এলাকাবাসীকে বাঁচাতে নিজেই চলে গেলেন না ফেরার দেশে
ঘড়ির কাটায় রাত আড়াইটা। ঘুমন্ত গৃহবধূ রহিমা আক্তার (৫০) চোখ খুলেই দেখতে পেলেন ঘরে আগুন জ্বলছে। তড়িঘড়ি করে প্রতিবেশী রুবি আক্তারকে ডাক দিতেই দেখলেন দাবানলের মতো ছড়িয়ে পড়া আগুনে জ্বলছে পুরো বস্তি।
বাসায় দুই ছেলে ও দুই মেয়েকে রেখেই রহিমা ব্যস্ত হয়ে পড়লেন ঘুমন্ত কলোনীর মানুষকে ডেকে তোলার দায়িত্বে। এর মধ্যেই আগুনের তীব্রতা বেড়ে গেলে দিগ্বিদিক ছোটাছুটি করে প্রাণ রক্ষায় বস্তির পাশে অবস্থিত ব্রিজে অবস্থান নেয় এলাকাবাসী।
রোববার (১৭ ফেব্রুয়ারি) গভীর রাতে চট্টগ্রামের চাক্তাইয়ের ভেড়ামারা মার্কেট বস্তিতে ভয়াবহ এই অগ্নিকাণ্ডে আটজনের মৃত্যু হয়েছে। এদের মধ্যে রহিমাসহ তার চার সন্তানের মৃত্যু হয়েছে।
রাতে আগুনে রহিমা ছাড়াও তার পরিবারের বড় মেয়ে নাজমা, ছেলে বাবু, নাসরিন মারা যায়। বেঁচে যায় এক ছেলে। বর্তমানে তাকে হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। মাছ আর মুদি দোকান করে তার সংসার চলতো।
অগ্নিকাণ্ড শেষে সকালে বসতভিটায় বসে রাতের দুর্বিষহ স্মৃতির কথা বার্তা২৪.কমকে জানালেন অগ্নিকাণ্ডের শিকার রুবি আক্তার।
চাক্তাই এলাকায় মাছের ব্যবসার সঙ্গে সম্পৃক্ত রুবির তিন ছেলে। রাত দুইটায় কাজ থেকে বাসায় ফেরেন তারা। পরবর্তীতে রাত আড়াইটার দিকে তার প্রতিবেশী রহিমা বস্তিতে আগুন লাগার কথা জানায়।
রুবি আক্তার বলেন, ‘সে সন্তানদের বাদ দিয়ে আমাদের ডাকতে শুরু করেন। দুই সপ্তাহ পরে তার বড় মেয়ে নাজমার (১৭) বিয়ের কথা ছিল। আমাদের বাঁচাতে গিয়ে সে মারা গেলো’। তিনি আরও জানান, অগ্নিকাণ্ডে রুবির ডিপিএসের এক লক্ষ টাকা ও বেশ কিছু স্বর্ণালংকার পুড়ে গেছে।
রুবি জানায়, ইতোপূর্বে বস্তি ছেড়ে চলে যাওয়ার জন্য স্থানীয় প্রশাসন থেকে তাদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল। এর মধ্যে বেশ কিছু মানুষ এলাকা ছেড়ে চলে গেছেন।