অবশেষে শুরু হচ্ছে হাটবাড়িয়া ইকো পার্কের কাজ
দীর্ঘ প্রতীক্ষার পর সকল জল্পনা-কল্পনার অবসান ঘটিয়ে অবশেষে নড়াইল পৌরবাসীর বিনোদনের জন্য হাটবাড়িয়া প্রজাপতি ইকো পার্কের কাজ শুরু হচ্ছে। এ জন্য প্রাথমিকভাবে ২ কোটি টাকা বরাদ্দ পাওয়া গেছে। চলতি মাসেই এ পার্কের টেন্ডার প্রক্রিয়া সম্পন্ন এবং পার্কের কাজ শুরু হবে।
জানা গেছে, উনিশ শতকের প্রথম দিকে গড়ে ওঠে হাটবাড়িয়া জমিদার বাড়ি। এর সর্বশেষ জমিদার জিতেন্দনাথ রায়ের ছেলে আশুতোষ রায় এবং অজিত রায় নড়াইল পৌরসভার ৫৬নং ব্রাক্ষ্মণডাঙ্গা মৌজার ৫টি দাগে ২৩.৭৬ একর জমির মালিকানা ছেড়ে ১৯৪৭ সালে দেশ বিভাগের পূর্বে সপরিবারে ভারতে চলে যান।
বর্তমানে এ জমি হাল রেকর্ডে সরকারের ১নং খাস খতিয়ানভুক্ত রয়েছে। এ খাস সম্পত্তি দখলের জন্য একটি মহল উঠে পড়ে লাগে। স্থানীয় সুশীল সমাজের ব্যক্তিসহ নড়াইলবাসী আন্দোলন সংগ্রামের মাধ্যমে এবং জেলা প্রশাসনের সহযোগিতায় হাটবাড়িয়া জমিদার বাড়ির জায়গা রক্ষা করা হয়।
সূত্র আরও জানায়, ২০১৭ সালের ৪ মার্চ তৎকালীন জেলা প্রশাসক মো. হেলাল মুহমুদ শরীফের উদ্যোগে নড়াইল শহর থেকে ২ কিলোমিটার দক্ষিণে চিত্রা নদীর তীরে হাটবাড়িয়া জমিদার বাড়ির ২৪ একর জায়গার উপর এই পার্ক তৈরির ঘোষণা দেয়া হয়।
সে সময় সাধারণের বসার জন্য চিত্রা নদীর তীরে বিশ্রামের জন্য কয়েকটি বেঞ্চি, চিত্রা নদীর সৌন্দর্য উপভোগ করার জন্য ওয়াচ টাওয়ার, শিশুদের বিনোদনের জন্য দোলনা ও স্লিপার নির্মাণ করা হয়। ২০১৭ সালের ৫ নভেম্বর তৎকালীন বেসামরিক বিমান ও পর্যটনমন্ত্রী রাশেদ খান মেনন অনুষ্ঠানিকভাবে এর উদ্বোধন করেন। এর প্রায় দেড় বছর পেরিয়ে গেলেও অর্থবরাদ্দসহ অন্য কার্যক্রম থেমে যায়। সম্প্রতি হাটবাড়িয়া প্রজাপতি ইকো পার্কের কাজ শুরুর জন্য দুই কোটি টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়।
এদিকে পৌর শহরে মানুষের বিনোদনের জন্য কোনো জায়গা না থাকায় তারা বিনোদনের জন্য শেখ রাসেল সেতু, এস এম সুলতান সেতু, নড়াইল সরকারি ভিক্টোরিয়া কলেজ ক্যাম্পাস, বাঁধঘাটসহ বিভিন্নস্থানে অবসর সময় কাটান।
নড়াইলের পৌর এলাকায় হাটবাড়িয়া প্রজাপতি ইকো পার্কের নির্মাণ কাজ শুরু হচ্ছে এমন সংবাদে খুশি পৌরবাসী।
শহরের মহিষখোলা এলাকার রাফিয়া খানম বলেন, ‘পৌর এলাকায় বিনোদন কেন্দ্র না থাকা দুঃখজনক। দেরিতে হলেও হাটবাড়িয়ায় পার্কের নির্মাণ কাজ শুরু হচ্ছে। এতে আমরা আনন্দিত।’
ভওয়াখালী এলাকার আব্দুল ইসলাম বলেন, ‘নড়াইলে কোনো বিনোদন কেন্দ্র না থাকায় আমরা বিশেষ দিনগুলোতে স্ত্রী-সন্তানদের নিয়ে শেখ রাসেল সেতু, এস এম সুলতান সেতুসহ অন্য স্থানে ঘুরতে যাই। হাটবাড়িয়া পার্কের কাজ শুরু হলে আমাদের বিনোদনের একটা নির্দিষ্ট স্থান হবে।’
জেলা প্রশাসক আনজুমান আরা জানান, হাটবাড়িয়া প্রজাপতি ইকো পার্কের কাজ দ্রুতই শুরু করা হবে। এ জন্য প্রাথমিকভাবে ২ কোটি টাকা বরাদ্দ পাওয়া গেছে। চলতি মাসেই এ পার্কের টেন্ডার প্রক্রিয়া সম্পন্ন এবং কাজ শুরু করা হবে বলে আশা করছেন তিনি।