ভাতার জন্য দ্বারে দ্বারে ঘুরছেন সাবেক ইউপি সদস্য

  • ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, সাতক্ষীরা
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

সাবেক ইউপি সদস্য মানিক চন্দ্র সানা, ছবি: বার্তা২৪.কম

সাবেক ইউপি সদস্য মানিক চন্দ্র সানা, ছবি: বার্তা২৪.কম

সময় তখন দুপুর দুইটা। সমাজসেবা অফিসের ইউনিয়ন সমাজকর্মী চন্দ্র মল্লিকা সাহানীর জন্য অপেক্ষা করছেন আশাশুনির সদর ইউনিয়নের ৬নং ওয়ার্ডের বলাবাড়িয়া গ্রামের মনিক চন্দ্র সানা। তিনি তিনবারের সাবেক ইউনিয়ন পরিষদ সদস্য।

সমাজকর্মী মল্লিকাকে না পেয়ে অবশেষে হয়রান হয়ে অফিস ঘুরে তার বাসায় আসেন। দেখা না পেয়ে তার বাসার গেটের পাশে ঘাসের উপর শুয়ে পড়েন তিনি। একটি বয়স্ক ভাতার কার্ডের দ্বারে দ্বারে ঘুরছেন মানিক চন্দ্র সানা।

বিজ্ঞাপন

তার জন্ম ১৯৩১ সালের ২২ অক্টোবর। সেই হিসাবে তার বয়স প্রায় ৮৭ বছর। দুইবছর ধরে সমাজসেবা অফিসে ঘোরাঘুরি করেও তিনি একটি বয়স্ক ভাতার কার্ড পাননি। অবশেষে রোববার সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত অপেক্ষা করেন সমাজসেবা অফিসে।

মানিক চন্দ্র বলেন, যৌবনকালে ৮০’র দশকে তিনবার নির্বাচিত ইউনিয়ন পরিষদ সদস্য ছিলাম। তিন ছেলের মধ্যে দুটো থাকে ভারতে। একটি ছেলে (খগেন্দ্র) সামান্য জমিতে মাছের ঘের করলেও বাগদায় ভাইরাস লাগায় সেও অর্থনৈতিকভাবে একেবারেই শূন্যের কোটায় নেমেছে। ফলে সংসার চালাতে হিমশিম খেতে হচ্ছে।

বিজ্ঞাপন

তাই বাধ্য হয়ে প্রায় দুই বছর ধরে সমাজসেবা অফিসে একটি বয়স্ক ভাতার কার্ডের জন্য ঘুরছি। অফিসের লোক দুইবার আমার আইডি কার্ডের ফটোকপি নিয়েছেন। কিন্তু আজও কার্ড করে দেননি। শুধুই ঘুরাচ্ছেন।

তিনি বলেন, প্রখর রোদে অফিসে এসেছিলাম বাড়ি থেকে ১০টি টাকা হাতে নিয়ে প্রায় ৭ কি. মি. পথ পায়ে হেঁটে। দুপুরের ঝাঁ ঝাঁ রোদে ক্ষুধার্ত অবস্থায় মাথা ঘুরতে থাকায় চন্দ্র মল্লিকার বাসার সামনে ঘাসের উপর শুয়ে পড়ি। হোটেলে গিয়েছিলাম ভাত খেতে। ১০ টাকায় ডাল-ভাতও হয়না, তাই চলে এসেছি। পরিস্থিতি আর নিয়তি এখানে নিয়ে এসেছে। অসহায় ছেলের বোঝা হয়ে থাকতে বড় কষ্ট হয়।

এ সময় উপস্থিত সাংবাদিকরা সংশ্লিষ্ট ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান স ম সেলিম রেজা মিলকে বিষয়টি মোবাইল ফোনে জানান। তিনি জানান, মানিক চন্দ্র সানা আমার তালিকা জমা দেওয়ার পর আমার সঙ্গে যোগাযোগ করেছেন। ৬নং ওয়ার্ডের মেম্বারও তালিকায় মানিক চন্দ্র সানার নাম তালিকাভূক্ত করেন নি। ওনাকে বলেছি এর পরের তালিকায় অবশ্যই তার নাম দেব।

সমাজসেবা অফিসের ইউনিয়ন সমাজকর্মী হুমায়ন কবীর জানান, ওই বৃদ্ধের নাম তার ওয়ার্ডের প্রতিনিধিই আমাদের দেননি। আমরা চেষ্টা করছি কোনোভাবে তাকে সহযোগিতা করা যায় কিনা।