নড়াইল সদর হাসপাতালে নেই ডেঙ্গু পরীক্ষার ব্যবস্থা
ডেঙ্গু জ্বরের পরীক্ষা করাতে প্রতিদিনিই নড়াইল সদর হাসপাতালে আসছেন আতঙ্কিত মানুষ। কিন্তু হতাশ হয়ে ফিরে যেতে হচ্ছে তাদের। কেননা হাসপাতালটিতে ডেঙ্গু জ্বর পরীক্ষার কোনো ব্যবস্থা নেই।
মেডিসিন বিভাগে মঙ্গলবার (৩০ জুলাই) সকালে দায়িত্বরত সেবিকা শামসুননাহার বার্তাটোয়েন্টিফোর.কমকে বলেন, সদর হাসপাতালে ডেঙ্গু পরীক্ষার জন্য প্রয়োজনীয় ওষুধ নেই, বাইরে থেকে পরীক্ষা করিয়ে আনতে হচ্ছে।
ডেঙ্গু পরীক্ষা করাতে আসা ভাদুলীডাঙ্গা গ্রামের সুজয় দাস বলেন, হাসপাতালে ডেঙ্গু পরীক্ষার কোনো ব্যবস্থা নেই। হাসপাতালে গিয়ে ফিরে যেতে হচ্ছে রোগীদের।
মাগুরার শালিখা উপজেলার মধুখালী গ্রামের সালেক সিকদারের ছেলে কাইজার সিকদার (১৯) ঢাকার মিরপুর এলাকায় কাজ করতেন। বেশ কিছুদিন যাবৎ জ্বরে অসুস্থ থাকায় গত ২৫ জুলাই বাড়িতে ফিরে আসেন তিনি। গত (সোমবার) ২৯ জুলাই বিকেলে নড়াইল সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয় তাকে। বর্তমানের মেডিসিন বিভাগের ৬নং বেডে চিকিৎসাধীন তিনি।
বার্তাটোয়েন্টিফোর.কমকে কাইজার বলেন, আমি ডেঙ্গু রোগী হওয়ায় আমাকে রাতে দায়িত্বরত সেবিকারা বেড নিয়ে বারান্দায় চলে যেতে বলে। ডেঙ্গু রোগীদের সব সময় মশারির মধ্যে রাখার নিয়ম থাকলেও রাতে হাসপাতাল থেকে কোনো মশারি দেওয়া হয়নি।
তার মা নাসরিন বেগম বলেন, ডেঙ্গু রোগীদের মাশরির মধ্যে না রাখলে অন্য মশা কামড়ালে জীবাণু হাসপাতালের অন্য রোগীদের মধ্যে ছড়িয়ে পড়বে। তারপরও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ মশারির কোনো ব্যবস্থা করেনি।
গত ২৪ জুলাই রাতে ঢাকা থেকে নড়াইল ফেরার পথে মারা যান সদর উপজেলার বাগডাঙ্গা গ্রামের ইকরাম হোসেন। তার চাচাতো ভাই কবির হোসেন বলেন, ঢাকায় একটি সিকিউরিটি কোম্পানিতে চাকরি করতেন ইকরাম। তার এক ছেলে ও এক মেয়ে রয়েছে।
সদর উপজেলার দুর্গাপুর গ্রামের আরিফুল ইসলাম বলেন, আমরা ডেঙ্গু আতঙ্কে রয়েছি। শহরে কোথাও মশা মারার ওষুধ দেওয়া হয়নি। শুনেছি সরকারি কর্মকর্তাদের বাসভবনে ওষুধ দেওয়া হচ্ছে।
সদর হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) মশিউর রহমান বাবু বার্তাটোয়েন্টিফোর.কমকে বলেন, ডেঙ্গু রোগ নির্ণয়ের জন্য যে পরীক্ষাগুলো করার প্রয়োজন তার মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ (কিড) পরীক্ষাটি রয়েছে, সেটি করার জন্য যে ওষুধের প্রয়োজন, তা হাসপাতালে নেই। মঙ্গলবার (৩০ জুলাই) বেসরকারি একটি প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে সেই ওষুধটি দেওয়া হয়েছে। হাসপাতালের পক্ষ থেকে চাহিদা পাঠানো হয়েছে, দ্রুতই চলে আসবে।
নড়াইলের সিভিল সার্জন ডা. আসাদ উজ জামান মুন্সী বার্তাটোয়েন্টিফোর.কমকে বলেন, লোহাগড়া ও কালিয়াতে ডেঙ্গু শনাক্তকরণের ওষুধ ম্যানেজ করে রাখা হয়েছে পাঁচটি করে মোট দশটি। সদর হাসাতালেও দ্রুত চলে আসবে।