সমুদ্র পাড়ে স্বতন্ত্রদের চ্যালেঞ্জের মুখে নৌকার প্রার্থীরা

  ভোট এলো, এলো ভোট


আবদু রশিদ মানিক, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, কক্সবাজার
ছবি: বার্তা২৪.কম

ছবি: বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

আর মাত্র তিনদিনের অপেক্ষা। ৭ জানুয়ারি বহুল প্রতীক্ষিত ভোট। সারাদেশের মতো সমুদ্র জনপদ কক্সবাজারেও লেগেছে ভোটের হাওয়া। কক্সবাজারে নৌকার প্রতিপক্ষরাই মাঠ গরম করে রেখেছেন। চলছে কথার লড়াই। প্রতিপক্ষকে কথাঘাতে জর্জরিত করা বাংলাদেশের ভোটযুদ্ধের পুরনো সংস্কৃতি। হয় ব্যক্তির চরিত্র নিয়ে চলে কথার ঠেস, নয়তো প্রতীক নিয়ে চলে কথার রেশ। নয়া কথা, নয়া ডায়লগ ডেলিভারি দিয়েও অনেক ভোটার দলে ভিড়ায় প্রার্থী ও কর্মী-সমর্থকরা।

এবার কক্সবাজারের চারটি আসনের মধ্যে কক্সবাজার-১ আসনে নৌকার প্রার্থীর মনোনয়ন বাতিল হওয়ায় এ আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতায় রয়েছেন কল্যাণ পার্টির চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল (অব.) সৈয়দ মুহাম্মদ ইবরাহিম এবং স্বতন্ত্র প্রার্থী বর্তমান সংসদ সদস্য জাফর আলম। কক্সবাজার-২ আসনে নৌকার প্রার্থী আশেক উল্লাহ রফিকের শক্ত প্রতিপক্ষ বাংলাদেশ ন্যাশনালিস্ট ফ্রন্টের প্রার্থী শরিফ বাদশাহ। কক্সবাজার-৩ আসনে নৌকার প্রার্থী সাইমুম সরওয়ার কমলের শক্ত প্রতিপক্ষ হিসেবে মাঠে সরব স্বতন্ত্র প্রার্থী ব্যারিস্টার মিজান সাঈদ। এছাড়া কল্যাণ পার্টির আবদুল আউয়াল মামুনও আছেন আলোচনায়। কক্সবাজার-৪ আসনে আওয়ামী লীগ প্রার্থী শাহিন আক্তারের শক্ত প্রতিপক্ষ টেকনাফ উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি নুরুল বশর। কক্সবাজার-২ ও ৪ আসনে আওয়ামী লীগের দলীয় এমপিরা কঠিন চ্যালেঞ্জের মুখে পড়েছেন। তবে তাদের বিজয় ঠেকানো যাবে না বলে মনে করেন রাজনৈতিক বোদ্ধারা।

কক্সবাজার-১ (চকরিয়া-পেকুয়া) আসনে হাতঘড়িতে ধরাশীয় হতে পারেন বর্তমান সংসদ সদস্য জাফর আলম। ঋণ খেলাপির অভিযোগে আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী সালাহউদ্দিন আহমেদের প্রার্থিতা বাতিল হওয়ায় নৌকার কোন প্রার্থী নেই। তাই স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে ট্রাক প্রতীক নিয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন বর্তমান সংসদ সদস্য জাফর আলম এবং হাতঘড়ি প্রতীক নিয়ে কল্যাণ পার্টির চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল (অব.) সৈয়দ মুহাম্মদ ইবরাহিম। চকরিয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি এবং গেল পাঁচ বছর এমপি থাকায় এলাকায় নিজস্ব অবস্থান রয়েছে জাফর আলমের। একই সঙ্গে নানা অভিযোগ ও বিতর্কিত কর্মকাণ্ডে সংবাদের শিরোনাম হয়েছেন বারবার। আওয়ামী লীগ নেতাদের অভিযোগ গেল ৫ বছর ধরে এমপি জাফর আলম সন্ত্রাস, দখলবাজি, দুর্নীতিসহ নানা অপকর্ম করেছেন। তার হাতে নির্যাতনের শিকার হয়েছে হাজার হাজার নেতাকর্মী। বেড়েছে দলীয় কোন্দলও। আওয়ামী লীগের ত্যাগী এবং তৃণমূলের নেতা-কর্মীদের বাদ দিয়ে সন্ত্রাস, চোরদের নিয়ে গড়ে তুলেছেন নিজস্ব সিন্ডিকেট।

