এক বস্তা ধানেও মিলছে না দুই শ্রমিক
সাতক্ষীরার মাঠে মাঠে এখন পাকা ধান। প্রখর রোদ আর গরমে মানুষের হাঁস ফাঁস অবস্থা। আকাশে মেঘ দেখলেই কপালে ভাঁজ পড়ছে কৃষকদের। কষ্টের ফসল ঘরে তুলবেন কীভাবে? ধানকাটা শ্রমিক সংকটে পড়েছেন জেলার কৃষকরা। এক বস্তা ধানেও মিলছে না দুইজন শ্রমিক।
কৃষকরা জানান, মাঠে ধান পাকলেও শ্রমিক সংকটের কারণে ধান কাটতে পারছেন না তারা। পুরুষ শ্রমিক সংকট থাকায় নারী শ্রমিকরাই নামছেন মাঠে।পুরুষের সঙ্গে সমান তালে কাজ করছেন নারীরাও। একজন পুরুষ শ্রমিকের জন্য মজুরি গুণতে হচ্ছে ৫০০ থেকে ৬০০টাকা। আর একজন নারী শ্রমিক মিলছে ৩৫০ থেকে ৪০০টাকায়। তারপরও পর্যাপ্ত শ্রমিক না পেয়ে চিন্তিত হয়ে পড়েছেন কৃষক।
সাতক্ষীরা সদর উপজেলার ফিংড়ি এলাকার মৃনাল কুমার বিশ্বাস বলেন, ধানকাটা মৌসুম শুরু হয়েছে আরও কয়কদিন আগে। কিন্তু এখন ভরা মৌসুম। এই ভরা মৌসুমে মিলছে না শ্রমিক। বৈশাখে তপ্ত রোদে কেউ মাঠে শ্রমিকের কাজ করতে যেতে চান না।
একই কথা জানালেন বালিথা এলাকার হাফিজুল ইসলাম। তিনি বলেন, শ্রমিক না পেয়ে বাধ্য হয়ে নিজেদেরই মাঠে নামতে হচ্ছে।
জেলার কৃষকরা জানান, শ্রমিকের মজুরি বেশি হলেও ধানের দাম নেই। উৎপাদনের একটি বড় অংশ চলে যাচ্ছে ধান কাটা ও মাড়াইয়ের কাজে। খরচ বাদ দিয়ে দিয়ে লাভ থাকছে না তাদের।
সাতক্ষীরা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর জানায়, এবার সাতক্ষীরাতে ধানের ফলন ভালো হয়েছে। লক্ষ্যমাত্রাও অর্জিত হয়েছে। এখনো ৫০ থেকে ৭০ শতাংশ জমিতে ধান রয়েছে। তবে শ্রমিক সংকটের কারণে কৃষকেরা চিন্তিত।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, চলতি মৌসুমে সাতক্ষীরা সাতটি উপজেলায় ৭৩ হাজার ৮৬২ হেক্টর জমিতে বোরো আবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়। উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয় ৩ লাখ ৬২৬ মেট্রিক টন চাল। আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় জেলায় নির্ধারিত লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে ৭৬ হাজার ৩৪৫ হেক্টর জমিতে বোরো ধানের আবাদ হয়েছে।
শ্রমিক সংকটের কথা স্বীকার করে সাতক্ষীরা জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক কৃষিবিদ অরবিন্দ মণ্ডল জানান, এ বছর জেলায় ৭৬ হাজার ৩৪৫ হেক্টর জমিতে বোরো ধানের আবাদ হয়েছে। যা লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ৩ হাজার হেক্টর বেশি। কিন্তু শ্রমিক সংকটের কারণে ধান তুলতে একটু সমস্যা হচ্ছে।