ফসলি জমির উর্বর মাটি যাচ্ছে ইটভাটায়



কাজল সরকার, ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, হবিগঞ্জ
উর্বর মাটি এভাবেই কেটে নিয়ে যাচ্ছেন ইটভাটার ব্যবসায়ীরা, ছবি: বার্তা২৪.কম

উর্বর মাটি এভাবেই কেটে নিয়ে যাচ্ছেন ইটভাটার ব্যবসায়ীরা, ছবি: বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

সরকারি নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে হবিগঞ্জে প্রতিনিয়ত ফসলি জমির উপরিভাগের উর্বর মাটি পাচার হচ্ছে ইট ভাটাগুলোতে। এতে কৃষি জমিগুলো উর্বরতা কমায় ফসল উৎপাদনে ব্যবহার করতে হচ্ছে অতিমাত্রায় রাসায়নিক সার ও কীটনাশক। তবু পাওয়া যাচ্ছে না কাঙ্ক্ষিত ফলন। জমির মালিকরা বলছেন, ধানের ন্যায্যমূল্য না পাওয়ায় বাধ্য হয়ে বিক্রি করতে হচ্ছে মাটি। ভাটা মালিকদের দাবি কৃষক বিক্রি করছে তাই কিনছেন তারা।

জানা যায়, হবিগঞ্জে বৈধ-অবৈধ মিলিয়ে অন্তত শতাধিক ইটভাটা রয়েছে। এসব ভাটায় ইট তৈরি করতে ব্যবহার করা হচ্ছে ফসলি জমির উপরিভাগের উর্বর মাটি। জেলা সদর, চুনারুঘাট ও বাহুবল উপজেলার বিভিন্ন স্থান থেকে প্রতিদিন খননযন্ত্র দিয়ে শতশত গাড়ি মাটি নেয়া হচ্ছে ইটভাটায়। বিভিন্ন সময় প্রশাসনের অভিযানে জেল-জরিমানা করা হলেও নিয়ন্ত্রণ করা যাচ্ছে না ফসলি জমি থেকে মাটি বিক্রি।

কৃষকদের দাবি- ধানের ন্যায্যমূল্য না পাওয়ায় সংসার চালাতে বাধ্য হয়ে মাটি বিক্রি করতে হচ্ছে তাদের। এছাড়া নিচু জমি নয়, যেসব জমিতে পানি উঠছে না বা চাষাবাদের অনুপযোগী সেগুলোতে চাষাবাদের উপযোগী করে তুলতে তারা বিক্রি করছেন মাটি।

এ ব্যাপারে কৃষক আব্দুল আওয়াল বলেন- ‘এক কের (২৭/৩২ শতক) জমিতে ধান চাষ করলে ৮/১০ হাজার টাকা ধান পাওয়া যায়। আর ওই জমির মাটি বিক্রি করলে পাওয়া যায় ২৫/৩০ হাজার টাকা। তাই সংসার চালাতে চাষাবাদ না করে মাটি বিক্রি করতে হচ্ছে।’

সদর উপজেলার যাদবপুর গ্রামের শিক্ষক অনিল মাস্টার বলেন- ‘আমার অনেকগুলো জমি উঁচু হয়ে গেছে। সেই জমিগুলোতে পানি উঠে না। তাই জমি নিচু করে চাষাবাদের উপযোগী করে তুলতে ইট ভাটায় মাটি বিক্রি করতে হচ্ছে।’

মোহাম্মদ সাজিদুল মিয়া নামে এক কৃষক বলেন- ‘আমার জমির চারপাশের মালিকরা মাটি বিক্রি করায় আমার জমি অনেক উঁচু হয়ে গেছে। ফলে আমার জমিতে এখন আর পানি উঠে না। তাই বাধ্য হয়ে মাটি বিক্রি করতে হচ্ছে।’

এভাবেই ফসলি জমির উপরিভাগের মাটি চলে যাচ্ছে ইটভাটায়
এভাবেই ফসলি জমির উপরিভাগের মাটি চলে যাচ্ছে ইটভাটায়