অপরদিকে নিজের মনোনয়ন বাতিল হওয়ার পর সালাউদ্দিন আহমেদ তার অনুসারীদের নিয়ে কল্যাণ পার্টির প্রার্থী সৈয়দ মুহাম্মদ ইবরাহিমকে সমর্থন দেন। একই সঙ্গে জেলা আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের পক্ষ থেকে সভা আহবান করে হাতঘড়ি প্রতীককে বিজয়ী করতে দলের নেতাকর্মীদের প্রতি আহবান জানান তিনি। এরপর থেকে বদলে যেতে থাকে চকরিয়া-পেকুয়ায় ভোটের হিসাব। দিন দিন কল্যাণ পার্টির হাতঘড়ির সমর্থন বাড়তে থাকে। অনেকে মনে করছেন হাড্ডাহাড্ডি লাড়াই হবে এই আসনে।

হাতঘড়ি প্রতীকের প্রার্থী বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টির চেয়ারম্যান জেনারেল ইব্রাহিম বলেন, এই আসনের মানুষ একটি নিরাপদ সমাজ ব্যবস্থা চায়। গেল পাঁচ বছর যে ত্রাসের রাজত্ব তৈরি হয়েছিলো এবার মানুষ ভোট বিপ্লবের মাধ্যমে সন্ত্রাস, চাঁদাবাজ, দখলবাজ, চোর ও ডাকাতের বিরুদ্ধে নিজেদের অবস্থান পরিষ্কার করবে। আমি বিশ্বাস করি মানুষ ন্যায়ের পক্ষে ভোট দিয়ে আমাকে বিজয়ী করবে।

স্বতন্ত্র প্রার্থী জাফর আলম বলেন, সুষ্ঠু এবং নিরপেক্ষ ভোট হলে চকরিয়া-পেকুয়ার মানুষ ঘরের ছেলে জাফরকেই ভোট দিয়ে নির্বাচিত করবে।

কক্সবাজার-২ (মহেশখালী-কুতুবদিয়া) আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী ও বর্তমান সংসদ সদস্য আশেক উল্লাহ রফিকের শক্ত প্রতিপক্ষ বাংলাদেশ ন্যাশনাল মুভমেন্টের (বিএনএম) প্রার্থী স্বল্প শিক্ষিত শরীফ বাদশাহ। শিক্ষাগত যোগ্যতায় আশেক উল্লাহর দেশের সর্বোচ্চ ডিগ্রি থাকলেও মাত্র পঞ্চম শ্রেণি পাস করেছেন প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী শরিফ বাদশাহ। তিনি উপজেলা চেয়ারম্যান পদ থেকে পদত্যাগ করে জাতীয় নির্বাচনে অংশ নিয়েছেন। বর্তমান সংসদ সদস্য আশেক উল্লাহর বিরুদ্ধে বিতর্কিত অভিযোগ না থাকলেও দলের ভেতরে শক্ত প্রতিপক্ষ তৈরি হয়েছে।

