জুলাইয়ে ৬ লেনের কাজ শুরু, অথচ খুঁটি বসাচ্ছে পল্লী বিদ্যুৎ

  • কাজল সরকার, ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, হবিগঞ্জ
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

মহাসড়কের দুই পাশে বসছে বিদ্যুতের খুঁটি/ছবি: বার্তা২৪.কম

মহাসড়কের দুই পাশে বসছে বিদ্যুতের খুঁটি/ছবি: বার্তা২৪.কম

আগামী জুলাইয়ে ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের ৬ লেনের কাজ শুরু হবে। সেই হিসেবে হাতে আছে মাত্র আর দুই মাস। অথচ ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের পাশ দিয়ে নতুন করে খুঁটি বসাচ্ছে পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি। এর ফলে সরকারের কয়েক কোটি টাকা গচ্চা যাবে। এ ব্যাপারে জেলা সড়ক বিভাগ চিঠির মাধ্যমে বাধা প্রদান করলেও মানছে না পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি।

জানা যায়, উত্তর-পূর্বাঞ্চলের পর্যটন ও শিল্পায়ন বিকাশের সুবিধার্থে সরকার প্রথমে ঢাকা-সিলেট মহাসড়ককে ৪ লেনে উন্নীত করার সিদ্ধান্ত নেয়। পরে সেই সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করে ৬ লেনে রূপান্তরের চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হয়। এ মোতাবেক আগামী জুলাই মাসে কাজ শুরু হবে বলে গত ২৪ ফেব্রুয়ারি সাংবাদিকদের জানান আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সড়ক পরিবহণ ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।

বিজ্ঞাপন

তিনি জানান, মার্চের মধ্যে উন্নয়ন প্রকল্প প্রস্তাবনা (ডিপিপি) প্রণয়ন কাজ শেষ হবে। এরপর কিছু আনুষ্ঠানিকতা শেষে প্ল্যানিং কমিশনে যাবে। সেখানে অনুমোদনের পর জুলাই থেকে নির্মাণ কাজ শুরু করা যাবে।

মন্ত্রীর ভাষ্য অনুযায়ী মহাসড়কের কাজ শুরু হতে দূরত্ব মাত্র দুই মাস। অথচ ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের পাশ দিয়ে বসানো হচ্ছে নতুন বৈদ্যুতিক খুঁটি। ফলে সেখানে সরকার কয়েক কোটি টাকা লোকসানের মুখে পড়বে বলে মনে করছে স্থানীয় সচেতন মহল।

বিজ্ঞাপন

জেলা সড়ক ও জনপথ বিভাগে নির্বাহী প্রকৌশলী মো. সজিব আহমেদ বলেন, হবিগঞ্জে ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের ৮২ কিলোমিটার অংশে দুই পাশে রয়েছে পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির একাধিক বিদ্যুতের লাইন। এগুলো অপসারণ করতে অতিরিক্ত কয়েক কোটি টাকা ব্যয় হবে সরকারের।

তিনি বলেন, এখন মহাসড়কে ৬ লেনের কাজ শুরু হতে সকল প্রক্রিয়া শেষ। মন্ত্রী মহোদয় জানিয়েছেন আগামী জুলাই মাসে ৬ লেনের কাজ শুরু হবে। অথচ পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি মহাসড়কের পাশ দিয়ে নতুন বৈদ্যুতিক খুঁটি বসাচ্ছে। যার ফলে সরকারের দ্বিগুণ অর্থ সেখানে অপচয় হবে।

প্রকৌশলী বলেন, এখন লাইন বসালে যে টাকা খরচ হবে তার চেয়ে বেশি টাকা খরচ হবে কিছুদিন পরে লাইন অপসারণ করতে। যার কারণে আমি নতুন খুঁটি না বসাতে পল্লী বিদ্যুৎ সমিতিকে দুটি চিঠি দিয়েছি। কিন্তু তারা এখন পর্যন্ত আমাদের চিঠির কোন উত্তর না দিয়েই খুঁটি বসানো অব্যাহত রেখেছে। বাধ্য হয়ে আমি জেলা প্রশাসক বরাবরে একটি লিখিত আবেদন জানিয়েছি।

এ ব্যাপারে শায়েস্তাগঞ্জ পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির জেনারেল ম্যানেজার (জিএম) মোতাহার হোসেন বলেন, ঢাকা-সিলেট মহাসড়ক হবিগঞ্জ অংশে ৮২ কিলোমিটার হলেও আমরা সম্পূর্ণ অংশে নতুন খুঁটি বসাচ্ছি না। মাত্র ১২/১২ কিলোমিটার অংশে নতুন খুঁটি বসানো হচ্ছে। কারণ এই লাইনটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ, তাই অতিরিক্ত অর্থ অপচয় হলেও আমাদের কিছু করার নেই। বাধ্য হয়ে আমাদের খুঁটি বসিয়ে লাইন টানতে হচ্ছে। এ লাইনটি দ্রুত চালু না হলে বিভিন্ন শিল্পপ্রতিষ্ঠানসহ বিশাল এলাকায় বিদ্যুৎ সমস্যা দেখা দেবে।

এ ব্যাপারে জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ কামরুল হাসান বলেন- মন্ত্রী মহোদয় জানিয়েছেন ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের কাজ জুলাইয়ে শুরু হবে। যা আমরা মিডিয়ার মাধ্যমে জেনেছি। কিন্তু চিঠি-পত্রের মাধ্যমে এখন পর্যন্ত আমাদের কাছে লিখিতভাবে মন্ত্রণালয় থেকে কিছু জানানো হয়নি। তাই এ ব্যাপারে এখন কিছু বলা সম্ভব নয়। মন্ত্রণালয় থেকে আমাদেরকে চিঠির মাধ্যমে জানালে বিষয়টি দেখা যাবে।