মেঘনায় মাছ ধরায় ১০ দিনে ৩৫ জেলে আটক
লক্ষ্মীপুরে সরকারি নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে মেঘনা নদীতে মাছ ধরায় ১০ দিনে ৩৫ জেলেকে আটক করা হয়েছে। পরে ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে ২ জনকে কারাদণ্ড ও ৩৩ জনকে জরিমানা করা হয়। এ সময় জব্দ করা ৮ লাখ মিটার জাল পুড়িয়ে ধ্বংস করে প্রশাসন।
২৯ ফেব্রুয়ারি মধ্যরাত থেকে ১০ মার্চ সন্ধ্যা পর্যন্ত প্রশাসন অভিযান চালিয়ে তাদেরকে আটক করেছে। মঙ্গলবার (১০ মার্চ) সন্ধ্যায় জেলা মৎস্য কর্মকর্তা মোহাম্মদ বিল্লাল হোসেন বিষয়টি সংবাদমাধ্যমকে নিশ্চিত করেছেন।
জেলেদের অভিযোগ, কোস্টগার্ড, মৎস্য অফিস, নদী এলাকার ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান, মেম্বার ও ঘাট ইজারাদারদের টাকা দিয়ে নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে জেলেরা মাছ শিকারে যায়। তবে ভয়ে নির্দিষ্ট করে কারও নাম উল্লেখ করে না তারা। দাদনদার ও আড়তদারদের কাছ থেকে ঋণের টাকা পরিশোধ করতেই বাধ্য হয়ে তাদের এ কাজ করতে হয়।
সূত্র জানায়, বেসরকারি বিভিন্ন তথ্য মতে লক্ষ্মীপুর জেলায় প্রায় ৬২ হাজার জেলে রয়েছে। এর মধ্যে প্রায় ৫০ হাজার নিবন্ধিত জেলে আছে। কিন্তু মার্চ-এপ্রিলে নিষেধাজ্ঞার এই দুই মাসে ২৪ হাজার ২৪৭ জেলে সরকারি খাদ্য সহায়তা পাবেন। বাকি জেলেরা কার্ডধারী হলেও খাদ্য সহায়তা পাচ্ছেন না। আবার এসব জেলে নিষেধাজ্ঞার এ সময় অন্য কোন কাজও করেন না। এজন্য দাদনদার ও আড়তদারদের কাছ থেকে ঋণ নিয়ে সংসার চালাতে হয়। পরে দাদনদার ও আড়তদারদের চাপে পড়ে ঝুঁকি থাকা সত্ত্বেও তারা বাধ্য হয়ে মাছ শিকারে যায়।
জেলা মৎস্য কার্যালয় সূত্র জানায়, জাটকা সংরক্ষণ ও ইলিশের অভয়াশ্রম হওয়ায় লক্ষ্মীপুরের আলেকজান্ডার থেকে চাঁদপুরের ষাটনল পর্যন্ত ১০০ কিলোমিটার মেঘনা এলাকায় মার্চ-এপ্রিল দুই মাস নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে সরকার। কিন্তু নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে জেলেরা মাছ শিকারে যাচ্ছে। ৩৩ জন জেলের কাছ থেকে ১ লাখ ৯৩ হাজার টাকা জরিমানা আদায় করা হয়। অভিযান চালিয়ে প্রায় ৮০০ কেজি ইলিশ জব্দ করা হয়েছে। পরে সেগুলো জেলার বিভিন্ন এতিমখানা ও অসহায়দের মাঝে বিতরণ করা হয়।
এ ব্যাপারে লক্ষ্মীপুর জেলা মোহাম্মদ বিল্লাল হোসেন বলেন, উপজেলা প্রশাসন ও কোস্টগার্ডের সহায়তায় ১০ দিনে ৩৫ জন জেলেকে আটক করা হয়েছে। পরে ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে তাদেরকে জেল-জরিমানা করা হয়। সরকারি নির্দেশনা অনুযায়ী জাটকা সংরক্ষণে নদীতে আমাদের অভিযান অব্যাহত থাকবে।