আইসিজে মিয়ানমারের আপত্তি খারিজে রোহিঙ্গা গণহত্যার বিচারের পথ সুগম করেছে

  • ব্রি. জে. (অব.) হাসান মো. শামসুদ্দীন
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

ছবি: বার্তা২৪.কম

ছবি: বার্তা২৪.কম

২০১৭ সালের আগস্টে রাখাইনে রোহিঙ্গাদের ওপর মিয়ানমার সেনাবাহিনীর হত্যা, ধর্ষণ, জাতিগত নিধন ও অগ্নিসংযোগের মুখে প্রায় সাড়ে সাত লাখ রোহিঙ্গা প্রাণ বাঁচাতে পালিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নিতে বাধ্য হয়। গণহত্যার উদ্দেশ্য নিয়েই রোহিঙ্গাদের ওপর হামলা চালানো হয়েছে বলে জাতিসংঘের তদন্তকারী দল তাদের মত প্রকাশ করেছিল। এই নৃশংসতাকে গণহত্যা আখ্যা দিয়ে গাম্বিয়া ২০১৯ সালের ১১ নভেম্বর ইন্টারন্যাশনাল কোর্ট অব জাস্টিসে (আইসিজে) মামলা দায়ের করে এবং গণহত্যার তদন্ত শুরু না হওয়া পর্যন্ত মিয়ানমার সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে গণহত্যা বন্ধে জরুরি ব্যবস্থা নেওয়ার আহ্বান জানায়।

২০১৯ সালের জুনে সৌদি আরবের মক্কায় অনুষ্ঠিত অর্গানাইজেশন অব ইসলামিক কনফারেন্সের (ওআইসি) ১৪তম সম্মেলনে রোহিঙ্গা ইস্যুটিকে আইসিজেতে তুলে ধরার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।ওআইসি'র এড-হক মিনিস্ট্রিয়াল কমিটিকে এই দায়িত্ব দেওয়া হয়, এই কমিটির নেতৃত্বে রয়েছে গাম্বিয়া।ওআইসি'র সমর্থনে মিয়ানমারের বিরুদ্ধে গাম্বিয়া এই মামলা করেছিল। অভিযোগে গাম্বিয়া, মিয়ানমারের রোহিঙ্গাদের ওপর নৃশংস সামরিক অভিযান চালানোর মাধ্যমে ১৯৪৮ সালে গৃহীত জাতিসংঘের মানবাধিকার সনদ লঙ্ঘন করেছে বলে উল্লেখ করা হয়। মিয়ানমার ও গাম্বিয়া ১৯৪৮ সালের জেনোসাইড কনভেনশনে স্বাক্ষরকারী দেশ।

বিজ্ঞাপন

১৯৪৭ সালে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদ গণহত্যাকে আন্তর্জাতিক অপরাধ হিসেবে চিহ্নিত করে। ১৯৪৮ সালে জাতিসংঘের উদ্যোগে গণহত্যা বন্ধ এবং এর জন্য রাষ্ট্রের দায় নির্ধারণ করে গণহত্যা কনভেনশনটি গৃহীত হয়। এতে সদস্য রাষ্ট্রগুলোর ওপর তাদের নিজ ভূখণ্ডে সংগঠিত গণহত্যার বিচার করার বাধ্যবাধকতাও রয়েছে। গণহত্যা কনভেনশনের ৯ অনুচ্ছেদে এই কনভেনশনের কোনো রকম লঙ্ঘন হলে অভিযুক্ত রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে অন্য যেকোনো রাষ্ট্র আইসিজেতে মামলা করতে পারবে। ১৯৪৯ সালে কনভেনশনটির পক্ষরাষ্ট্র হওয়ার সময় মিয়ানমার ৯ অনুচ্ছেদে কোনো আপত্তি জানায়নি। গাম্বিয়া ১৯৭৮ সালে কনভেনশনটির পক্ষ হয়। ফলে মিয়ানমারের বিরুদ্ধে মামলাটি করতে কোনো সমস্যা হয়নি।মামলাটিতে দায়ের করা অভিযোগপত্রে ২০১৭ সালে রাখাইনে রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর বিরুদ্ধে গণহত্যা, ধর্ষণ ও তাদের পরিকল্পিতভাবে উৎখাত করার দায়ে মিয়ানমারকে অভিযুক্ত করে দায়ী ব্যক্তিদের শাস্তি, ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য ক্ষতিপূরণের আবেদন এবং অন্তর্বর্তীকালীন ব্যবস্থা হিসেবে রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে নিপীড়নমূলক আচরণগুলো জরুরি ভিত্তিতে বন্ধ করার নির্দেশ চাওয়া হয়েছিল।