স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতারা জানিয়েছেন, ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে মহেশখালী উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আনোয়ার পাশার ছেলের বিরোধিতা করেন এমপি আশেক উল্লাহ রফিক। সেই সময়কার মধুর প্রতিশোধ নিতে চাচ্ছে সভাপতি আনোয়ার পাশা চৌধুরী। মহেশখালী উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক তারেক বিন ওসমান শরীফ এমপির সঙ্গে বছর দশেক থেকে রয়েছে দ্বন্দ্ব। তিনিও গোপনে শরীফ বাদশার পক্ষে অবস্থান নিয়েছেন বলে শোনা যাচ্ছে। এছাড়া আওয়ামী লীগ নেতা পরিবেশ বিজ্ঞানী আনছারুল করিম, উপজেলা যুবলীগ নেতা শাহজাহানসহ বিশাল একটি গ্রুপ রয়েছে তার বিরুদ্ধে। যে অংশটি শরিফ বাদশাহর হয়ে ভূমিকা রাখতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। তবে দ্বীপ উপজেলা কুতুবদিয়ায় আশেক উল্লাহ রফিকের ভাল অবস্থান থাকলেও শরিফ বাদশাহর সেই অবস্থান নেই ।

তবে, মহেশখালীতে রয়েছে এলাকাভিত্তিক গোষ্ঠীগত বিরোধ। যার কারণে মহেশখালী-কুতুবদিয়াতে আশেক বিরোধী অবস্থানটা বদলে দিতে পারে হিসেব নিকেশ। নাম প্রকাশ না করার শর্তে আওয়ামী লীগের একাধিক নেতা জানিয়েছেন, যদি বিএনপি সমর্থকরা ভোটকেন্দ্রে যায় তবে আওয়ামী লীগ প্রার্থী আশেক উল্লাহর বিজয় সহজ হবে। কারণ হিসেবে তাদের দাবি সাবেক সংসদ সদস্য ও বিএনপি নেতা আলমগীর ফরিদ তার নিকট আত্মীয়। তারা পরিবারের কাছে ক্ষমতা রাখতে চাইবে। এবং শেষ পর্যন্ত সেটিই হবে।

এমপি আশেক উল্লাহ বলেছেন, বর্তমান সরকার মহেশখালী-কুতুবদিয়ার চেহারা বদলে দিয়েছেন। সুতরাং নৌকা বাদ দিয়ে সাধারণ মানুষ অন্য কোনো মার্কায় ভোট দিবে না। আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগ আমার সাথেই আছে। আমি বিজয়ী হবো ইনশাল্লাহ।

কক্সবাজার-৩ (সদর-রামু-ঈদগাঁও) আসনে নৌকা প্রতীক নিয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন বর্তমান সংসদ সদস্য সাইমুম সরওয়ার কমল এবং স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে আছেন অপেক্ষাকৃত কম পরিচিত ব্যারিস্টার মিজান সাঈদ। যদিও এ আসনে কল্যাণ পার্টির প্রার্থী দলের মহাসচিব আবদুল আউয়াল মামুনও ভোটের মাঠে রয়েছেন। তবে এই এলাকায় আওয়ামী লীগের প্রার্থী সাইমুম সরওয়ার কমল স্বতন্ত্র প্রার্থী মিজান সাঈদকে নানাভাবে বাধা দিচ্ছেন বলে অভিযোগ রয়েছে। এছাড়া গোলাগুলির ঘটনাও ঘটেছে। এর ফলে কমলের ভোটব্যাংক কমছে বলে জানা গেছে।

আওয়ামী লীগ নেতারা জানিয়েছেন, গেল পাঁচ বছর প্রতিটি গ্রামে ছুটে বেড়িয়েছেন আওয়ামী লীগ প্রার্থী সাইমুম সরওয়ার কমল। দলের বাইরে গিয়ে প্রতিটি ভোটকেন্দ্রে তার নিজস্ব ভোট ব্যাংক সৃষ্টি করেছেন তিনি। সম্প্রতি রামুতে দুই ভাইয়ের দ্বন্দ্বও মিটিয়েছেন কমল। এ অবস্থায় তাকে পরাজিত করতে হলে দীর্ঘদিনের অভিজ্ঞ রাজনৈতিক প্রতিদ্বন্দ্বী ছাড়া সম্ভব নয়। তবে দলের অভ্যন্তরে একটি গ্রুপ গতবারের মতো এবারও তার বিরুদ্ধে থাকবেন বলেও জানান তারা।

