প্রধানমন্ত্রীকে কৃতজ্ঞতা জানাতে চান সোহাগপুরের ২৪ বীরাঙ্গনা
সরাসরি কৃতজ্ঞতা জানাতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সাক্ষাৎ চান শেরপুরের নালিতাবাড়ী উপজেলার বিধবাপল্লী খ্যাত সোহাগপুরের ২৪ বীরাঙ্গনা।
তাদের দাবি, যুদ্ধাপরাধীদের শাস্তি কার্যকরসহ বর্তমান সরকার তাদের জন্য অনেক কিছুই করেছে। তাই তাদের চাওয়া পাওয়ার আর কিছুই নেই। তবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে সরাসরি দেখা করে তার প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাতে চান এসব বীরাঙ্গনারা।
আজ বৃহস্পতিবার (২৫ জুলাই) ঐতিহাসিক সোহাগপুর গণহত্যা দিবস। দিবস উপলক্ষে বুধবার (গত ২৪ জুলাই) দুপুরে সোহাগপুরের বিধবাপল্লীতে গেলে বার্তাটোয়েন্টিফোর.কম-এর কাছে এসব কথা জানান ২৪ জন বীরাঙ্গনা।
আলাপকালে বীরাঙ্গনা হাফিজা বেগম বলেন, ‘আগে আমরা বিনা আহারে দিন কাডাইতাম। অহন বীরাঙ্গনা মুক্তিযোদ্ধার ভাতা পাইয়া নাতি-পুতি লইয়া ভালাই চলতাছি। সরকার আমগোরে থাহার লাইগা ঘর বানাইয়া দিছে। অহন আমরা সুখেই আছি। তবে আমগর আবাদি জমি নাই। অহন বয়স অইছে, কবে যে মইরা যাই। তাই সরকারের কাছে আমগোর আর কোনো দাবি নাই।’
সোহাগপুর শহীদ পরিবার কল্যাণ সমিতির সভাপতি জালাল উদ্দিন বার্তাটোয়েন্টিফোর.কমকে বলেন, ‘বর্তমান মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের সরকার বৃহত্তম ময়মনসিংহের কুখ্যাত আলবদর কমান্ডার কামারুজ্জামানের ফাঁসি কার্যকর করায় সোহাগপুরের বিধবারা সন্তোষ প্রকাশ করেছেন। তারা ইতোমধ্যে সরকারকে ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানিয়েছেন।’
তিনি আরও বলেন, ‘স্বাধীনতা পরবর্তী সময়ে এই বিধবাদের কষ্টের সীমা ছিল না। তাদের ভাগ্যোন্নয়নে নানা পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে সরকার। ইতোমধ্যে ২৯ জন স্বামী সন্তানহারা বিধবাকে দেওয়া হয়েছে পাকা ঘর এবং ট্রাস্ট ও ব্র্যাক থেকে আজীবন মাসিক দুই হাজার ৪০০ টাকা ভাতা। এতে শোকের মাঝেও তারা সুখে আছেন।’
মুক্তিযোদ্ধা সংসদ শেরপুর জেলা ইউনিটের সাবেক কমান্ডার নুরুল ইসলাম হিরু বলেন, ‘এখন বিধবারা অনেক ভালো আছেন।’
উল্লেখ্য, ১৯৭১ সালের ২৫ জুলাই মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত জামায়াত নেতা কামারুজ্জামানের সহযোগিতায় পাক সেনারা সীমান্তবর্তী সোহাগপুর গ্রামে গণহত্যা, ধর্ষণ, লুটপাট ও অগ্নি সংযোগ করে। ছয় ঘণ্টার তাণ্ডবে ১৮৭ জন পুরুষকে হত্যা করে পাক বাহিনী। এতে স্বামী হারিয়ে ৬৩ জন নারী হন বিধবা। এরপর থেকেই এই গ্রামের নাম হয় বিধবাপল্লী। তবে বর্তমানে সোহাগপুরে ২৪ জন বিধবা এখনো বেঁচে আছেন।