তিনি বলেন- ‘এছাড়া বর্তমানে ধানের ন্যায্যমূল্য পাওয়া যায় না। তাই অনেক জমি পতিত রয়েছে। সেগুলো থেকে কিছু মাটি বিক্রি করতে হচ্ছে।’

এ ব্যাপারে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক ইট ভাটার মালিক বলেন- ‘অনেক কৃষক জমির মাটি বিক্রি করতে আমাদের কাছে আসেন। তাই আমরা কিনি। কোনো জমির মালিক বলতে পারবে না যে আমরা জোর করে মাটি নিচ্ছি।’

‘ফসলি জমি থেকে মাটি ক্রয়-বিক্রি সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ তাহলে আপনার কেনো আইন অমান্য করছেন’ এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন- ‘প্রতি বছর সরকারকে প্রচুর পরিমাণ ট্যাক্স দিয়ে আমরা ব্যবসা করি। এছাড়া স্থানীয় প্রশাসনকেও টাকা পয়সা দিয়ে ম্যানেজ করতে হয়।’

বাহুবল উপজেলা ব্রিকস ফিল্ড মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক শাহীন মিয়া বলেন- ‘অনেক কৃষক আমাদের কাছে এসে বলেন আমার জমিটা উঁচু হয়ে গেছে। আপনারা আমাদের মাটি কিনে আমাদের জমিটা বাঁচান। তাদের অনুরোধে অনেক সময় ভাটা মালিকরা ফসলি জমি থেকে মাটি কিনেন। না হলে কোনো ভাটা মালিক ফসলি জমি থেকে মাটি কেনেন না।’

এ ব্যাপারে বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা)-এর হবিগঞ্জ জেলার সাধারণ সম্পাদক তোফাজ্জল সোহেল বলেন- ‘ফসলি জমি থেকে প্রতিনিয়ত মাটি বিক্রির কারণে দিন দিন উৎপাদন কমে যাচ্ছে। ফলে দেখা দিতে পারে খাদ্য সংকট। পাশাপাশি হুমকির মুখে পড়ছে পরিবেশও। এ ব্যাপারে প্রশাসনকে আরও কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা উচিত।’

হবিগঞ্জ কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ-পরিচালক তমিজ উদ্দিন খাঁন বলেন- ‘ফসলি জমির উপরিভাগের মাটি অত্যন্ত উর্বর। এই উর্বর মাটি বিক্রির কারণে অধিক হারে কমে গেছে উৎপাদন। ফলে অর্জিত হচ্ছে না লক্ষ্যমাত্রা।’

কৃষকদের দাবি, ধানের ন্যায্যমূল্য না পাওয়ায় বাধ্য হয়ে ফসলি জমির মাটি বিক্রি করতে হচ্ছে
কৃষকদের দাবি, ধানের ন্যায্যমূল্য না পাওয়ায় বাধ্য হয়ে ফসলি জমির মাটি বিক্রি করতে হচ্ছে

তিনি বলেন- ‘উপরের যে উর্বর মাটি বিক্রি হচ্ছে, সেই মাটি পুনরায় তৈরি হতে সময় লাগে ৩/৪ বছর। কিন্তু অনেক কৃষক না জেনে মাটি বিক্রি করছেন আবার অনেকে জেনেও বিক্রি করছেন। এ ব্যাপারে আমাদের মাঠ পর্যায়ের কর্মকর্তাদের সতর্ক থাকতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।’

জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ কামরুল হাসান বলেন- ‘প্রতিনিয়ত মাটি বিক্রির বিরুদ্ধে অভিযান চলছে। যখন যেখানে খবর আসে ফসলি জমি থেকে মাটি কাটা হচ্ছে সেখানেই অভিযান চালানো হয়।’

   