অপরদিকে উচ্চ আদালতের আদেশে ঈগল প্রতীক নিয়ে এই আসনে ভোটে নেমেছে স্বতন্ত্র প্রার্থী ব্যারিস্টার মিজাম সাঈদ। স্থানীয়রা জানিয়েছেন, কক্সবাজার পৌরসভা, ঈদগাঁও এবং কক্সবাজার সদর উপজেলার কয়েকটি ইউনিয়নে তার পরিচিতি থাকলেও মিজান সাঈদ বিভিন্ন ইউনিয়নে এখনো অপরিচিত হলেও শক্ত প্রতিদ্বন্দ্বিতা হবে বলে মনে করা হচ্ছে।

তবে দলের অভ্যন্তরে কমলের প্রতিপক্ষরা মিজান সাঈদের পক্ষে নির্বাচন পরিচালনা করছেন বলে জানিয়েছেন অনেকে। আওয়ামী লীগের অনেকের ধারনা মিজান সাঈদের কাছে ধরাশায়ী হতে পারেন এমপি কমল।

জয়ের ব্যাপারে শতভাগ আশাবাদী সাইমুম সরওয়ার কমল বলেন, জনগণের জন্য আমি রাজনীতি করেছি। করোনা মহামারি বলেন, ঘূর্ণিঝড় কিংবা বন্যা বলেন, কখনো জনগণকে ফেলে যায়নি। একই সঙ্গে বর্তমান সরকার কক্সবাজারের চেহরাও পাল্টে দিয়েছেন। তাই আমি বিশ্বাস করি জনগণ নৌকা প্রতীকে ভোট দিয়ে আমাকে নির্বাচিত করবেন।

একইভাবে জয়ের আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন ব্যারিস্টার মিজান সাঈদ।

কক্সবাজার-৪ (উখিয়া টেকনাফ) আসনে নৌকা প্রতীক নিয়ে আওয়ামী লীগ মনোনীত বর্তমান সংসদ সদস্য শাহিন আক্তার এবং ঈগল প্রতীক নিয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে টেকনাফ উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মো. নুরুল বশর প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। গেল পাঁচ বছরে এমপি হিসেবে শাহিন আক্তারকে কাছে না পেলেও ছিলেন তার স্বামী সাবেক সংসদ সদস্য আব্দুর রহমান বদি। বলতে গেলে শাহিন আক্তারের পুঁজি স্বামীর জনপ্রিয়তা। কিন্তু দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জয়ী হতে হলে তাকে পরাজিত করতে হবে শক্ত প্রতিপক্ষ টেকনাফ উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি নুরুল বশরের ঈগল প্রতীককে। তার পক্ষে মাঠে নেমেছে টেকনাফ আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগের একটি অংশ। টেকনাফ উপজেলা আওয়ামী লীগ বর্ধিতসভা ডেকে তার পক্ষে কাজ করার সিদ্ধান্ত নেন। এতে বদলে যায় উখিয়া-টেকনাফের ভোটের হিসাবে। যদিও দলের বাইরে বদির রয়েছে আলাদা জনপ্রিয়তা।

আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীরা জানিয়েছেন, প্রায় ৫০ হাজার ভোট রিজার্ভ রয়েছে আব্দুর রহমান বদির। যা অন্য কোনো প্রার্থীর নেই। তিনি উখিয়া এবং টেকনাফে সমানভাবে জনপ্রিয়। কিন্তু দলের একটি অংশ তার বিরুদ্ধে অবস্থান করছেন। তাদের দেওয়া তথ্য মতে, ঈগল প্রতীক নিয়ে নুরুল বশর ভোটের মাঠে আসার পর টেকনাফ ছাড়াও উখিয়ার প্রভাবশালী অনেক নেতা তার পক্ষে মাঠে নেমেছেন। এ অবস্থায় নৌকার সহজ জয় হবে না বলে মনে করেন তারা। নৌকার বিজয় নিশ্চিত করতে হলে অনেক কাঠখড়া পোড়াতে হবে বলেও মনে করেন তারা।