২০১৯ সালের ১০ থেকে ১২ ডিসেম্বর পর্যন্ত দ্য হেগ শহরের পিস প্যালেসে এই মামলার শুনানি চলে। এই শুনানিতে বাংলাদেশের সাবেক পররাষ্ট্র সচিব শহীদুল হকের নেতৃত্বে, রোহিঙ্গাদের তিনজন প্রতিনিধিসহ ২০ সদস্যের একটি দল অংশ নিয়েছিল। ১০ ডিসেম্বর বিচারমন্ত্রী আবুবাকার তাম্বাদুর নেতৃত্বে গাম্বিয়ার প্রতিনিধি দল আদালতে গণহত্যার বিষয়ে তাদের বক্তব্য উপস্থাপন করে। শুনানির সময় বিচারমন্ত্রী আবুবাকার তাম্বাদু গাম্বিয়ার পক্ষে মামলার প্রতিনিধিত্ব করেন। ১১ ডিসেম্বর, মিয়ানমারের প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দেন মিয়ানমারের তৎকালীন সরকার প্রধান অং সান সু চি। সেখানে তিনি তার দেশের বিরুদ্ধে আনা গণহত্যার অভিযোগ অস্বীকার করেন।শুনানির সময় সু চি আইসিজের এই মামলাকে ‘অসম্পূর্ণ ও ভুল’ হিসেবে আখ্যা দিয়ে মামলাটি বাতিল করে দেওয়ার আহ্বান জানান। মানবাধিকার সংগঠনগুলো অপরাধমূলক তদন্তের যথাযথ প্রক্রিয়া ছাড়াই মিয়ানমারের নিন্দা করে এসব অপ্রমাণিত বিবৃতি দিচ্ছে বলে অং সান সু চি আদালতে জানান এবং এই সব বিবৃতি রাখাইনে স্থিতিশীলতা এবং অগ্রগতি আনতে মিয়ানমারের প্রচেষ্টায় এই আন্তর্জাতিক নিন্দা নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে বলে উল্লেখ করেন। ২০১৯ সালের ১২ ডিসেম্বর এই মামলার শুনানি শেষ হয়।

