পুত্র শোকে হাসপাতালে তিতাসের মা
ভিআইপির অপেক্ষায় ফেরি বন্ধ থাকায় বিনা চিকিৎসায় ফেরিতে মৃত্যু রবণকারী স্কুলছাত্র তিতাসের মা সোনামণি ঘোষ অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। একমাত্র পুত্র সন্তানকে হারিয়ে শোকে কাতর হয়ে আহার ও অনিদ্রায় তিনি অসুস্থ হয়ে পড়েছেন বলে পরিবারের সদস্যরা জানান।
গুরুতর অসুস্থ অবস্থায় রোববার (৪ আগস্ট) রাতে তাকে কালিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। হাসপাতালের বেডে শুয়েও তিনি তার পুত্রের মৃত্যুর জন্য দায়ী ভিআইপির বিচার দাবি করেন।
নিহত তিতাসের বোন তনিষা ঘোষ বলেন, 'তিতাস মারা যাওয়ার পর থেকে মা আহার নিদ্রা প্রায় ছেড়ে দিয়েছেন। একদিকে পুত্র শোক অন্যদিকে খাবার না খাওয়া এবং রাতে-দিনে না ঘুমানোর কারণে গত কয়েকদিন যাবৎ তিনি অসুস্থ হয়ে পড়েন। রোববার বিকাল থেকে শরীরের রক্তচাপ কমে গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়লে ওই রাতেই তাকে কালিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়।'
কালিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. শরীফ সাহাবুবুর রহমান বলেন, 'সোনামণির মানসিক দুশ্চিন্তা ও ঠিকমতো না খাওয়া এবং না ঘুমানোর কারণে রক্তচাপ উঠানামা করছে। তবে তিনি এখন পূর্বের চেয়ে একটু ভাল আছেন। চিকিৎসা চলছে, আশা করছি দ্রুত সময়ের মধ্যে তিনি সুস্থ হয়ে উঠবেন।'
উল্লেখ্য, গত ২৪ জুলাই স্কুলছাত্র তিতাস একটি সড়ক দুর্ঘটনায় আহত হলে প্রথমে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। তার অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় পরদিন ২৫ জুলাই ঢাকায় নেওয়ার পথে রাত ৮টায় কাঁঠালবাড়ি এক নম্বর ফেরিঘাটে পৌঁছায়। তখন তারা জানতে পারে নৌ-পরিবহন মন্ত্রণালয়ের একজন ভিআইপির অপেক্ষায় ফেরি চলাচল বন্ধ রয়েছে।
তিতাসের বোন তনিষা ঘোষ তার ভাইয়ের আশঙ্কাজনক অবস্থার কথা জানিয়ে সেখানকার আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীসহ বিভিন্ন মহলে ধর্না দিয়েও কোনো কাজ হয়নি। রাত ১১টার দিকে ওই ভিআইপির গাড়িটি আসার পর ফেরি ছাড়ে। কিন্তু ফেরি পার হতে না হতেই তিতাস বিনা চিকিৎসায় মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ে। এই মৃত্যুর ঘটনায় তিনটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।