   

উপজেলা নির্বাচন: প্রার্থিতা প্রত্যাহার করলেন সানাউল



উপজেলা করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, গৌরীপুর (ময়মনসিংহ)
প্রার্থিতা প্রত্যাহার করলেন সানাউল

প্রার্থিতা প্রত্যাহার করলেন সানাউল

  • Font increase
  • Font Decrease

ময়মনসিংহের গৌরীপুর উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চারজন প্রার্থী মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছিলেন। তাদের মধ্য থেকে চেয়ারম্যান প্রার্থী উপজেলা যুবলীগের সভাপতি সানাউল হক মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের শেষ দিন আজ মঙ্গলবার (৩০ এপ্রিল) প্রার্থিতা প্রত্যাহার করে নিয়েছেন।

উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও সহকারী রিটার্নিং অফিসার মো. শাকিল আহমেদ মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে সানাউল হক বলেন, ব্যক্তিগত কারণে নির্বাচন থেকে প্রার্থিতা প্রত্যাহার করে নিয়েছি।

উপজেলা নির্বাচন অফিস সূত্রে জানা গেছে, উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে অন্য তিন প্রার্থী হলেন উপজেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক ও বর্তমান উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মোফাজ্জল হোসেন খান, উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সোমনাথ সাহা ও আওয়ামী লীগের যুব ও ক্রীড়া উপকমিটির সদস্য এইচএম খায়রুল বাসার।

এছাড়া ভাইস চেয়ারম্যান পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন-উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের আহ্বায়ক মো. সোহেল রানা, গৌরীপুর সরকারি কলেজের সাবেক ভিপি মোহাম্মদ মাহবুবুর রহমান শাহীন, ডৌহাখলা ইউনিয়ন কৃষক লীগের সভাপতি মো. হারুন অর রশিদ পবিত্র ও উপজেলা জাতীয় পার্টির সাংগঠনিক সম্পাদক মো. জহিরুল হুদা লিটন।

মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন সালমা আক্তার রুবি, দিলুয়ারা আক্তার, পরশ মনি, নিলুফার ইয়াসমিন, তাসলিমা আক্তার কলি, মোছা. ফেরদৌসী নাসরিন।

আগামী ২১ মে গৌরীপুর উপজেলা পরিষদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। নির্বাচনে মোট ভোটার দুই লাখ ৭৯ হাজার ৮৫৯ জন। মহিলা ভোটার এক লাখ ৩৮ হাজার ৪০ জন ও পুরুষ এক লাখ ৪১ হাজার ৪৮ জন।

  ভোট এলো, এলো ভোট

;

উপজেলা নির্বাচন: ১৬০ উপজেলার প্রার্থিতা প্রত্যাহারের শেষদিন মঙ্গলবার



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, ঢাকা
১৬০ উপজেলার প্রার্থিতা প্রত্যাহারের শেষদিন মঙ্গলবার

১৬০ উপজেলার প্রার্থিতা প্রত্যাহারের শেষদিন মঙ্গলবার

  • Font increase
  • Font Decrease

আসন্ন ষষ্ঠ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে দ্বিতীয় ধাপের ভোটে প্রার্থিতা প্রত্যাহারের শেষদিন মঙ্গলবার (৩০ এপ্রিল)। অফিস চলাকালীন সময়ে প্রার্থীরা মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করতে পারবেন।

নির্বাচন কমিশনের (ইসি) নির্বাচন ব্যবস্থাপনা শাখার কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, এই ধাপে ১৬০ উপজেলা ভোটে দুই হাজার ৫৫ জন প্রার্থী মনোনয়নপত্র দাখিল করেছেন। এদের মধ্যে চেয়ারম্যান পদে ৭৩০ জন, ভাইস চেয়ারম্যান পদে ৭৬৩ জন ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে ৫৬২ জন। বাছাই-আপিল শেষ হওয়ায় বৈধ প্রার্থীদের কেউ নির্বাচন থেকে সরে যেতে চাইলে মঙ্গলবারই তার শেষ সময়।