গড়াই নদীতে ডুবে যুবকের মৃত্যু



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, কুষ্টিয়া
ছবি প্রতীকী

ছবি প্রতীকী

  • Font increase
  • Font Decrease

কুষ্টিয়ার খোকসায় গড়াই নদীতে ডুবে সুমন (২০) নামে এক যুবকের মৃত্যু হয়েছে।

রোববার (৫ এপ্রিল) বিকেলে খোকসা উপজেলার গনেশপুর অংশে গড়াই নদী থেকে মরদেহ উদ্ধার করা হয়।

মৃত সুমন কুমারখালী উপজেলার রাজাপুর গ্রামের নিজাম উদ্দিনের ছেলে।

খোকসা ফায়ার সার্ভিস স্টেশনের ফায়ারম্যান হাবিবুর রহমান জানান, সকালের দিকে গড়াই নদীতে মাছ ধরতে যান সুমন। মাছ ধরার এক পর্যায়ে নদীতে ডুবে যান তিনি। বিকেলের দিকে স্থানীয়দের সহায়তায় তার মরদেহ উদ্ধার করে ফায়ার সার্ভিস।

;

কুমিল্লার নাঙ্গলকোটে বজ্রপাতে কিশোরের মৃত্যু



ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, কুমিল্লা
প্রতীকী ছবি

প্রতীকী ছবি

  • Font increase
  • Font Decrease

কুমিল্লার নাঙ্গলকোটে ফুটবল খেলার সময় বজ্রপাতে সাফায়েত হোসেন (১৯) নামে একজনের মৃত্যু হয়েছে। এ সময় সালাউদ্দিন (২২) নামের আরেক যুবক গুরুতর আহত হন।

রোববার (৫ এপ্রিল) এই বিকেলে এই ঘটনা ঘটে। তাদের উদ্ধার করে সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে লাকসামের একটি ক্লিনিকে নেওয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক ওই কিশোরকে মৃত ঘোষণা করেন।

স্থানীয় সূত্র জানায়, উপজেলার আদ্রা দক্ষিণ ইউনিয়নের আটিয়াবাড়ি দক্ষিণপাড়া স্কুল বাড়ির আবদুল আউয়ালের ছেলে সাফায়াত হোসেন এদিন বিকেলে সহপাঠীদের সাথে পার্শ্ববর্তী ঘোড়াময়দান গ্রামের একটি মাঠে ফুটবল খেলতে যায়। বিকাল ৫টার দিকে খেলা চলা অবস্থায় আকস্মিক বজ্রপাতে সাফায়েতের পুরো শরীর ঝলসে যায়। তাৎক্ষনিকভাবে তাকে উদ্ধার করে লাকসামের একটি ক্লিনিকে নেয়া হলে সন্ধ্যায় কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

এছাড়া বজ্রপাতে ওই ঘোড়াময়দান গ্রামের নুরুল হকের ছেলে সালাউদ্দিন (২২) গুরুতর আহত হয়ে স্থানীয় একটি ক্লিনিকে চিকিৎসাধীন রয়েছে।

স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান আবদুল ওহাব ঘটনার এ ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।

;

লক্ষ্মী ভাইয়েরা বাসায় যান, নিজেসহ দেশকে বাঁচান



নাহিদ রেজা, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, ঠাকুরগাঁও
ওসি তানভিরুল ইসলাম।

ওসি তানভিরুল ইসলাম।

  • Font increase
  • Font Decrease

আমার লক্ষ্মী ভাইয়েরা দয়া করে বাইরে ঘোরাঘুরি না করে বাসায় যান। নিজে বাঁচেন, পরিবারকে বাঁচান, দেশকে বাঁচান। সচেতন হোন।

ঠিক এসব কথা বলে করোনাভাইরাস প্রতিরোধে জনগণকে সচেতন করছেন ঠাকুরগাঁও সদর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) তানভিরুল ইসলাম। মাঠ পর্যায়ে গিয়ে এভাবে সচেতন করায় সাধুবাদ জানিয়েছে সাধারণ মানুষ।

ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার রহিমানপুর ইউনিয়নের রেজাউল ইসলাম বলেন, ‘আমি ওষুধ কেনার জন্য স্থানীয় বাজারে এসেছিলাম। কিছুক্ষণ পর থানার একটি গাড়ি বাজারের সামনে এসে দাঁড়ায় এবং ওসি তানভিরুল সবাইকে বাসায় থাকার জন্য অনুরোধ করেন। এর আগে কখনো জনগণের সঙ্গে পুলিশের এমন ভালো আচরণ দেখি নাই।’

ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার চৌড়াস্তা মোড়ে কথা হয় জয়নাল নামে এক পথচারীর সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘আমাদের জেলার পুলিশ সাধারণ জনগণের সঙ্গে ভালো ব্যবহার করছে। তাদের ভাই বলে বাসায় ফিরে যাওয়ার জন্য অনুরোধ করছে। ওসিসহ পুলিশের সদস্যরা নিজেদের কথা চিন্তা না করে আমাদের জন্য এ কাজটি করে যাচ্ছেন। তাদের ধন্যবাদ জানাই।’

স্থানীয় সাহাদত হোসেন নামে একজন বলেন,‘তানভিরুল ভাই একজন মানবিক পুলিশ অফিসার। তার জন্য শুভকামনা ও দোয়া রইল।’

ঠাকুরগাঁও সদর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) তানভিরুল ইসলাম বার্তা২৪.কমকে বলেন, ‘করোনাভাইরাস নিয়ে আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই। এ ভাইরাস প্রতিরোধে আমাদের সবাইকে সচেতন হতে হবে। সরকার যেসব দিক নির্দেশনা দিয়েছে সেগুলো মেনে চলতে হবে। জনগণের সঙ্গে খারাপ ব্যবহার না করে তাদের সচেতন করা হচ্ছে। এতে কাজও হচ্ছে।’

;

ডিবি পরিচয়ে মোবাইল ছিনতাই, যুবক গ্রেফতার



ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, নীলফামারী
গ্রেফতার আবেদ আলী।

গ্রেফতার আবেদ আলী।

  • Font increase
  • Font Decrease

নীলফামারীতে গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) উপপরিদর্শক পরিচয়ে মোবাইল ছিনতাই করার অপরাধে আবেদ আলী (২৮) নামে এক যুবককে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।

রোববার (৫ এপ্রিল) বিকেলে নীলফামারী সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মমিনুল ইসলাম এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

আবেদ আলী সৈয়দপুর উপজেলার কাশিরাম বেলপুকুর ইউনিয়নের চওড়া গ্রামের খয়রাত হোসেনের ছেলে।

জানা গেছে, শনিবার (৪ এপ্রিল) দুপুরে জেলা সদরের কুন্দপুকুর ইউনিয়নের আঙ্গারপাড়া গ্রামে মোকছেদুল ইসলামসহ কয়েক যুবক মোবাইলে ভিডিও গেম খেলছিলেন। এ সময় আবেদ আলী নিজেকে সৈয়দপুর থানার ডিবি পুলিশের উপপরিদর্শক পরিচয় দিয়ে ওই যুবকদের কাছ থেকে মোবাইলটি নিয়ে যান। পরে এ বিষয়ে মোবাইলের মালিক মোকছেদুল ইসলাম সদর থানায় অভিযোগ করেন।

এরপর রোববার ভোরে আবেদ আলীর বাড়িতে অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেফতার করা হয়। ওই সময় তার কাছ থেকে ছিনতাই কাজে ব্যবহৃত একটি খেলনা পিস্তল ও ওয়্যারলেস সেট, একাধিক মোবাইল সিম এবং দুটি পরিচয়পত্র জব্দ করে পুলিশ।

নীলফামারী সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মমিনুল ইসলাম জানান, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে ডিবি পুলিশের ভুয়া পরিচয়ে মোবাইল ছিনতাই করার সত্যতা স্বীকার করেছেন আবেদ আলী। এ ঘটনায় মামলা দায়ের করার পর আদালতের মাধ্যমে তাকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।

;