নির্ধারিত সময় পেরিয়ে গেলেও হয়নি বাঁধ নির্মাণ
সুনামগঞ্জের জামালগঞ্জে হাওর রক্ষা বাঁধ কাজের নির্ধারিত সময় পেরিয়ে ৭ দিন। কিন্তু এখনও অধিক ঝুঁকিপূর্ণ ক্লোজারসহ শেষ হয়নি বাঁধের কাজ। মাটি ফেলা শেষ হলেও বাকি আছে স্লোপ তৈরি, মাটি ড্রেসিং, কমপেকশন ও দূর্বা লাগানোর মতো গুরুত্বপূর্ণ অনেক কাজ।
ক্লোজারে বিছানো হয়নি কোনো ধরনের জিওটেক্সটাইল, ফেলা হয়নি বস্তা, বাঁধা হয়নি বাঁশের আড়। কোনো কোনো বাঁধে এখনও ফেলা হচ্ছে মাটি। এছাড়া বেলে মাটি দিয়ে বাঁধা হয়েছে বেশ কয়েকটি বাঁধ। বৃষ্টি হলেই যেগুলো ধসে পড়ার আশঙ্কা রয়েছে। এ নিয়ে কৃষকের মাঝে চরম অসন্তোষ দেখা দিয়েছে।
বৃহস্পতিবার (৫ মার্চ) শনির লালুর গোয়ালায় খোঁজ নিয়ে জানা যায়, শ্রমিকেরা বাঁধের স্লোপে এখনও মাটি ফেলছেন। সম্পূর্ণ ভরাট করা হয়নি ক্লোজারের গোঁড়ার বিস্তৃত বড়। ড্রেজারের সামান্য মাটি একাংশে ফেলে এড়ানো হয়েছে গর্ত ভরাটের দায়। এখনও বাকি আছে জিওটেক্সটাইল, বস্তা ও বাঁশের আড়। বৃষ্টির সাথে সাথে বাঁধে ফেলা নতুন মাটি ধসে পড়ে মহাবিপদ ডেকে আনবে বলে জানিয়েছেন স্থানীয় কৃষকরা। ফলে অরক্ষিতই থেকে যাচ্ছে হাওরখেকো লালুর গোয়ালায় এই ক্লোজার।
পিআইসি সভাপতি জিয়া উদ্দিন বলেন, ‘অনেক মাটি ফেলা হয়েছে। এখনও ফেলা হচ্ছে। দুই দিনের মধ্যেই শেষ হয়ে যাবে সব। শুক্রবার জিওটেক্সটাইল আসবে’।
এছাড়া অধিক বরাদ্দকৃত হালি হাওরের মদনাকান্দি পাথাইড়া খালে খোঁজ নিয়ে দেখা যায়, বাঁধের একেবারে গোঁড়া থেকে মাটি তোলা হয়েছে। সেখানে মাটি ফেলা শেষ হলেও রয়ে গেছে আনুষঙ্গিক সবকিছু। ঝুঁকিতে থাকা এই ক্লোজারটির কাজ এখনও চলমান।
কাজের এমন অগ্রগতির কারণে হাওর পারের ক্ষুব্ধ কৃষকরা বলেন, ‘গত বছর কাজে গাফিলতির জন্য কিছু পিআইসিকে ধরে নিয়ে জবাবদিহিতার আওতায় এনে মুচলেকার মাধ্যমে ছেড়ে দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু এ বছর কাজে এত অবহেলা, তারপরও কাউকে জবাবদিহিতার আওতায় আনা হয়নি।’
এ ব্যাপারে কাবিটা স্কিম বাস্তবায়ন ও মনিটরিং কমিটির সভাপতি ও উপজেলা নির্বাহী অফিসার প্রিয়াংকা পাল বলেছেন, ‘যেখানে ত্রুটি আছে সেখানে আমরা বলে দিচ্ছি সেগুলো ত্রুটিমুক্ত করতে। বাঁধের স্লোপ, কমপেকশন ও ঘাস লাগানোসহ আনুষঙ্গিক কাজের জন্য আমরা আরো পনের দিন সময় চেয়েছি। এ সময়ের মধ্যে কাজ শেষ করা হবে’।
গত দুইদিন আগে যে বজ্র-বৃষ্টি হয়েছে তাতে বিপদের আগাম সুর শোনা গেছে। এ বিপদের কথা মাথায় রেখেই ২৮ ফেব্রুয়ারি কাজের নির্ধারিত সময়সীমা বেঁধে দেওয়া হয়। কিন্তু সময় পেরিয়ে গেলেও বাঁধে এখনও কাজ চলমান।