এই ধাপের নির্বাচনে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসকদের রিটার্নিং কর্মকর্তা ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাদের সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। ভোটারের সংখ্যা ৫ লাখের বেশি, যেখানে সেখানে একাধিক সহকারী রিটার্নিং অফিসার নিয়োজিত রয়েছেন।

তফসিল অনুযায়ী, চূড়ান্ত প্রার্থীদের মাঝে রিটার্নিং কর্মকর্তারা প্রতীক বরাদ্দ করবেন ২ মে। আর ভোটগ্রহণ হবে ২১ মে।

নির্বাচন কমিশন এবার চার ধাপে উপজেলা নির্বাচন করছে। প্রথম ধাপে ১৫০ উপজেলায় ভোট হবে আগামী ৮মে। তৃতীয় ধাপে ১১২ উপজেলায় ২৯ মে ও চতুর্থ ধাপে ৫৫ উপজেলায় ৬ জুন ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। প্রথম ধাপে ২২টি, দ্বিতীয় ধাপে ২৪টি, তৃতীয় ধাপে ২১ ও চতুর্থ ধাপে দু’টি উপজেলায় ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনে (ইভিএম) ভোটগ্রহণ করা হবে।

  ভোট এলো, এলো ভোট

;

‘নির্বাচন প্রশ্নবিদ্ধ করলে, গুজব ছড়ালে রেহাই নেই’



স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, চট্টগ্রাম ব্যুরো
ছবি: বার্তা২৪.কম

ছবি: বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

আসন্ন উপজেলা পরিষদের নির্বাচন কেউ প্রশ্নবিদ্ধ করলে বা কোনো ধরনের গুজব ছড়ালে রেহাই নেই বলে সতর্ক করেছেন চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসক (ডিসি)ও জেলা ম্যাজিস্ট্রেট আবুল বাসার মোহাম্মদ ফখরুজ্জামান।

তিনি বলেন, আগামী ৮ মে চট্টগ্রামের সন্ধীপ, মিরসরাই ও সীতাকুণ্ড উপজেলা পরিষদের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের মতো আসন্ন উপজেলা নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণভাবে উপহার দেওয়া হবে। নির্বাচনে প্রত্যেক প্রার্থী ও তাদের সমর্থকদের নির্বাচনী আচরণবিধি মেনে চলতে হবে, অন্যথায় মোবাইল কোর্টের মাধ্যমে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

সোমবার (২৯ এপ্রিল) চট্টগ্রাম সার্কিট হাউসে উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে অংশ নেওয়া প্রার্থীদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় এসব কথা বলেন জেলা প্রশাসক।

জেলা প্রশাসক বলেন, ‘আচরণবিধি মেনেই নির্বাচনের প্রচার-প্রচারণা চালাতে হবে। আচরণবিধি পর্যবেক্ষণে এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট ও জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মাঠে থাকবে। কেউ জাল ভোট দিতে আসলে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীর এজেন্টদের চ্যালেঞ্জ করতে হবে। তাদের নিরাপত্তা আমরা দেব। গত সংসদ নির্বাচনে জাল ভোট দেওয়ার অপরাধে জেলে পাঠানো হয়েছিল। জাল ভোট প্রদান, কেন্দ্র দখল বা অন্যান্য অজুহাতে নির্বাচন প্রশ্নবিদ্ধ করতে কেউ কোনো ধরনের গুজব ছড়ালে ছাড় নেই। আমাদের দৃষ্টিতে ঝুঁকিপূর্ণ কেন্দ্র বলতে কিছু নেই। প্রার্থীরা যদি মনে করেন আছে, তাহলে তালিকা দিলে যাচাই-বাছাই করে দেখব, আশঙ্কার জায়গা থাকবে না।’