বিজ্ঞাপন

গাম্বিয়া ২০১৯ সালের নভেম্বরে রোহিঙ্গাদের সুরক্ষা দেওয়ার নির্দেশনা চেয়ে আন্তর্জাতিক আদালতের শরণাপন্ন হয়েছিল। গাম্বিয়ার আবেদনের ভিত্তিতে আন্তর্জাতিক বিচার আদালতের ১৭ জন বিচারক সর্বসম্মতভাবে ২০২০ সালের ২৩ জানুয়ারিতে রোহিঙ্গাদের গণহত্যা থেকে সুরক্ষা দেওয়ার জন্য মিয়ানমারের প্রতি চার দফা নির্দেশনা দিয়ে একটি অন্তর্বর্তী আদেশ জারি করেছিলেন। এতে, মিয়ানমারকে তার সীমানার মধ্যে রোহিঙ্গাদের হত্যা, জখম বা মানসিকভাবে আঘাত করা, পুরো জনগোষ্ঠী বা তার অংশ বিশেষকে নিশ্চিহ্ন করা এবং তাদের জন্মদান বন্ধের ওপর বিধিনিষেধ আরোপ থেকে অবশ্যই নিবৃত্ত থাকা, মিয়ানমার সেনাবাহিনী বা অন্য কোনো অনিয়মিত সশস্ত্র ইউনিট বা তাদের সমর্থনে অন্য কেউ যাতে গণহত্যা সংঘটন, গণহত্যার ষড়যন্ত্র, প্রকাশ্যে বা অপ্রকাশ্যে গণহত্যার জন্য উসকানি দেওয়া, গণহত্যার চেষ্টা করা বা গণহত্যার সহযোগী হতে না পারে, সেটা নিশ্চিত করা, গণহত্যার অভিযোগের সঙ্গে সম্পর্কিত সব সাক্ষ্যপ্রমাণ রক্ষা এবং তার ধ্বংস সাধনের চেষ্টা প্রতিরোধ করার এবং আইসিজের অন্তর্বর্তী আদেশে মিয়ানমার কী পদক্ষেপ নিয়েছে, তা পরবর্তী চার মাসে আদালতকে অবহিত করতে বলা হয়। পরে প্রতি ছয় মাস পরপর আদালতকে মিয়ানমার ওই অন্তর্বর্তী আদেশের বিষয়ে কী পদক্ষেপ নিয়েছে সে সম্পর্কে হালনাগাদ তথ্য দেওয়ার নির্দেশনা দেওয়া হয়।

রোহিঙ্গাদের জন্য এটা অত্যন্ত আশাব্যঞ্জক একটা রায়। আন্তর্জাতিক বিচারিক আদালতের এই আদেশ মানতে মিয়ানমার বাধ্য। যদিও আদালত এজন্য তাদের ওপর চাপ প্রয়োগ করতে পারবে না। তবে এই রায় উপেক্ষা করাও মিয়ানমারের জন্য কঠিন হবে । ১ ফেব্রুয়ারি ২০২১ এ সামরিক সরকার ক্ষমতায় আসার আগে আইসিজেতে দুই দফা প্রতিবেদন জমা দিয়েছিল মিয়ানমার। এই আদেশ নৈতিকভাবে রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠী এবং তাদের আশ্রয়প্রদানকারী দেশ হিসেবে বাংলাদেশ আন্তর্জাতিক অঙ্গণে গ্রহণযোগ্যতা এনে দিয়েছিল।

২০২০ সালের জানুয়ারিতে আদালত মামলার দুই পক্ষ গাম্বিয়া ও মিয়ানমারকে তাদের প্রতিবেদন ও প্রতিবেদনের জবাব দেওয়ার সময়সীমা নিদিষ্ট করে দেয়। গণহত্যার মূল মামলার বিষয়ে আদালত গাম্বিয়াকে ২০২০ সালের ২৩ জুলাই এবংমিয়ানমারকে তার জবাব দেওয়ার জন্য ২০২১ সালের ২৫ জানুয়ারি পর্যন্ত সময় দিয়েছিল। করোনা মহামারির কারণে গাম্বিয়া অতিরিক্ত সময়ের আবেদন করলে তাদেরকে ২০২০ সালের ২৩ অক্টোবর পর্যন্ত এবং মিয়ানমারকে তার জবাবের জন্য ২০২১ সালের ২৩ জুলাই পর্যন্ত সময় বাড়িয়ে দেয় আদালত। গাম্বিয়া তার বক্তব্য ২০২০ সালের ২৩ অক্টোবরের মধ্যে আদালতে পেশ করেছিল কিন্তু মিয়ানমার তাদের জবাবের বদলে ২০২১ সালের ২০ জানুয়ারিতে মামলার বিষয়ে তাদের প্রাথমিক আপত্তির আবেদন জানায়, এর ফলে মূল মামলা স্থগিত হয়ে যায়।

