ভিআইপির জন্য ফেরির অপেক্ষা: বিচার চাইলেন তিতাসের মা
নড়াইল নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের এক ভিআইপির জন্য তিন ঘণ্টা ফেরি চলাচল বন্ধ রাখায় বিনা চিকিৎসায় মৃতবরণ করা নড়াইলের কালিয়ার স্কুলের ছাত্র তিতাসের বাড়িতে চলছে শোকের মাতাম। গত তিন দিনেও থামেনি তার স্বজনদের আহাজারি। মা সোনামনির আহাজারিতে উপজেলার বড়কালিয়া গ্রামের বাতাস ভারী হয়ে উঠেছে।
তিতাস ওই গ্রামের মৃত তাপস ঘোষের ছেলে ও কালিয়া সরকারি পাইলট মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ষষ্ঠ শ্রেণির ছাত্র ছিলো। তিতাসের মৃত্যুর প্রতিবাদ ও বিনা চিকিৎসায় ছাত্রের মৃত্যুর জন্য দায়ীদের বিচারের দাবিতে সোমবার (২৯ জুলাই) তিতাসের বিদ্যালয়সহ কয়েকটি বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ও শিক্ষকরা কালিয়া সদরে মানববন্ধন করেছে।
তিতাসের বোন তানিষা ঘোষ অভিযোগ করে বলেছেন, গত ২৪ জুলাই তিতাস একটি সড়ক দুর্ঘটনায় আহত হলে প্রথমে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। তার অবস্থা আশংকাজনক হওয়ায় উন্নত চিকিৎসার জন্য চিকিৎসকরা ঢাকায় প্রেরণ করেন। পরদিন ২৫ জুলাই তাকে ঢাকায় নেয়ার পথে ওইদিন রাত ৮ টায় কাঠালবাড়ি ১ নম্বর ফেরীঘাটে পৌঁছালে তারা জানতে পারে নৌ-পরিবহন মন্ত্রণালয়ের একজন ভিআইপির আত্মীয় বিয়ের অনুষ্ঠানে যাবেন তাই ফেরি এখন চলবে না। ভাইয়ের আশঙ্কাজনক অবস্থার কথা জানিয়ে তিনি সেখানকার আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীসহ বিভিন্ন মহলে ধরনা দিলেও কোন কাজ হয়নি।
রাত ১১টার দিকে ওই ভিআইপির আত্মীয়রা এলে ফেরি চলাচল শুরু হয়। কিন্তু ফেরিতেই তার ভাই বিনা চিকিৎসায় মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ে। তানিষার দাবি যারা বিয়ের অনুষ্ঠানে যেতে ফেরি আটকে তার ভাইয়ের চিকিৎসায় ব্যাঘাত সৃষ্টি করেছে তাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি করছি ।
পুত্র শোকে নির্বাক পাথর হয়ে গেছে তিতাসের গর্ভধারিণী মা সোনামনি ঘোষ। বাড়িতে থাকা ছেলের ব্যবহৃত পোশাক বুকে নিয়ে কখনও নিরবে চোখের পানি ফেলছেন আবার কখনও চিৎকার করে আহাজারি করে চলেছেন তিনি। সাংবাদিক পরিচয় পেতেই তিনি হাউমাউ করে কেঁদে কেঁদে বললেন তার ছেলে বিনা চিকিৎসায় মারা গেল। ছেলের চিকিৎসায় বাধা সৃষ্টিতে যারা দায়ী তিনি তাদের বিচার দাবি করেছেন।