নির্বাচনে নিরাপত্তা নিশ্চিতে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী সবসময় পাশে থাকবে বলে প্রার্থীদের আশ্বস্ত করেছেন জেলা প্রশাসক। তিনি বলেন, ‘নির্বাচনে কোনো অনিয়ম বরদাস্ত করা হবে না। নির্বাচনকে অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ করতে দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তারা আইনের স্বপক্ষে থেকে যে কোন ধরনের পদক্ষেপ গ্রহণ করতে পারবে।

যোগাযোগ ব্যবস্থা ভালো না থাকার কারণে সন্দ্বীপে নির্বাচনের আগের দিন ব্যালট পেপার পাঠানো হবে বলে জানান আবুল বাসার মোহাম্মদ ফখরুজ্জামান। তবে অন্যান্য উপজেলার কেন্দ্রগুলোতে ভোটের দিন সকালে ভোট গ্রহণের আগে ব্যালট পেপার পাঠানো হবে বলেও জানান তিনি।

জেলা পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার হোসাইন মোহাম্মদ আবু তৈয়ব বলেন, ‘নির্বাচন কমিশনের বিধিবিধান বা পরিপত্র মেনে উপজেলা নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। ভোট কেন্দ্রে বা বাইরে ভয়ভীতি প্রদর্শন করা যাবে না। সুষ্ঠু নির্বাচনের স্বার্থে যা যা করা দরকার তাই করব। কোনো অপশক্তির কাছে আমরা মাথা নত করব না।’

জেলা প্রশাসনের উপপরিচালক (স্থানীয় সরকার) লুৎফুন নাহার বলেন, ‘সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য আমরা অঙ্গীকারবদ্ধ। উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান, মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান ও ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থীদের নির্বাচনী আচরণবিধি মানতে হবে।’

আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা মো. ইউনুচ আলী বলেন, ‘নির্বাচনে কেউ জয়ী হবে, কেউ পরাজিত হবে-এই বাস্তবতা মেনে নিতে হবে। সকলের সম্মিলিত উদ্যোগে আমরা একটি গ্রহণযোগ্য নির্বাচন উপহার দিতে চাই। নির্বাচন কমিশন থেকে শুরু করে সবাই আপনাদের পাশে আছে। নির্বাচনী এলাকায় অনুমতি ব্যতীত কোনো যানবাহন চলবে না। ভোটারদের কেন্দ্রে আনা-নেওয়ার জন্য যানবাহন ভাড়া করাও অবৈধ। আগামী ৮ মে নির্বাচনের প্রচার-প্রচারণা ৬ মে রাত ১২টায় বন্ধ হয়ে যাবে। কোনো পথসভা যাতে জনসভায় রূপ না নেয় সে বিষয়ে সতর্ক থাকতে হবে।’

উপজেলা নির্বাচনের রিটার্নিং কর্মকর্তা ও সিনিয়র জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মোহাম্মদ এনামুল হক বলেন, ‘জাল ভোট, কেন্দ্র দখল বা অন্যান্য অজুহাতে নির্বাচন প্রশ্নবিদ্ধ করার সুযোগ নেই।’

অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট একেএম গোলাম মোর্শেদ খান বলেন, ‘একজন প্রার্থীর পোস্টারের ওপর অন্য প্রার্থীর পোস্টার লাগানো যাবে না। নির্বাচনী আচরণবিধি মানতে হবে, অন্যথায় আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

জেলা প্রশাসকের সভাপতিত্বে মতবিনিময় সভায় বিভিন্ন সংস্থার প্রতিনিধি ও প্রার্থীরা বক্তব্য দেন।

  ভোট এলো, এলো ভোট

;

আচরণবিধি ভঙ্গ হলেই প্রার্থিতা বাতিল: ইসি হাবিব



ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, চুয়াডাঙ্গা
ছবি: বার্তা২৪.কম

ছবি: বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

নির্বাচন কমিশনার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. আহসান হাবিন খান (অব.) বলেছেন, ‘ভোটকেন্দ্রে যদি আচরণ বিধি ভঙ্গ হয়, বাধাপ্রাপ্ত হয়, তাহলে প্রয়োজনে প্রার্থিতা বাতিল করা হবে। এটা একদম পরিষ্কার কথা।’

