ভুল চিকিৎসায় প্রসূতির মৃত্যু, হাসপাতালের এমডি আটক
লক্ষ্মীপুরে অপারেশনের সময় জরায়ু কেটে ফেলায় অতিরিক্ত রক্তক্ষরণে বিচিত্রা কর নামে এক প্রসূতির মৃত্যু হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। বৃহস্পতিবার (৬ জুন) রাত ১০টার দিকে শহরের উপশম (প্রাঃ) হাসপাতালে এ ঘটনা ঘটে। ভুল চিকিৎসায় বিচিত্রার মৃত্যুর অভিযোগ এনে হাসপাতাল ঘেরাও করে বিক্ষোভ করেছেন মৃতের স্বজনরা।
খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থল গিয়ে হাসপাতালের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) সাইফুদ্দিনকে আটক করে। এ সময় আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিয়ে নিহতের স্বজনদের শান্ত করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। পরে নিহতের মরদেহ ময়না তদন্তের জন্য লক্ষ্মীপুর সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়।
এদিকে হাসপাতালের চেয়ারম্যান মো. কাউছার সাংবাদিকদের কাছে রোগীর মৃত্যুকে স্বাভাবিক ঘটনা বলে আখ্যায়িত করেছেন। তবে এ ব্যাপারে তিনি আর কোনো বক্তব্য দিতে রাজি হননি। কিন্তু হাসপাতালের মূল ফটকে তালা দিয়ে সংবাদ সংগ্রহে সাংবাদিকদের বাধা প্রদান করে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।
নিহত বিচিত্রা লক্ষ্মীপুর পৌরসভার শাখারীপাড়া এলাকার বাবলু করের স্ত্রী।
পুলিশ ও নিহতের স্বজনরা জানায়, বৃহস্পতিবার সকালে প্রসবজনিত কারণে বিচিত্রাকে সদর হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে নিয়ে রোগীকে গাইনি বিশেষজ্ঞ বসাক কুমারকে দেখানো হয়। পরে তার নির্দেশে বিচিত্রাকে উপশম হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। বিকেলে উপশম হাসপাতালেই সিজারের মাধ্যমে মেয়ে সন্তান প্রসব করেন বিচিত্রা। বেডে স্থানান্তরের পর সন্ধ্যায় তার পেটে ব্যাথা অনুভব হয়। ফের তাকে রাত ৯টার দিকে অপারেশন থিয়েটারে নিয়ে গিয়ে জরায়ু কেটে ফেলে। এতে প্রচুর রক্তক্ষরণে তার মৃত্যু হয়।
এদিকে ঘটনার পর থেকে অভিযুক্ত চিকিৎসক বসাক কুমার আত্মগোপনে থাকায় তার বক্তব্য জানা যায়নি।
তবে রোগীর স্বজনদের অভিযোগ, চিকিৎসক বসাক কুমারের পরামর্শে বিচিত্রাকে উপশমে ভর্তি করা হয়েছে। কিন্তু অপারেশন করে জরায়ু কেটে ফেলায় প্রচুর রক্তক্ষরণের কারণে তার মৃত্যু হয়েছে। এ ঘটনায় চিকিৎসক ও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের শাস্তির দাবি জানিয়ে বিক্ষোভ করেছেন স্বজনরা।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে লক্ষ্মীপুর সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ লোকমান হোসেন জানান, ঘটনাটি শুনে হাসপাতালের সামনে গিয়ে রোগীর স্বজনদের শান্ত করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনা হয়েছে। এ সময় হাসপাতালের ব্যবস্থাপনা পরিচালককে আটক করা হয়। তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।