ষণের আয়োজন করেছে। প্রশিক্ষণার্থীদের হাতেকলমে শেখানোর জন্য মুজিবনগরে আজ এ ক্ষেত পরিদর্শন করেন তারা।