যৌনপল্লী বন্ধে খুশি যৌনকর্মীরা

  • সোহেল মিয়া, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, রাজবাড়ী
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

দৌলতদিয়া যৌনপল্লী/ছবি: বার্তা২৪.কম

দৌলতদিয়া যৌনপল্লী/ছবি: বার্তা২৪.কম

করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাব কমাতে জনসমাগমরোধে দেশের বৃহৎ পতিতাপল্লী রাজবাড়ীর গোয়ালন্দের দৌলতদিয়া যৌনপল্লী ২০ দিনের জন্য বন্ধ ঘোষণা করেছে রাজবাড়ী পুলিশ প্রশাসন। ২০ মার্চ থেকে বন্ধ ঘোষণার পর জনশূন্য হয়ে পড়েছে এ পল্লী। যেখানে প্রতিদিন গড়ে সাড়ে তিন হাজার মানুষ প্রবেশ করতো সেখানে এখন প্রবেশের সংখ্যা শূন্যে নেমে এসেছে।

পতিতাপল্লীর ৫টি গেটের চারটিই বন্ধ করে দিয়েছে পুলিশ। শুধু মাত্র প্রধান গেইটটি খোলা রেখেছে পতিতাপল্লীর বাসিন্দাদের নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসের চাহিদা মেটানোর জন্য। তবে প্রধান এই গেইট দিয়ে যাতে কোনো খদ্দের প্রবেশ করতে না পারে সেজন্য চব্বিশ ঘণ্টা পুলিশ পাহারায় আছে।

বিজ্ঞাপন

রাজবাড়ী পুলিশ প্রশাসন বৃহৎ এই পতিতাপল্লী সাময়িক বন্ধ ঘোষণা করলেও এ পাড়ার প্রায় সাড়ে ৫ হাজার বাসিন্দা এতে খুশি। বন্ধ ঘোষণাকে তারা সময়োপযোগী সিদ্ধান্ত বলে পুলিশ সুপার মিজানুর রহমানকে সাধুবাদ জানিয়েছেন।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে একাধিক যৌনকর্মী বার্তা২৪.কমকে বলেন, আমরা সমাজের সবচেয়ে অবহেলিত মানুষ। আমরা অন্ধকার জগতে বাস করি। তাই আমাদের খবর কেউ রাখেনা। কিন্তু করোনাভাইরাস থেকে আমাদের রক্ষা করার জন্য পুলিশ সুপার স্যার যে উদ্যোগ নিয়েছেন তাতে আমরা ভীষণ খুশি। কারণ করোনাভাইরাস যেভাবে মানুষের দেহে প্রবেশ করছে তাতে আমরা ছিলাম সবচেয়ে বেশি ঝুঁকিতে।

বিজ্ঞাপন

বন্ধ ঘোষণা করায় সাময়িক কিছুটা সমস্যার সম্মুখীন হলেও বৃহৎ স্বার্থে তারা এ সিদ্ধান্ত মেনে নিয়ে বলেন, আমাদের মঙ্গলের জন্যই এই সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়েছে।

রাজবাড়ী পুলিশ সুপার মো: মিজানুর রহমান বার্তা২৪.কমকে বলেন, করোনাভাইরাস প্রাদুর্ভাব রোধে সরকার সব ধরনের জনসমাগম নিষিদ্ধ করেছেন। তারই ধারাবাহিকতায় আমি এটা করেছি। কারণ এই পল্লীতে মানুষের অবাধ বিচরণ রয়েছে। যা খুবই ঝুঁকিপূর্ণ। তাই প্রথমেই আমি এটা বন্ধ করার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করি।

উল্লেখ্য, দৌলতদিয়া পতিতাপল্লীতে প্রতিদিন গড়ে সাড়ে তিন হাজার মানুষ অবাধে চলাচল করে। আর এখানে প্রায় সাড়ে ৫ হাজার যৌনকর্মী ও তাদের পরিবারের সদস্য রয়েছে। ভোটার রয়েছে প্রায় ১ হাজার ৩০০।

সাময়িক বন্ধের জন্য সরকার এখানকার যৌনকর্মীদের জন্য ৫৪ মেট্রিকটন চাল ও ৩৬ লাখ নগদ টাকা বরাদ্দ দিয়েছে।