রায়পুরে দুই আ’লীগ নেতার দ্বন্দ্বে ঝরছে রক্ত
লক্ষ্মীপুরের রায়পুর উপজেলার উত্তর চরবংশী ইউনিয়নে মাছঘাট দখল ও আধিপত্য বিস্তার নিয়ে দুই আওয়ামী লীগ নেতার দ্বন্দ্বে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েছে নেতাকর্মীরা।
শুক্রবার (১০ মে) সকাল থেকে শনিবার (১১ মে) দুপুর পর্যন্ত তিন দফায় সংঘর্ষে ১৬ জন নেতাকর্মীর রক্ত ঝরেছে।
এদিকে দফায় দফায় রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের ঘটনা ঘটলেও এখন পর্যন্ত থানায় কোন মামলা করা হয়নি। তবে অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে ওই ইউনিয়নের খাসেরহাটসহ গুরুত্বপূর্ণ স্থানে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। আওয়ামী লীগের দু’গ্রুপের নেতাসহ সংশ্লিষ্টদের শান্ত থাকার জন্য নির্দেশ দিয়েছে পুলিশ।
স্থানীয়রা জানিয়েছে, উপজেলার উত্তর চরবংশী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি আলতাফ হোসেন হাওলাদার ও ইউনিয়ন কমিটির বর্তমান আহ্বায়ক ওসমান খাঁনের অনুসারিদের মধ্যে দ্বন্দ্ব চলছে। আলতাফ হোসেন উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান। উপজেলা পরিষদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে এ দ্বন্দ্ব চরম আকার ধারণ করে। ওই নির্বাচনে আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী হওয়ায় আলতাফ হোসেনের নেতৃত্বাধীন ইউনিয়ন কমিটি বিলুপ্ত করে ওসমান খাঁনকে দায়িত্ব দেওয়া হয়।
শনিবার (১১ মে) সকালে ওসমান খাঁনের অনুসারীরা খাসেরহাট এলাকায় যুবলীগ নেতা আক্তার হোসেনকে পিটিয়ে রক্তাক্ত ও জখম করে। আক্তার একই এলাকার মজিবুর রহমানের ছেলে। তিনি আলতাফ হোসেনের অনুসারী হিসেবে পরিচিত।
এর আগে শুক্রবার (১০ মে) আওয়ামী লীগের দু’গ্রুপের সংঘর্ষে ১৫ নেতাকর্মীর রক্ত ঝরেছে। এনিয়ে গত দুইদিনে দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে হামলা-পাল্টা হামলার ঘটনায় নেতাকর্মীরা মুখোমুখি অবস্থানে রয়েছেন।
অন্যদিকে আহতদেরকে দেখতে উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান মারুফ বিন জাকারিয়া ও সদরের চররমনী মোহন ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আবু ইউছুফ ছৈয়াল হাসপাতাল যান।
আলতাফ হোসেন হাওলাদার বলেন, ‘ক্ষমতার দাপটে ওসমান খাঁনের অনুসারীরা আমাদের মাছঘাট ও নেতাকর্মীদের ওপর হামলা চালিয়েছে। এখন উল্টো তারা আমাদের বিরুদ্ধে অপ-প্রচার করছে। বিষয়টি আমি প্রশাসনের কর্মকর্তাদেরকে জানিয়েছি।
অভিযোগ অস্বীকার করে ওসমান খাঁন বলেন, ‘আলতাফ হোসেনের লোকজন দুই দফায় হামলা চালিয়ে আমাদের ১০-১২ জন নেতাকর্মীকে আহত এবং ৫-৬ জনের বাড়ি ও দোকান ভাঙচুর করেছে। অন্যায়ভাবে আমাদের নেতাকর্মীদের ওপর হামলা করা হয়েছে। এসব ঘটনায় আমরা আইনের আশ্রয় নেব।’
রায়পুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) একেএম আজিজুর রহমান মিয়া বলেন, ‘খবর পেয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করা হয়েছে। অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে পুলিশ সতর্ক রয়েছে। এসব ঘটনায় কেউ লিখিত অভিযোগ করেননি।’
প্রসঙ্গত, রায়পুরের মেঘনা নদীর তীরে চান্দনা খালের মাছ ঘাট দখল নিয়ে আওয়ামী লীগের বিবদমান ওই দু’গ্রুপের সংঘর্ষ এবং খাসেরহাট দলের অস্থায়ী কার্যালয়ে হামলার ঘটনা ঘটে। এতে দু’গ্রুপের ১৫ জন আহত হয়েছেন।