ঈদের আনন্দ কী পৌঁছাবে জেলে-কৃষকের ঘরে?
মাছ, গাছ, ফুল, পাতা পাখি এসবের প্রতি ছোট বেলা থেকেই আমার বাড়তি একটা দুর্বলতা কাজ করে। পেশাগত জীবনেও তাই এসব বিষয়ে বেশি রিপোর্ট করছি।
কৃষক কিংবা জেলেদের কষ্টের খবর আমাকেও কষ্ট দেয়। তবে যাদের কষ্ট পাবার কথা, কষ্টের প্রতিকার করতে উদ্যোগ নেয়ার কথা, সেই উপর মহলের কষ্ট হচ্ছে না।
আমি ভালো আছি, কিন্তু আমার কৃষক ভালো নেই, শ্রমিক ভালো নেই, জেলে ভালো নেই। এর মানে হচ্ছে আমরা ভালো নেই।
আগামীকাল ২০ মে থেকে বঙ্গোপসাগরে মাছ ধরায় ৬৫ দিনের নিষেধাজ্ঞা শুরু হচ্ছে। অপরদিকে কৃষক তার ধানের ন্যায্য দাম থেকে বঞ্চিত। এবার কী তবে ঈদের আনন্দ কৃষক এবং জেলেদের ঘর পর্যন্ত পৌঁছাবে না?
দেশের সর্ব দক্ষিণের জেলা পটুয়াখালী। এই জেলার মানুষের বড় একটি অংশ মাছ ধরার পেশায় জড়িত। এদের মধ্যে অধিকাংশই আবার সাগরে মাছ শিকার করে জীবিকা নির্বাহ করে। এছাড়াও কয়েক লাখ মানুষ পরোক্ষভাবে মাছ ব্যবসার সঙ্গে জড়িত। এই কয়েক লাখ মানুষের রুটি-রুজির বিষয়ে কী হবে?
কীভাবে চলবে নিম্ন আয়ের এসব জেলে পরিবারগুলো। কর্মসংস্থানের কোনো সুযোগ না থাকা এবং সরকারিভাবে কোনো সহযোগিতা না থাকায় এখন নিম্ন আয়ের মানুষগুলো কীভাবে রমজানের সেহরি-ইফতার করবে? এবার ঈদে কী তার সন্তানকে নতুন জামা তুলে দিতে পারবে? কিংবা পরিবারের সদস্যদের জন্য ঈদের দিন একটু ভালো খাবারের ব্যবস্থা করতে পারবে?
জানা গেছে, পটুয়াখালীসহ দক্ষিণাঞ্চলের কৃষকরা সাধারণত খুব বেশি জমিতে বোরো ধানের আবাদ করে না। এই এলাকার শত ভাগ জমিতে আমন ধানের আবাদ করা হয়।
তবে দেশের অন্যান্য এলাকায় বোরো ধানের আবাদ করা এবং এবার সেই ধানের ন্যায্য দাম না পাওয়ায় দক্ষিণের কৃষকদের মধ্যে কিছুটা আতঙ্ক বিরাজ করছে। তারা দুশ্চিন্তায় আছে, আগামী আমন মৌসুমে ধানের ন্যায্য মূল্য পাবে কিনা।
কৃষক যদি তার ফসলের ন্যায্য দাম থেকে বঞ্চিত হয় এবং জেলে যদি দুই মাস সরকারি নিষেধাজ্ঞায় মাছ শিকার করতে না পারে, তবে কীভাবে চলবে তাদের সংসার? সরকারের নীতিনির্ধারণীর কাছে এ বিষয়গুলো অনেক আগেই তুলে ধরা হয়েছে। এছাড়া বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে বিষয়গুলো উঠে এসেছে। তবে নানা সমীকরণে এসব মানুষদের জন্য কিছুই করা হয়নি। তাই তো এই ঈদে অনেক জেলে-কৃষক পরিবারকে হয়তো অভুক্ত থাকতে হবে।