সোমবার (২৯ এপ্রিল) দুপুরে চুয়াডাঙ্গায় এক প্রেস ব্রিফিংয়ে তিনি এ কথা বলেন।

সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে নির্বাচন কমিশনার বলেন, কোনো প্রার্থীর যদি কোনো অভিযোগ থাকে, তাহলে লিখিত আকারে রিটার্নিং তথ্য-প্রমাণ সহকারে অফিসারকে দেন। কেউ গন্ডগোল করছে ভিডিও করে ফেলেন, কেউ বাধা দিচ্ছে ভিডিও করে ফেলেন। যদি আচরণ বিধি ভঙ্গ হয়, বাধাপ্রাপ্ত হয়, তাহলে প্রয়োজনে তাদের প্রার্থিতা বাতিল করা হবে। এটা একদম পরিষ্কার কথা।

আহসান হাবিব খান বলেন, প্রত্যেক প্রার্থী আমাদের কাছে সমান। সেই প্রার্থী যদি একটা উঁচু দরের ব্যক্তির ভাই হয়, বোন হয় অথবা সেই প্রার্থী যদি একজন জেনারেল সাহেব হন, অথবা ওই প্রার্থী যদি একজন ইন্ডাস্ট্রিয়াল হন, আমির-ফকির যেই হোক, আমাদের দৃষ্টিতে সকল প্রার্থীই সমান। আমরা ভালোকে ভালো বলব, খারাপকে খারাপ বলন। কোনো পক্ষপাতিত্বমূলক আচরণ আমাদের কারোর মাঝে পাবেন না।

তিনি বলেন, নির্বাচন অবাধ ও সুষ্ঠু করতে প্রার্থীরা আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সংখ্যা বেশি চেয়েছেন। আমরা বলেছি নির্বাচন সুষ্ঠু করতে যত আইনশৃঙ্খলা বাহিনী লাগে, সব দিয়ে দেব। আমরা যে পর্যায়ে নির্বাচনটাকে নিয়ে গিয়েছি, সেখান থেকে কিন্তু আর নিচে নামব না, নামতে পারব না। দিন দিন কিন্তু আরও উপরের দিকে যেতে হবে। এটা আমাদের দেশের ভাবমূর্তি, আপনার অঞ্চলের ভাবমূর্তি, জনগণের ভাবমূর্তি, বিদেশের কাছে দেশের ভাবমূর্তি।

ভোটকেন্দ্রে সাংবাদিকদের প্রবেশে বাধা দিলেই কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে বলেও মন্তব্য করেছেন- ইসি আহসান হাবিব।

তিনি বলেন, ভোটকেন্দ্রে প্রবেশে সাংবাদিকদের কোনো অনুমতি লাগবে না। সাংবাদিকরা ভোটকক্ষে যেতে পারবেন, ভিডিও করতে পারবেন। তবে লাইভ করতে হলে কক্ষের বাইরে বারান্দায় এসে করেন, কোনো অসুবিধা নেই। কারণ এই সাংবাদিকরাই কিন্তু আমাদের তৃতীয় চোখ-কান হিসেবে কাজ করছে।

ব্যালট পেপারের বিষয়ে নির্বাচন কমিশনার বলেন, আমরা সিদ্ধান্তই নিয়েছি এখন থেকে যত নির্বাচন হবে, সব নির্বাচনে ভোটের দিন সকালে কেন্দ্রে কেন্দ্রে ব্যালট যাবে।

প্রেস ব্রিফিংয়ের আগে বেলা ১১টায় চুয়াডাঙ্গা জেলা প্রশাসকের সম্মেলনকক্ষে চুয়াডাঙ্গা, কুষ্টিয়া, মেহেরপুর ও ঝিনাইদহ জেলার জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপার, নির্বাচন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও প্রার্থীদের সাথে মতবিনিময় করেন নির্বাচন কমিশনার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. আহসান হাবিব খান (অব)।

  ভোট এলো, এলো ভোট

;