মিয়ানমার আপত্তি জানিয়েছিল যে এই মামলা পরিচালনার অধিকার এই আদালতের নেই। এ ধরনের মামলা করার জন্য কোনও দেশের সর্বজনীন ক্ষমতাও নেই। রোম সনদের আট নম্বর অনুচ্ছেদ এখানে প্রযোজ্য নয় এবং গাম্বিয়া ও মিয়ানমারের মধ্যে রোহিঙ্গা ইস্যু নিয়ে কোনও বিরোধ ছিল না। ২০২১ সালের ডিসেম্বরে আদালত প্রাথমিক আপত্তির ওপর শুনানির তারিখ নির্ধারণ করলেও করোনা মহামারির কারণে মিয়ানমার তা পিছিয়ে দেওয়ার আবেদন জানায়। এরপর ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে আপত্তির ওপর শুনানি অনুষ্ঠিত হয়।

২০২২ সালের ২১ ফেব্রুয়ারি মিয়ানমারের প্রাথমিক আপত্তির ওপর শুনানি শুরু হয়। ২৮ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত চার দিন বিষয়টির ওপর আদালত উভয় পক্ষের যুক্তি ও পাল্টা যুক্তি শোনেন। মিয়ানমারের উত্থাপন করা চারটি বিষয়ে প্রাথমিক আপত্তির সবগুলোই আদালত প্রত্যাখ্যান করেছে। ১৬ সদস্যের আদালত ১৫-১ ভোটে গাম্বিয়ার দায়ের করা গণহত্যার মামলা বিচারের জন্য গ্রহণ করেছেন। নেদারল্যান্ডসের হেগে কোর্টের প্রেসিডেন্ট জুয়ান ই ডোনাহো প্রায় ৫০ মিনিটের রায়ে মিয়ানমারের চারটি আপত্তি খারিজ করে দেন।

রায়ে বলা হয়েছে, এই মামলা চালানো নিয়ে আর কোন সমস্যা নেই।

মিয়ানমারে সামরিক অভ্যুত্থানের পর এনএলডিসহ দেশটির বিরোধী দলগুলো ১৬ এপ্রিল ২০২১ ন্যাশনাল ইউনিটি গভর্নমেন্ট (এন ইউ জি) গড়ে তুলেছে। ২০২১ সালের ৩ জুন রোহিঙ্গাদের ব্যাপারে এন ইউ জি যে নীতি ঘোষণা করেছে তাতে বেশ কয়েকটি অঙ্গীকার করা হয়েছে। এতে মিয়ানমারের সামরিক বাহিনীর হাতে রোহিঙ্গারা যে হত্যা-নির্যাতন-নিপীড়নের শিকার হয়েছে, তার স্বীকৃতির পাশাপাশি যারা এর জন্য দায়ী, তাদের বিচারের কথা বলা হয়েছে। এই ঘোষণায় ১৯৮২ সালের নাগরিকত্ব আইন বিলোপের অঙ্গীকার আছে যার মাধ্যমে রোহিঙ্গাদের অধিকার হরণ করা হয়েছিল। এটি এন ইউ জি'র তরফ থেকে নেওয়া খুবই গুরুত্বপূর্ণ এক পদক্ষেপ। এখানে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হচ্ছে 'রোহিঙ্গা' পরিচয়ের স্বীকৃতি। এন ইউ জি'র এই ঘোষণা মিয়ানমারের রোহিঙ্গাদের অধিকার নিয়ে সক্রিয় গ্রুপগুলোর মধ্যেও আশাবাদ তৈরি করেছে এবং আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় এটাকে একটি ইতিবাচক পদক্ষেপ হিসেবে দেখছে। প্রতিবেশী দেশ হিসেবে আমাদেরকে কূটনৈতিক সম্পর্ক বজায় রেখে পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করতে হবে এবং বাংলাদেশের স্বার্থে তা কাজে লাগাতে হবে।

