রাতে বিশ্রামাগারে তালা, ট্রেনযাত্রীদের দুর্ভোগ

  • রাকিবুল ইসলাম রাকিব, উপজেলা করেসপন্ডেন্ট, বার্তাটোয়েন্টিফোর.কম, গৌরীপুর (ময়মনসিংহ))
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

মেঝেতে শুয়ে আছেন ট্রেনের জন্য অপেক্ষমান কিছু যাত্রী, ছবি: বার্তাটোয়েন্টিফোর.কম

মেঝেতে শুয়ে আছেন ট্রেনের জন্য অপেক্ষমান কিছু যাত্রী, ছবি: বার্তাটোয়েন্টিফোর.কম

কোথাও যাত্রীরা বসে আছেন অন্ধকারে, কোথাও যাত্রীরা শুয়ে আছে নোংরা মেঝেতে। কোথাও আবার মালপত্র নিয়ে পায়চারি করছেন। মাঝে মধ্যে ট্রেনের হুইসেল শুনে যাত্রীদের কেউ কেউ এদিক-সেদিক তাকিয়ে নড়েচড়ে বসছেন।

রোববার (১৮ আগস্ট) রাত দেড়টায় ময়মনসিংহের গৌরীপুর রেলওয়ে জংশনের প্ল্যাটফরমে এমন দৃশ্য দেখা যায়। জংশনের প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণির বিশ্রামাগার বন্ধ থাকায় বৈরী আবহাওয়ায় ও অন্ধকারের মধ্যে রাতের ট্রেনযাত্রীরা প্ল্যাটফরমের নোংরা মেঝেতে আশ্রয় নিয়েছেন।

বিজ্ঞাপন

https://img.imageboss.me/width/700/quality:100/https://img.barta24.com/uploads/news/2019/Aug/18/1566090508229.jpg

জানা গেছে, গৌরীপুর রেলওয়ে স্টেশন হয়ে প্রতিদিন ঢাকা-জারিয়া, ঢাকা-মোহনগঞ্জ, ময়মনসিংহ-চট্টগ্রাম এই তিনটি রুটে আন্তঃনগর, মেইল, কমিউটার ও লোকালসহ ৩২টি ট্রেন চলাচল করে। এসব ট্রেনে প্রতিদিন হাজার হাজার যাত্রী চলাচল করে। কিন্ত রাতের বেলা বিশ্রামাগার বন্ধ থাকায় যাত্রীদের দুর্ভোগ পোহাতে হয়।

বিজ্ঞাপন

আরও পড়ুন: টেলিফোন বিকল, গ্রাহকের বিল সচল

রাতে গৌরীপুর রেলওয়ে জংশনে গিয়ে দেখা যায় প্রথম শ্রেণির বিশ্রামাগারটি তালাবদ্ধ। বিশ্রামাগারের সামনে স্তূপ করে রাখা বাইর (মাছ ধরার ফাঁদ)। যাত্রীরা জায়গা না পেয়ে টিকিট কাউন্টার ও প্ল্যাটফরমের মেঝেতে বসে ও শুয়ে আছে। এরমধ্যে নারীযাত্রীরা অন্ধকারের মধ্যে গুটিসুটি হয়ে বসে আছে। নিরাপত্তার শঙ্কায় নারী যাত্রীদের কেউ কেউ আশ্রয় নিয়েছেন চায়ের দোকানে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক নারী যাত্রী বলেন, ‘বিশ্রামাগার বন্ধ থাকায় রাতের বেলা প্রাকৃতিক কাজ সারতে দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। বাধ্য হয়েই এখন নিরাপত্তাহীনতার মধ্যে অন্ধকারে বসে আছি। এই হচ্ছে গৌরপুর স্টেশনে যাত্রীদের সেবার মান।’

https://img.imageboss.me/width/700/quality:100/https://img.barta24.com/uploads/news/2019/Aug/18/1566090548478.jpg

অপরদিকে, দ্বিতীয় শ্রেণির বিশ্রামাগারের সামনে গিয়ে দেখা যায় দরজা তালাবদ্ধ। বিশ্রামাগারে স্থান না পেয়ে যাত্রীরা কেউ চায়ের দোকান ও রেলওয়ে ওভারব্রিজের সিঁড়িতে বসে ট্রেনের জন্য অপেক্ষা করছেন। এরমধ্যে অনেক যাত্রী কাঁথা কিংবা চাদর বিছিয়ে বিশ্রামাগারের সামনে শুয়ে আছেন।

আরও পড়ুন: ৫৬ বছরে গৌরীপুর সরকারি কলেজ

ট্রেনযাত্রী মানিক মিয়া বলেন, ‘পরিবারের লোকজন রাতের ট্রেনে ঢাকা যাবে। কিন্তু দুটি বিশ্রামগার বন্ধ থাকায় বৈরী আবহাওয়ায় মালপত্র নিয়ে প্ল্যাটফরমে দাঁড়িয়ে থাকতে হচ্ছে। স্টেশন কর্তৃপক্ষ এসব বিষয়ে কোনো পদক্ষেপ নেয় না এটা অত্যন্ত দুঃখজনক।’

গৌরীপুর উন্নয়ন সংগ্রাম পরিষদের সাধারণ সম্পাদক মজিবুর রহমান ফকির বলেন, ‘বিশ্রামাগার বন্ধ থাকায় যাত্রীরা মালপত্র নিয়ে বাইরে আশ্রয় নেওয়ায় স্টেশনে চুরি ও ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটছে। নারী যাত্রীরা বখাটেদের উৎপাতের শিকার হচ্ছে। এতে করে এই স্টেশনে যাত্রীসেবার মান দিন দিন কমে যাচ্ছে। সেবার মান বাড়াতে এই চিহ্নিত সমস্যাগুলো সমাধানে কর্তৃপক্ষকে উদ্যোগী হওয়া প্রয়োজন।’

https://img.imageboss.me/width/700/quality:100/https://img.barta24.com/uploads/news/2019/Aug/18/1566090572707.jpg

এ বিষয়ে জানতে রাতে গৌরীপুর রেলওয়ে জংশনের স্টেশন মাস্টার আব্দুর রশিদের মুঠোফোনে কয়েকবার যোগাযোগের চেষ্টা করেও সংযোগ পাওয়া যায়নি।

তবে স্টেশনের বুকিং সহকারী রাজিব বলেছেন, ‘প্রথম শ্রেণির বিশ্রামাগার বন্ধ থাকলেও দ্বিতীয় শ্রেণির বিশ্রামাগার খোলা থাকার কথা। কিন্ত আজ কেন বন্ধ বলতে পারছি না ‘