সাগরে মাছ ধরায় নিষেধাজ্ঞা

‘মাছ না ধরলে খামু কী, চুলার মাডি?’

  • ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, পটুয়াখালী
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

সাগরে মাছ ধরতে যাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছেন জেলেরা/ ছবি: বার্তা২৪.কম

সাগরে মাছ ধরতে যাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছেন জেলেরা/ ছবি: বার্তা২৪.কম

‘আমরা তো আর কোনো কাম কাইজ জানি না। এই মাছ ধরাই হিখছি (শিখেছি)। মাছ ধইরা যে দুইডা টাহা পাই হেইয়া দিয়া গুরাগারা লইয়া কোনো রহম বাইচ্চা আছি। মোগো এমন কোন ক্যাশ কেবিটাল (ক্যাপিটাল) নাই যে হেইয়া ভাইঙ্গা ভাইঙ্গা খামু। ৬৫ দিন মাছ না ধড়লে খামু কী, চুলার মাডি?’

এভাবেই নিজের অভিব্যক্তি প্রকাশ করেন পটুয়াখালীর কলাপাড়া উপজেলার মহিপুর মৎস্য বন্দরের পঞ্চাশোর্ধ্ব জেলে সোবাহান ফকির। আগামী ২০ মে থেকে ২৩ জুলাই পর্যন্ত মোট ৬৫ দিন বঙ্গোপসাগরে সব ধরণের মাছ ধরা নিষিদ্ধ করেছে সরকার। দেশের সামুদ্রিক মৎস্য সম্পদের সুরক্ষায় এ সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে ইতোমধ্যে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয় থেকে এ সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন জারি করেছে।

বিজ্ঞাপন

নিষিদ্ধকালে জেলে পরিবারগুলো কিভাবে চলবে, সে বিষয়ে পটুয়াখালীতে কোনো উদ্যোগ নেওয়া হয়নি। ফলে এ কর্মসূচির সফলতা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে। তবে জেলেদের প্রণোদনার বিষয়টি সরকারের সদয় বিবেচনায় রয়েছে বলে জানান জেলা প্রশাসক।

পটুয়াখালী জেলায় প্রায় ৭০ হাজার জেলে সরাসরি মাছ ধরা পেশার সাথে জড়িত। এর বাইরেও মৎস্য শিল্পের সাথে কয়েক লাখ মানুষ কাজ করছেন। সাগরে যে ৬৫ দিন মাছ ধরা নিষিদ্ধ থাকবে, এই সময়ে জেলে পরিবারগুলোর সংসার কিভাবে চলবে তা নিয়ে দুশ্চিন্তায় তারা।

বিজ্ঞাপন

https://img.imageboss.me/width/700/quality:100/https://img.barta24.com/uploads/news/2019/May/17/1558101460434.jpg

যেহেতু অধিকাংশ জেলের বিকল্প কর্মসংস্থানের সুযোগ নেই, সেই কারণে অনেকেই হয়তো পেটের তাগিদে আইন অমান্য করে সাগরে মাছ শিকারে যেতে পারেন। এ কারণে এই কর্মসূচির সফলতা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন কেউ কেউ।

অপরদিকে নিষিদ্ধ সময়ে ভারত ও মিয়ানমারের জেলেরা বাংলাদেশের সমুদ্র সীমানায় মাছ শিকার করবে বলে অভিযোগ কুয়াকাটার আলিপুর,মহিপুর মৎস্য বন্দরের জেলেদের। তারা বলছেন, বিগত বছরগুলোতে ইলিশের প্রজনন মওসুমেও পার্শ্ববর্তী দেশের জেলেরা বাংলাদেশের সমুদ্র সীমানায় ঢুকে অবাধে মাছ শিকার করেছে।

পটুয়াখালীর জেলা প্রশাসক মোঃ মতিউল ইসলাম চৌধুরী বলেন, ‘সমুদ্র উপকূলে নৌ বাহিনী ও কোস্টগার্ডের পর্যাপ্ত নজরদারি নিশ্চিত করার বিষয়ে ইতোমধ্যে উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে। কোনো অবস্থাতেই বিদেশি ট্রলার যাতে মাছ শিকার করতে না পারে সে জন্য নির্দেশনা প্রদান করা হয়েছে। এ ছাড়া জেলেদের আর্থিক অবস্থা বিবেচনায় কিভাবে তাদের সহযোগিতা প্রদান করা যায় সে বিষয়ে সরকারের সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়গুলো কাজ করছে।’