২০১৯ সালে রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় থাকাকালে এ বিচারকাজে প্রাথমিক আপত্তি জানিয়েছিলেন অং সান সু চি। আইসিজেতে দেওয়া সু চির বক্তব্য সেনাঅভ্যুত্থানের পর বদলে যায় এবং আইসিজেতে করা মামলার বিচারকার্যের ওপর থেকে এনইউজি এই আপত্তি তুলে নেয়। এতে জান্তা সরকার এখন যেসব নৃশংস অপরাধ সংঘটিত করছে, সেগুলো বন্ধ হওয়ার পথ তৈরি হবে। জান্তাবিরোধী এ সরকার আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি আদায়ের চেষ্টা করছে। বর্তমানে তারা রোহিঙ্গা ইস্যুতে বেশ নমনীয় অবস্থান নিয়েছে এবং এরই অংশ হিসেবে ওই বিচার প্রক্রিয়া নিয়ে সু চির আপত্তি তুলে নিয়েছে। আদালতে মিয়ানমারের সামরিক সরকারের অবস্থান কিছুটা দুর্বল হয়েছে। কারণ, ২০১৯ সালে অং সান সুচি আদালতে দাঁড়িয়ে মিয়ানমারকে রক্ষা করার চেষ্টা করেছিলেন। কিন্তু বর্তমানে এনইউজির অবস্থানের পরিবর্তনে মিয়ানমার সরকারের যুক্তিগুলো দুর্বল হয়ে পড়েছে।

আইসিসি, রাখাইন থেকে রোহিঙ্গাদের বহিষ্কারের মাধ্যমে মানবতাবিরোধী অপরাধ হয়েছে কি না সে বিষয়ে পূর্ণাঙ্গ তদন্তের জন্য মিয়ানমারের সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে প্রমাণ সংগ্রহ করছে। মিয়ানমারের রাখাইন প্রদেশে বহু দশক ধরে রোহিঙ্গারা মিয়ানমার সেনাবাহিনীর নিপীড়ন ও নির্যাতনের শিকার হয়েছে, রোহিঙ্গাদের ওপর মিয়ানমারের সেনাবাহিনীর কয়েক যুগের নৃশংসতার ন্যায়বিচার নিশ্চিতের ক্ষেত্রে এটা একটা গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ। রোম সনদে স্বাক্ষরকারী দেশ হিসেবে বাংলাদেশ আইসিসির পক্ষে এবং এই প্রক্রিয়ায় বাংলাদেশ আইসিসিকে সহযোগিতা করে যাচ্ছে।

বাংলাদেশ মনে করে, আন্তর্জাতিক ন্যায়বিচার ও জবাবদিহি রোহিঙ্গা সংকটের স্থায়ী সমাধানের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ। আদালতের দেওয়া রায়কে স্বাগত জানিয়েছে বাংলাদেশ। এ রায়ের ফলে মিয়ানমারের বিরুদ্ধে রোহিঙ্গা গণহত্যা মামলার শুনানির পথ খুলে গেল। এখন মিয়ানমার চাপে থাকবে এবং তাদেরকে এই মামলায় চালিয়ে যেতে হবে। সামনের দিনগুলোতে এই মামলার সুষ্ঠু পরিচালনার জন্য রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক সমর্থন দরকার। এক্ষেত্রে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়, আঞ্চলিক দেশগুলোকে অগ্রণী ভূমিকা পালন করতে হবে। মিয়ানমারে রোহিঙ্গাদের জন্য নিরাপদ প্রত্যাবাসনই এই সংকটের প্রকৃত সমাধান।

দায়ের করা মামলা কূটনৈতিক তৎপরতা আরও বেগবান করার সুযোগ করে দিয়েছে, বাংলাদেশকে এ সুযোগ গ্রহণ করতে হবে।আন্তর্জাতিক অঙ্গণে রোহিঙ্গা সংকট সমাধানের জন্য বাংলাদেশ নিরলস প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। আইসিজের এই সিদ্ধান্ত রোহিঙ্গা সমস্যার সুবিচার নিশ্চিত করার পাশাপাশি স্থায়ীভাবে এই সমস্যা সমাধানে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে ও আঞ্চলিক স্থিতিশীলতা ফিরে আসবে এটাই প্রত্যাশা।

ব্রি. জে. (অব.) হাসান মো. শামসুদ্দীন, এনডিসি, এএফডব্লিউসি, পিএসসি, এমফিল, মিয়ানমার ও রোহিঙ্গা বিষয়ক গবেষক।